সংক্ষিপ্ত
প্রশিক্ষণের তালিকায় রয়েছে বিউটিশিয়ান, টেলারিং, কাঁথাস্টিচ, বার্বি ডল এবং বাটিক প্রিন্টের মতো বিষয়। এর মধ্যে ৩০ জন মহিলাকে বিউটিশিয়ান কোর্সের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর এখন ১২০ জন মহিলাকে টেলারিংয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের প্রত্যন্ত এলাকার মহিলাদের অর্থনৈতিক ভাবে স্বনির্ভর (Financially Independent) করে তুলতে এবার এগিয়ে এল মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন (Murshidabad District Administration)। আর সেই লক্ষ্যে একটি কৃষি উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হল। তাঁদের সাবলম্বী করে তোলার জন্য শনিবার থেকে প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। সীমান্তবর্তী সাহেবনগর কৃষি উন্নয়ন সমিতির উদ্যোগে এর আগে বিউটিশিয়ান কোর্স (Beautician Course) করানোর পর এবার টেলারিং এর প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে সমিতির ম্যানেজার মনিরুজ্জামান বলেন, “শুধু প্রশিক্ষণ দেওয়ায় নয়, প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের উপযুক্ত পরিমানে ঋণ দিয়ে তাঁদের স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যেই আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। ইতিমধ্যে আমরা তার সুফল পেতে শুরু করেছি।” রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে ২০০০ সালে গড়ে ওঠে সাহেবনগর কৃষি উন্নয়ন সমিতি। ওই সমিতি এলাকার কৃষকদের ছাড়াও স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের উন্নয়নে কাজ করে চলেছে। ইতিমধ্যে সমিতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ১৭৫ টি স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী। সেখানে ২ হাজারের বেশি মহিলা কাজ করেন। ওই সব গোষ্ঠীকে এখনও পর্যন্ত মোট ঋণ দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। তার বেশির ভাগ আদায় হওয়ার পর ওই সমিতি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে এলাকার মহিলাদের আত্মনির্ভর করে তুলতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
আর ওই প্রশিক্ষণের তালিকায় রয়েছে বিউটিশিয়ান, টেলারিং, কাঁথাস্টিচ, বার্বি ডল এবং বাটিক প্রিন্টের মতো বিষয়। এর মধ্যে ৩০ জন মহিলাকে বিউটিশিয়ান কোর্সের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর এখন ১২০ জন মহিলাকে টেলারিংয়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছে। স্থানীয় দাড়ারকান্দি নিউ ইরা অ্যাকাডেমি ভবনে মোট ৪ টি দলে ৩০ জন করে মহিলাকে ৪০ দিনের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলছে। এদিকে ৮ জন দক্ষ প্রশিক্ষককে ওই সব মহিলাদের টেলিরিংয়ে উপযুক্ত করে তোলার জন্য নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে আগ্রহ বাড়াতে বাড়ি থেকে আসা যাওয়ার জন্য প্রতিদিন নগদ ৫০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে বলেও সমিতির তরফে জানানো হয়েছে।
এই বিষয়ে শিক্ষার্থী হাসিনা খাতুন বলেন, "আমার দুই ছেলে মেয়েই আমাকে স্কুলে পাঠায়। সংসারের আর্থিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হয়েছি। এখন বাড়তি রোজগারের আশায় টেলারিংয়ের প্রশিক্ষণ নিচ্ছি। কারণ টেলারিংয়ের কাজ জানলে বাড়িতে বসেই পোশাক তৈরির কাজ করা যাবে।" মাস্টার ডিগ্রি করা জেসমিন খাতুন, বিয়ে পাশ করা রাকিবা নাসরিন বলেন, "পড়াশোনা শেষে চাকরির জন্য যেমন প্রস্তুতি নেব, তেমনই বাড়িতে বসে কাজ করে স্বনির্ভর হতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছি।"