সংক্ষিপ্ত
মেদিনীপুর সদর ব্লকের সাতগেড়িয়া এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। এই গ্রামে কয়েক মাস আগে পরপর জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কয়েক জন অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় গুজব রটে ডাইনি কাণ্ডের।
ডাইনি অপবাদে গ্রামের এক প্রৌঢ়াকে (Old Lady) মারধর করার অভিযোগ উঠল কয়েকজন গ্রামবাসীর (Villagers) বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের (West Midnapore district) মেদিনীপুর সদর ব্লকের সাতগেড়িয়া এলাকায়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই প্রৌঢ়াকে ভর্তি করা হয় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (Midnapore Medical College and Hospital)। এই ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার (Arrest) করেছে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। আদিবাসী (Tribal) সমাজের নেতৃত্বদের সহযোগিতায় সমাধানের উদ্যোগে প্রশাসন।
মেদিনীপুর সদর ব্লকের সাতগেড়িয়া এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। এই গ্রামে কয়েক মাস আগে পরপর জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কয়েক জন অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় গুজব রটে ডাইনি কাণ্ডের। অভিযোগ, গ্রামের একদল লোক আদিবাসী জান গুরুর পরামর্শে গ্রামের এক প্রৌঢ়াকে ডাইনি সন্দেহে অত্যাচার করতে শুরু করেন। কয়েক মাসে দফায় দফায় তাঁকে মারধর করা হয়। এরপর স্থানীয় আদিবাসী পঞ্চায়েত সদস্যরা বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে। রাতে স্থায়ী সমাধান হলেও পুরোপুরি সমাধান হয়নি। ওই প্রৌঢ়ার বৌমা বলেন, "গ্রামের একদল লোকজন দীর্ঘদিন ধরে ডাইন অপবাদে অত্যাচার করছে। গতকাল কয়েকজন লোক মদ খেয়ে গিয়ে মারধর করেছে।"
রাতেই গুরুতর জখম অবস্থায় ওই প্রৌঢ়াকে উদ্ধার করে প্রথমে পাঁচখুরী গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। খবর পেয়ে রাতেই কোতোয়ালি থানার পুলিশ কয়েকজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।
রবিবার সকালে প্রৌঢ়াকে দেখতে হাজির হন বিধায়ক দিনেন রায়। আদিবাসী সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের নেতাদের নিয়ে কথা বলেন ওই প্রৌঢ়ার সঙ্গে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাসও দেন তিনি। এই ঘটনা প্রসঙ্গে দিনেন রায় বলেন, "এই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাহলেও বিষয়টি পুরোপুরি সমাধান করতে হবে সামাজিকভাবে। তাই আদিবাসী সামাজিক সংগঠনের নেতাদের নিয়ে প্রশাসন বসবে। মানুষকে বুঝিয়ে সচেতনতার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে।"
স্থানীয় আদিবাসীদের সামাজিক সংগঠন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের নেতা সনাতন মুর্মু হাসপাতালে গিয়ে সকলের সঙ্গে কথা বলেন। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, " আদিবাসীদের মধ্যে কুসংস্কার এখনও থাকার সুযোগে জান গুরুর মতো বেশ কিছু লোকজন এই ভুল ধারণাগুলো ছড়াচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে ওই জান গুরুকে এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। বোঝানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে আদিবাসী ভাইদের।"