সংক্ষিপ্ত

  • লকডাউনে ছাড় নেই অ্যাম্বুল্য়ান্সেরও
  • রাজ্যে ঢোকার মুখে দেহ আটকাল পুলিশ
  • লকডাউনে গেরোয় পড়লেন অসহায় মহিলা
  • আসানসোলের ঘটনা
     

ক্যানসার কেড়েছে স্বামীকে। দিল্লি থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে দেহ নিয়ে ফেরার পথে লকডাউনে গেরোয় পড়লেন মহিলা। আসানসোলের কাছে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় যখন দেহ আটকায় পুলিশ, তখন কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ঘটনাটি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায়। খবর পৌঁছে যায় নবান্নেও। শেষপর্যন্ত অ্যাম্বুল্যান্সটি ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে স্বস্তি মেলেনি, কিছুটা দুর যাওয়ার পর আবার অ্যাম্বুল্যান্সটি বিকল হয়ে যায়!

আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণের জের, বীরভূমে কোরায়েন্টাইনে সিভিক ভলান্টিয়াররাও

পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নের মানস বয়াল। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ভুগছিলেন ব্রেন ক্যানসারে। ১৭ মার্চ চিকিৎসা করাতে স্বামীকে নিয়ে দিল্লির এইমসে যান স্ত্রী। সেখানে মাসখানেকেরও বেশি সময়ে ধরে চলে চিকিৎসা। কিন্তু ততদিন পরিস্থিতি প্রায় হাতের বাইরে চলে গিয়েছে। শেষের দিকে রোগীকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়। শুক্রবার ভোরে মারা যান মানস। এরপর যথারীতি অ্যাম্বুল্যান্স-সহ দেহ নিয়ে হলদিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন মৃতের স্ত্রী। সমস্ত দরকারি কাগজপত্র তো ছিলই, দিল্লিতে চিকিৎসারত অবস্থায় স্বামীর করোনা টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্টটিও সঙ্গে রেখেছিলেন তিনি।  ফেরার পথে কোথাও কোনও বাধার মুখে পড়তে হয়নি। তাল কাটল ঝাড়খণ্ড থেকে বাংলায় ঢোকার মুখে।

জানা গিয়েছে, আসানসোলের কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়কে অ্যাম্বুল্য়ান্সটিকে আটকান রাজ্য পুলিশে কর্তব্যরত আধিকারিকরা। কেন? পুলিশের তরফে জানানো হয়,  লকডাউনের সময়ে কোনও জেলায় প্রবেশ করার জন্য পুলিশ সুপার কিংবা উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের অনুমতি প্রয়োজন। তা না হলে আটকে থাকতে হবে। মানসবাবুর অসহায় স্ত্রী তখন পুলিশকর্মীদের হলদিয়া যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। তাঁকে অপেক্ষা করতে বলা হয়। এভাবেই কেটে যায় প্রায় ঘণ্টা ছয়েক। অ্যাম্বুল্যান্সটিকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য রীতিমতো কান্নাকাটি করতে শুরু করেন অসহায় ওই মহিলা।

আরও পড়ুন: 'অধিগ্রহণ করে বাস চালাক সরকার'. রাজ্য়কে পাল্টা প্রস্তাব বাসমালিকদের

আরও পড়ুন: লকডাউনে দুর্ভোগের ইতি, রাজস্থান থেকে পড়ুয়াদের ফিরিয়ে আনল সরকার

এদিকে ততক্ষণে ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমের নজরে চলে এসেছে। খবরও ছড়িয়ে পড়েছে। লকডাউনের জেরে যে অ্যাম্বুল্যান্সও আটকে পড়েছে, তা সে খবর পৌঁছে যায় নবান্নে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের তরফে দ্রুত সমস্ত কাজ মিটিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাতে সমস্যা মেটেনি।  ২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কিছুটা এগনোর পরই ঘটে আর বিপত্তি। বিকল হয়ে যায় গাড়ি।  লকডাউনে জেরে মেকানিক পাওয়া যায়নি। হলদিয়ার এখনও ৩০০ কিমি দূরে।  কীভাবে পৌঁছবেন সেখানে, ঘোর অনিশ্চয়তায় পড়েছে সদ্য স্বামীহারা মহিলা।