সংক্ষিপ্ত

এদিন লালবাজার থেকে বেরিয়ে কার্যত হুমকি দেন শুভেন্দু। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলেন "আমাদের এই গ্রেফতারের পরে ভারতীয় জনতা পার্টির লিগ্যাল সেল হাইকোর্টে যাবে। প্রধান বিচারপতি অর্ডার পাস করেছে যে ব্যক্তিগত বন্ডে অবিলম্বে ছাড়তে হবে। প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপেই বেরতে পারলাম।"

নবান্ন অভিযান শুরুর আগেই এদিন শুভেন্দু অধিকারী, রাহুল সিনহা ও লকেট চট্টোপাধ্যায়কে আটক করে পুলিশ। তাঁদের লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ফেসবুক লাইভ করেন লকেট। তাতে শুভেন্দু ও রাহুলকেও দেখা যায়। লাইভে শুভেন্দু বলেন, ‘অনেক বাধা সত্ত্বেও নবান্ন অভিযান হয়েছে। কাঁদানে গ্যাস, জলকামান, লাঠি চার্জ করেছে পুলিশ। সাঁতরাগাছি পয়েন্টে চার-পাঁচজন আহত হয়েছেন।’ 

এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়কে নাম না করে ‘লেডি কিম’ বলে কটাক্ষ করেন বিরোধী দলনেতা। বলেন, ‘যতক্ষণ না লেডি কিমকে সরানো যাচ্ছে, ততক্ষণ এই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। রাজ্যকে উত্তর কোরিয়া বানিয়ে ছেড়েছে।’ এদিন বেশ কয়েকঘণ্টা লালবাজারে কাটানোর পর সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ মুক্তি পান শুভেন্দু। ছেড়ে দেওয়া হয় লকেট ও রাহুলকেও। অন্যদিকে শিবপুর থানা থেকে মুক্তি দেওয়া হয় রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকেও। 

তবে এদিন লালবাজার থেকে বেরিয়ে কার্যত হুমকি দেন শুভেন্দু। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বলেন "আমাদের এই গ্রেফতারের পরে ভারতীয় জনতা পার্টির লিগ্যাল সেল হাইকোর্টে যাবে। প্রধান বিচারপতি অর্ডার পাস করেছে যে ব্যক্তিগত বন্ডে অবিলম্বে ছাড়তে হবে। প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপেই বেরতে পারলাম। এখনও হাওড়ায় কয়েকশো পার্টির কর্মকর্তাদের আটকে রাখা হয়েছে। ৫০ জনের বেশি হাসপাতালে ভর্তি। মীনাদেবী পুরোহিত মাথায় চোট পেয়েছে।" 

হাওড়া ও কলকাতা মিলে বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে সরগরম পরিস্থিতি তৈরি হয়। লালবাজারে একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। একাধিক বিজেপি কর্মী আহত হন, আহত হন বিজেপি কাউন্সিলর মীনা দেবী পুরোহিত, স্বপন দাশগুপ্ত। আহত হন একাধিক পুলিশ কর্মীও। পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনায় পালটা অভিযোগ ওঠে পুলিশেরই বিরুদ্ধে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, পুলিশ নিজেরাই নিজেদের গাড়িতে আগুন লাগিয়েছে। সারা দিন কলকাতার নানা এলাকা সাক্ষী থাকল বিজেপি পুলিশ খন্ডযুদ্ধের। 

আরও পড়ুন-  বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার, পুলিশের গাড়িতে আগুন- দেখুন সেরা ১৫টি ছবি

মুরলিধর সেন লেনে পুলিশের তাণ্ডবে উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা। রাজ্য বিজেপি-র দফতর মুরলিধর সেন লেনে। সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠি চার্জের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় আহত হন একাধিক বিজেপি কর্মী-সমর্থক। মাথা ফাটে বিজেপি নেত্রী মিনা দেবী পুরোহিতের। মাথায়, বুকে, পিঠে পুলিশের লাঠির বাড়ি পড়ে। জামা খুলে পুলিশের লাঠির চিহ্ন দেখালেন বিজেপি কর্মীরা

আরও পড়ুন-  জল কামান-কাঁদানে গ্যাসে অসুস্থ বিজেপি কর্মীরা, ২টো ৪০-এ নবান্ন অভিযান শেষ বলে জানালেন দিলীপ ঘোষ

বিজেপির চতুর্থ একটি মিছিল পৌঁছে যায় কলকাতা পুলিশের সদর দফতরের কাছে। পুলিশ অবশ্য লাঠিচার্জ করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গ্রেফতার হন বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য বিজেপি নেতারা। এদিকে, লালবাজারের কাছে এমজি রোডে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন বিজেপি কর্মীরা বলে অভিযোগ। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে পিসিআর ভ্যান। সংঘর্ষে পুলিশেরও একাধিক কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশের বিরুদ্ধে অমানুষিক নিষ্ঠুরতার অভিযোগ কর্মীদের। জল কামান ও কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার কেন করল পুলিশ, প্রশ্ন বিক্ষোভরত বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের।