সংক্ষিপ্ত
- কিশোরী বয়সেই বিয়ে পাকা করে ফেলেছিল পরিবার
- সাহসে ভর করে রুখে দাঁড়াল নাবালিকা
- বীরাঙ্গনা পুরস্কার পেল মুর্শিদাবাদের সাহসিনী
- খুশির হাওয়া প্রত্যন্ত গ্রামে
কতই বয়স হবে তার! কিশোরী বেলায় অসম সাহকিতায় পরিচয় দিয়ে রাজ্য সরকারের বীরাঙ্গনা পুরস্কার জিতে নিল মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত গ্রামের এক নাবালিকা। সাহসিনীর হয়ে কলকাতা গিয়ে পুরস্কার গ্রহণ করলেন জেলার পদস্থ আধিকারিক জারিরন বিবি। আবেগে ভেসে গেলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরি পাওয়ার পর পণের দাবি প্রেমিকের, অপমানে আত্মঘাতী কলেজ ছাত্রী
কী এই নাবালিকা? কী করেছে সে? মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া ব্লকের প্রত্যন্ত গ্রাম প্রদীপডাঙা। এই গ্রামের বাড়ি নরবানু খাতুন। বয়স মোটে ১৬ বছর। কিন্তু ঘটনা হল, নাবালিকার মেয়ের বিয়ে ব্যবস্থা পাকা করে ফেলেছিলেন পরিবারের লোকেরা। কিন্তু মেয়ে যে দমবার পাত্রী নয়! তার ধনুকভাঙা পণ, অল্প বয়েসে বিয়ে সে করবে না কিছুতেই। তারপর? প্রায় ১২ কিমি পথে পাঁয়ে হেটে সটান হরিহরপাড়ার বিডিও পূর্ণেন্দু স্যানালের দ্বারস্থ হয় নূরবানু। ব্যাস আর কী! প্রশাসনের তৎপরতায় নাবালিকার বিয়ে থেকে নিরস্থ হন পরিবারের লোকেরা। শুধু তাই নয়, এরআগেও তিন-তিনবার একই কায়দা নিজের বিয়ে আটকেছে সে। তার সাহসিকতাকে এবার কুর্নিশ জানাল রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির দাবি, মিলের সামনে বিক্ষোভ বর্ধমানের চাষিদের
এদিকে পুরস্কার প্রাপ্তি খবরে ছড়িয়ে পড়ার পর নূরবানু খাতুন স্রেফ একবার চোখের দেখা দেখার জন্য শুক্রবার রাতে কার্যত ভেঙে পড়েছিল গোটা গ্রাম। স্থানীয় বাসিন্দা লুৎফর আলী বলেন, 'নূরবানু বরাবরই খুব সাহসী। আমাদের গ্রামে এমন মেয়ে খুঁজে পাওয়া কঠিন। ওর মতো মেয়ে ঘরে ঘরে জন্মাক।' আর যাকে নিয়ে এত হইচই, সে নিজে কী বলছে? নূরবান অকপট স্বীকারোক্তি, 'ভাবতেই পারছি না, আমি বীরাঙ্গনা পুরস্কার পেয়েছি। স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। মনেপ্রাণে চাই, আমার মতো যারা রয়েছে, তারাও নিজেদের অধিকার রক্ষায় সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে আসুক।' যদিও সাহসিনীর পরিবারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।