সংক্ষিপ্ত
'অজুহাত দেব না, কেন্দ্রীয় বাহিনী কাজ করছে, রিগিং হয়েছে বলব না', ভোটে হেরে বললেন আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল।
'অজুহাত দেব না, ভোটে হেরে বললেন আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। এদিন গণনার শুরতেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই ছিল শত্রুঘ্ন ও অগ্নিমিত্রার। তবে সকাল পেরিয়ে বেলা পড়লেই দুজনের ভোটের ব্যাবধান বাড়তে থাকে। অনেক বড় ব্যবধানে এগোতে থাকেন তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা। তবে এদিন হার স্বীকার করে অগ্নিমিত্রা বলেন, 'জনাদেশ মাথা পেতে নিতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী কাজ করছে। অজুহাত দেব না। রিগিং হয়েছে বা কিছু হয়েছে বলব না। আত্মসমীক্ষা দরকার। তবে আসানসোল দক্ষিণে একটা অংশে সন্ত্রাস হয়েছে' বলে জানিয়েছেন বিজেপি নেত্রী। তবে তিনি তার সর্বোচ্চ করেও জয়ী হতে পারেননি বলে, প্রধানমন্ত্রীকে দুঃখিতও বলেও জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, একুশের ভোটের পর থেকেই পুরভোট সহ সব নির্বাচনেই তৃণমূলকে তোপ দেগেছে রিগিং নিয়ে। প্রতিবারই তৃণমূলের বিপুল জয়ের পর ছাপ্পা ভোট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। রাজ্য পুলিশকে দায়ী করেছে। তবে এবারের আসানসোল উপনির্বাচনের সময় টইটুম্বুর ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাই ভোটে যে কোনও কারচুপি হয়নি, বরং এটাই জনতার রায়, মেনে নিলেন বিজেপি আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। যদিও একুশের ভোটের পর থেকেই মমতা বলেছেন, রাজ্যে রিগিং করে তাঁর জয় পাননি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তাঁরা ভয় পান না। কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও তাঁরা জিতবেন। তাই এবার অগ্নিমিত্রার কথায় তা আরও মান্যতা পেল।
এদিন সকাল ৯ টার দিকে, আসানসোলে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছিল তৃণমূল বিজেপির মধ্যে। আসানসোল উত্তর এবং জামুড়িয়া বিধানসভা কেন্দ্রে সকালে এগিয়ে ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ওদিকে আসানসোল দক্ষিণ এবং কুলটিতে এগিয়ে ছিল বিজেপি। অর্থাৎ লড়াইটা জমিয়েই হচ্ছিল। কিন্তুি তখনও আঁচ করা যায়নি দুইবছরের জমিটা এবার যেতে চলেছে গেরুয়াশিবিরের। এরপরেই পঞ্চম রাউন্ড শেষে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে পিছিয়ে যান বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা। তখন ৪০ হাজার ভোটে এগিয়ে যান তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা। ব্যাস এরপর থেকেই নাম্বার পড়তে শুরু করে বিজেপির। উল্লেখ্য এদিন আসানসোলে হেরে যাওয়ার পর দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ট্যাগ করে টুইট করে 'সরি স্যার' বলেছেন অগ্মিমিত্রা পাল। 'আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও , আপনাকে আসনটা দিতে পারলাম না। পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রের হত্যা হয়েছে। রাজ্যের গণতন্ত্রকেই রক্ষা করাই আমার অন্যতম লড়াই। আমার যুদ্ধ জারি আছে স্যার।'
আরও পড়ুন, বালিগঞ্জে গণনার শুরুতেই এগিয়ে বাবুল, ধার ঘেষে বেরোল দিলীপের তোপ
অপরদিকে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে আসন ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে দুবাই জিতে নিয়েছে বিজেপি। বাবুলের দক্ষতা তাতে অন্যমাত্রা যোগ করেছিল। সুতরাং তৃণমূল যোগদানের পর প্রায় সবার মুখে সেই কলকাতা পুরভোটের থেকেই একটাই প্রশ্ন ছিল, কোন কেন্দ্র থেকে দাঁড়াবে বাবুল। কিন্তু ভোটের পর ভোট গেলেও বাবুলের প্রার্থী পদের কোনও খবর না পাওয়ায় তোপও দেগেছিল পদ্ম শিবির। তবে যে দুইবারের জয়ী বাবুলকে যে এবার বালিগঞ্জ বিধানসবা উপনির্বাচন থেকে লড়াই নামাবে তৃণমূল, তা বোধয় কেউ ঘুণাক্ষরেও আঁচ করতে পারেনি।ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায় বলেছেন, 'বাবুল সুপ্রিয় তার মেরুদণ্ড সোজা রেখেছেন।' উল্লেখ্য বাবুলের আগের পরিচয় অর্থাৎ বিজেপির সময়ের ইস্যুকে হাতিয়ার করে বিরোধীরা তার বিরুদ্ধে প্রচার চালালেও বাবুলের সবচেয়ে বড় ভরসা তৃণমূলের সংগঠন। আর সেই বিশ্বাসেই এবার বৈতরণী পার তৃণমূলের।