সংক্ষিপ্ত
গত বুধবার কোচবিহারে নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে জয়গাঁ থানায় গিয়েছিলেন রতন কর। এই থানার ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ভারত-ভুটান সীমান্তে অবস্থিত জয়গাঁ থানার কোয়ার্টারে থাকতেন।
ডালিয়া সরকার, জলপাইগুড়ি- বুধবার অর্থাৎ ১ ডিসেম্বর নিখোঁজ হয়েছিলেন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) জয়গাঁ থানার (Jaigaon Police Station) অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর (ASI) রতন কর। অবশেষে হাসিমারা ১০ নম্বর এলাকার চা-বাগানের (Tea Garden) একটি ঝোপ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার (Body Recover) করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পুলিশ কুকুর দিতে এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ সুপার (Police Super) ভোলানাথ পান্ডে সহ অন্য পুলিশ আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, গত বুধবার কোচবিহারে (Coochbehar) নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে জয়গাঁ থানায় গিয়েছিলেন রতন কর। এই থানার ট্রাফিক বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ভারত-ভুটান সীমান্তে অবস্থিত জয়গাঁ থানার কোয়ার্টারে থাকতেন। বুধবার দুপুর ২ টোর সময় জয়ঁগা থানা থেকে হাসিমারা পুলিশ চেকিং পয়েন্টে ডিউটি দেওয়ার জন্য তিনি রওনা দিয়েছিলেন। রতন করের স্ত্রী সীতা কর জানান, ডিউটিতে যাওয়ার আগে তাঁর সঙ্গে রতন করের ফোনে কথা হয়েছিল। কোচবিহার থেকে জয়গাঁ পৌঁছানোর পর ফোন করে বাড়িতে তা জানিয়ে দিয়েছিলেন। এমনকী, বাড়ি থেকে রান্না করা খাবারও সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু, সন্ধ্যার পরে তাঁর মোবাইল সুইচ অফ হয়ে যায়। তারপরে আর তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন- ঘরে ঘরে জ্বর হচ্ছে, 'ডাইনি' অপবাদে আদিবাসী প্রৌঢ়াকে মারধরের অভিযোগ
এরপরই তদন্তে নামে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে যায় যায় দলসিং পাড়া পর্যন্ত বাইকে করে গিয়েছিলেন রতন কর। আর দলসিং ব্রিজ পার হওয়ার পরই সুইচ অফ হয়ে যায় তাঁর মোবাইল। তারপর থেকে আর তার কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। গোটা ঘটনা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল ভুটান সীমান্ত জয়ঁগা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায়।
মোবাইল টাওয়ারের লোকেশন ধরে শুক্রবার দিনভর আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট জলদাপাড়া অভয়ারণ্য সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি চালায় জেলা পুলিশের একটি দল। এমনকী, বনদফতরের সহযোগিতায় কুনকি হাতি দিয়ে জঙ্গলের ভিতরেও তল্লাশি চালায় জেলা পুলিশ। যত দিন এগিয়েছে পুলিশের তল্লাশি আরও জোরদার করা হয়েছিল।
এরপর রবিবার সকালে হাসিমারা ১০ নম্বর এলাকায় তল্লাশি করতে গিয়েই চা বাগানের একটি ঝোপ থেকে উদ্ধার হয় রতন করের মৃতদেহ। তবে কীভাবে মৃত্যু হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডে জানান, রতন করেন মৃতদেহ হাসিমারা ১০ নম্বর এলাকার চা বাগানের একটি ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে ডগ স্কোয়াড কে দিয়ে পর্যবেক্ষণ করানো হয়। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তাঁকে ব্যক্তিগত কারণে খুন করা হয়েছিল নাকি বালি মাফিয়ারা এই খুনের ঘটনায় জড়িত রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।