সংক্ষিপ্ত
বীরভূমের রামপুরহাটকাণ্ডে বৃহস্পতিবার অন্যতম বড় দিন। এবার কথা হচ্ছে বীরভূমের রামপুরহাটের আগুন লাগিয়ে গণহত্যা নাকি নিছকই টিভি বাস্ট করে মৃত্য়ু তা খোলসা হতে চলেছে। তবে এখনও পর্যন্ত কী কী হল, কোথায় দাঁড়িয়ে তদন্ত, চলুন দেখে নেওয়া যাক।
বীরভূমের রামপুরহাটের গণহত্যার (Rampurhat Incident) পর বৃহস্পতিবার অন্যতম বড় দিন। ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্ট এদিনই রাজ্যেকে রিপোর্ট করতে বলেছে। এদিন দুপুর দুটোয় শুনানি। বীরভূমের ওই ঘটনাস্থলকে চব্বিশ ঘন্টা সিসিটিভি-র আওয়াতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ঘটনাস্থলে যাচ্ছে ফরেন্সিকও। এদিকে একইদিনে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় দল এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ও। এবার কথা হচ্ছে বীরভূমের রামপুরহাটের আগুন লাগিয়ে গণহত্যা নাকি নিছকই টিভি বাস্ট করে মৃত্য়ু তা খোলসা হতে চলেছে।
প্রথমত রামপুরহাটকাণ্ডে গোটা ঘটনার জন্য সিট গঠন করা হয়েছে। সরানো হয়েছে ওসি, এসডিপিওকে। তবে শাসক দলের উপর ভরসা হয়নি রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির। ঘটনাস্থলে উদ্দেশ্যে ইতিমধ্যেই রওনা দিয়েছে বিজেপির প্রতিনিধি দল। আনিস খুন, পাটিহাটি ও ঝালদার কাউন্সিলর খুন একের পর এক হত্যাকাণ্ডের পর রামপুরহাটে তৃণমূলের উপপ্রধান খুন হন। তবে অন্যান্য হত্যাকাণ্ডের পর আরও নৃশংসভাবে এই গণহত্যা অন্তত বাইশ সালে উঠে আসেনি। তাই বীরভূমের গণহত্যায় প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় দলের সাহচার্য এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র হস্তক্ষেপ চাইছিল বিজেপি। তাতে সিলমোহরও দিয়েছেন অমিত শাহ।
আরও পড়ুন, রামপুরহাটকাণ্ডে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চাইল কলকাতা হাইকোর্ট, কী কী নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের
প্রসঙ্গত, ১০৮ পুরসভা ভোটের পর এহেন ঘটনা একুশের বিধানসভা ভোট পরবর্তী হিংসাকেও হার মানিয়েছে বলা চাপানউতোর রাজনৈতিক মহলে। আগুন লাগিয়ে গণহত্যা নাকি নিছকই টিভি বাস্ট মৃত্য়ু এই নিয়ে ভিন্ন মত তৃণমূলেরই অন্দরে। ইতিমধ্য়েই টিভি বাস্ট করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে, বলেছেন অনুব্রত মণ্ডল। এদিকে সেই দাবিকেই নস্যাত করেছেন তৃণমূলের রামপুরহাট ১ ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেন। শুধু এখানেই নয়, ফিরহাদের বার্তার পরেও মত পার্থক্য তৈরি হয়েছে। মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, ব্লক সভাপতি আনারুলের নির্দেশেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে গ্রামে। ভাদু খুনের আসামিরাই নিজেদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে হত্যালীলা চালিয়েছে। তৃণমূলকে বদনাম করতেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে পুলিশের আরও তৎপর হওয়া উচিত ছিল।
আরও পড়ুন, 'রাজ্য পুলিশের ওপর আস্থা না থাকলে রাজ্যপালের চলে যাওয়াই ভালো', বিস্ফোরক ফিরহাদ
তবে প্রকৃত কী ঘটেছে, তা চোখের সামনে আনতে তৎপর একদিকে যেমন সিট এবং অন্যদিকে কেন্দ্রীয় দল। কারণ বৃহস্পতিবারই আবার রামপুরহাটে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় দল। সিসিটিভি ফুটেজ সহ ঘটনাস্থল থেকে কী কী উদ্ধার করা হবে, তার উপরেই দাঁড়িয়ে রয়েছে আগুন লাগিয়ে গণহত্যা নাকি টিভি বাস্টের তত্ত্ব। তবে যেটাই হোকটা কেন, প্রশ্ন উঠেছে, এলাকার উপপ্রধানের হত্যাকাণ্ডের পরই কী করে এতবড় ঘটনা ঘটল। ঘটলই যখন, তা পুলিশের নজরদারি পেরিয়ে কী করে হল। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা রাজ্য-রাজনীতিকে উসকে দিয়েছে। প্রতিবাদে নেমেছে বিজেপি-বামেরা। মুখ খুলেছেন তারাও, যারা বলেছিলেন, 'নো ভোট ফর বিজেপি'।
প্রসঙ্গত, বীরভূম হত্যাকাণ্ড যে কার্যত দেশের কাছে মমতার ইমেজ নষ্ট করার জন্য কাফি, এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিনেতা কৌশিক। তিনি সাফ বলেছেন, তৃণমূল সুপ্রিমোকেই দলের অন্দরে সমস্যা থাকলে কড়া হাতে সমাধান করতে হবে। যদি হিংসাকাণ্ডে ডবল ইঞ্জিনের সরকারের অধীনে যোগী রাজ্যের প্রসঙ্গ উঠে আসে, তাহলে একইভাবে মমতার রাজ্যের নামও এবার উঠে আসবে না তো প্রশ্ন তুলেছে শহরের এই বুদ্ধিজীবিরাই। তবে তদন্ত শুরুর পর শেষ হয় না, এনিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অপর্ণা সেন। তবে আসানসোল, বালিগঞ্জ উপনির্বাচনের আগে এটা অন্যতম বড় ইস্যু রাজ্যের। আর তা শক্ত হাতেই নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীরাও। যদিও এই একই বৃহস্পতিবারে শেষ অবধি ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন মমতাও। তাই এরপর কী হবে বাকিটা বৃহস্পতিবারের বেলাশেষেই জানা যাবে।