সংক্ষিপ্ত

সাংবাদিক সম্মেলনে গোটা ঘটনাকে সন্ত্রাস বলে ব্যাখ্যা করেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন এরকম ঘটনাই এখন পশ্চিমবঙ্গে স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বীরভূমের প্রসঙ্গ নিয়ে দিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলন করল বিজেপি। কার্যত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এদিন তুলোধনা করে গেরুয়া শিবির। সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chaterjee) ও বিজেপির মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়ার (Gaurav Bhatia) গলায় একের পর এক তীর্যক বাণ ছুটে আসে তৃণমূলের (TMC) দিকে। গৌরব ভাটিয়া বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নাকের তলায় একের পর এক অরাজকতা ঘটে চলেছে। এক কোনও শেষ নেই পশ্চিমবঙ্গে। এর উত্তর কে দেবে, প্রশ্ন তোলেন গৌরব ভাটিয়া। রামপুরহাটে নির্দোষ কিছু মানুষকে পরিকল্পিত ভাবে খুন করা হয়েছে কারণ দমকল যখন আগুন নেভাতে গিয়েছিল, তখন তাদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করে বিজেপি। 

গৌরব ভাটিয়া এদিন নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলে বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে গোটা ঘটনার দায় নিতে হবে। বিজেপির দাবি তদন্তের কোনও রিপোর্ট এখনও সামনে না এলেও তৃণূল নেতা বলে দিচ্ছেন যে সামান্য ঘটনা। টিভি সেটে শর্ট সার্কিট থেকে তিন-চারটি বাড়িতে আগুন লেগে যায়। এর থেকেই স্পষ্ট কীরকম ভাবে সেখানে গোটা ঘটনার তদন্ত হবে। 

আরও পড়ুন, রামপুরহাটে খুন তৃণমূলের উপপ্রধান, উদ্ধার একাধিক ঝলসানো দেহ, মমতার নির্দেশে ঘটনাস্থলে বিধায়ক

আরও পড়ুন, রামপুরহাটকাণ্ডে মুখ্যসচিবের কাছে তথ্য তলব, ভিডিও বার্তায় রাজ্যকে তোপ ধনখড়ের

এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে গোটা ঘটনাকে সন্ত্রাস বলে ব্যাখ্যা করেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন এরকম ঘটনাই এখন পশ্চিমবঙ্গে স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রামপুরহাটের স্থানীয় মানুষ বলছেন ১৪ থেকে ১৫ জন মারা গিয়েছেন, কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ বাহিনী ৭জনের বেশি মৃত্যু দেখাচ্ছে না। তৃণমূলই তৃণমূলকে মারছে। সিন্ডিকেটের টাকার বাটোয়ারা নিয়ে এই সংঘর্ষ গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। গোটা রাজ্যের যত রসগোল্লার দোকান রয়েছে, সেই সংখ্যক বোমা বানানোর কারখানা তৈরি করেছে তৃণমূল। রাজ্যের শাসক দল রসগোল্লার মত বোমা ছোঁড়ে। 

লকেটের দাবি তৃণমূল গোটা ঘটনাকে শর্ট সার্কিট বলে চালিয়ে দিতে চাইছে। ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের নামোল্লেখ করে লকেট বলেন অনুব্রত আসলে এলাকার গুন্ডা। তিনি আসল খবর বাইরে আসতে দেবেন না। তাই গোটা এলাকা পুলিশ দিয়ে ঘিরে রেখেছে। বীরভূমে এখন দুয়ারে পাকিস্তান-আফগানিস্তান চলে গিয়েছে। শুধু দুয়ারে সরকারের দেখা নেই। 

এদিকে, মঙ্গলবার রাজভবনে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি। তিনি বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ৭২ ঘন্টার মধ্যে রামপুরহাটের ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। শুভেন্দু রাজভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। তিনি বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যে নরসংহার চলল, তার সাজা হোক, খুনীরা সাজা পাক। বিজেপি বিধায়করা বুধবার রামপুরহাটের ঘটনাস্থলে যাবেন বলে জানিয়েছেন। রাজ্য পুলিশের ডিজিপিকে জানানো হয়েছে এই সফর সম্পর্কে। 

সোমবার রাত থেকে কার্যত জ্বলছে গোটা রামপুরহাট। সোমবার রাতে বোমা হামলায় রামপুরহাটের বরশাল পঞ্চায়েতের (Barshal Panchayat) উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হন। এরপরের এক ঘন্টায় ৭ থেকে ৮টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশের দাবি মোট ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। একটি বাড়ি থেকে ৭ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে, আর আহত একজনের পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। তবে, বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা ১৩।