সাইকেলে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন BDO সাহেব, চোখ কপালে উঠেছে চন্দ্রকোনার বাসিন্দাদের

সেই চাকচিক্যা নেই। নেই সেই বাহুল্য। নিতান্তই সাদামাটা মানুষেক মতই ঘুরে বেড়াচ্ছেন গ্রামের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রাপ্ত। সঙ্গী একটি সাইকেল। পোষাকেই তেমন কোনও ব্র্যান্ডের ছাপ নেই। নিন্তাই সাধারণ। গ্রামের আর পাঁচটা মানুষেরই মতন। কিন্তু তিনি বিডিও। চন্দ্রকোনা এক নম্বর ব্লকের ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক রথীন্দ্রনাথ অধিকারী। গ্রামের মানুষের খোঁজ খবরও নিচ্ছেন। খতিয়ে দেখছেন একশো দিনের কাজও। সবেতেই আন্তরিকতার ছোঁয়া। অনেকেই আবার চিন্তে না পেরে তাঁর আসল পরিচয় জিজ্ঞাসা করছেন। তখনই জানা যাচ্ছে তিনি সরকারি আধিকারিক। 

 সাইকেলে চড়ে জানতে এসেছেন মানুষের দুঃখ দুর্দশার কথা,দেখছেন এলাকার কাজ। যদিও সেটিও অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। কারন, বিডিও আবার গাড়ি ছেড়ে সাইকেলে চড়তে যাবেন কেন? এই প্রশ্নই উঠে আসছে তাঁদের মনে। দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁরা সরকারি আধিকারিকদের গাড়ি ছুঁটিয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যেতে দেখেছেন। যদিও এবিষয়ে বিডিওর সাফ কথা, গ্রামবাসীর মনের কথা, তাঁদের সমস্যার জানতে হলে গাড়ি হাঁকিয়ে নয়, ওদের কাছের মানুষ হতে হবে। তাই সাইকেল চড়েই তিনি পৌঁছতে চান মানুষের মনের মণিকোঠায়, শরীর থাকবে ভালো। 

বিডিও অফিস থেকে পাঁচ কিলোমিটারের বেশি দূরে একশো দিনের কাজ দেখতে হঠাৎ করে হাজির হয়েছিলেন তিনি । সাইকেলে করে পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তিকে সাদামাটা ঘোরাফেরা করতে দেখে কেউ সন্দেহ করেনি। কাজকর্ম নিয়ে হিসাব খতিয়ে দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় আসলে তিনি বিডিও। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, প্রথমে চিনতে পারিনি। কি করেই বা চিনব। বিডিও আবার সাইকেলে আসে নাকি, ওনারা তো গাড়ি করে আসেন। কিন্তু এই বিডিও সাহেব আমাদের সমস্যার কথা জানতে এসেছেন একদমই নিজের উদ্যোগে।

একজন অফিসার হলেও গাড়ি ছোটানোর ধুম, নিরাপত্তারক্ষী কিছুই নেননি তিনি। গত এক বছর ধরে এই ভাবে কাজ করছেন তিনি। বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রাম ,মাঠে কাজের খোঁজ নেওয়া ছাড়াও ছোটখাটো বাজারে চায়ের জটলতেও হাজির হয়ে যাচ্ছেন। মানুষের সঙ্গে মিশে পরিস্থিতি জানার চেষ্টা করছেন। এতে আমলাকে এত নিচু থেকে দেখে খুশি সাধারণ মানুষও।