সংক্ষিপ্ত

চিকিৎসকের ডিসপেন্সারি থেকে শুরু করে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকার মাদক উদ্ধার হয়। পরে হাতুড়ে চিকিৎসক মোর্তুজা শেখকে গ্রেফতার করা হয়।

বাইরে থেকে দেখে এতটুকুও আন্দাজ করার উপায় নেই। আর পাঁচটা গ্রামের ডাক্তারখানার মতই দেখতে। তবে অন্যদের থেকে ভিন্ন  মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী শিবনগর এলাকার এই ডাক্তার-খানা। ওই ডিসপেন্সারির আড়ালে মাদক কারবারের আঁতুর ঘর বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামে হাতুড়ে চিকিৎসকের মাধ্যমে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করে এই কারবার চালাচ্ছিল মোর্তুজা শেখ। রাতারাতি পশার জমিয়ে বাড়ি সম্পত্তি তৈরি করা দেখে এলাকার মানুষের চোখ কপালে উঠে ছিল। তারপরে আঁতকে ওঠা কান্ড ঘটে ঝুলি থেকে বেরিয়ে পরল অবশেষে বিড়াল। 

ওই চিকিৎসকের ডিসপেন্সারি থেকে শুরু করে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকার মাদক উদ্ধার হয়। পরে হাতুড়ে চিকিৎসক মোর্তুজা শেখকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের ঘটনায় বুধবার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো শিবনগর এলাকায়। তার ডাক্তার-খানা ও বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ৯০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৬০ লক্ষ টাকারও বেশি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের কাছে ঐ হাতুড়ে চিকিৎসক একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য জেরায় জানায় বলেই বিশেষ সূত্র মারফত জানা যায়।  

সে ওই বিপুল টাকা ট্যাবলেটগুলি বাইরে থেকে বিশেষ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে  আমদানি করেছিল । তারপর ঘরে মজুত করে রেখেছিল। পরে ট্যাবলেটগুলি বাংলাদেশে রীতিমতো লিংক ম্যান এর মাধ্যমে প্রচার করা হতো। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরেই মর্তুজার উপর নজর রাখছিল পুলিস। নিশ্চিত হওয়ার পরই তার বাড়িতে হানা দেয় পুলিস। পুলিসি হানার আঁচ পেয়ে মাদকগুলি সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করছিল সে। তার আগেই পুলিস তাকে ধরে। 

তার ডাক্তার-খানা সহ একাধিক ঘরে তল্লাশি চালিয়ে ঐ বিপুল ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার হয়। আরো জানা যায়, ধৃত ঐ হাতুড়ে চিকিৎসক মর্তুজা ইতিপূর্বে কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের রাজশাহিতে ছিল। সেখানে এক চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে কাজ করত সে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশ থেকে  ভারতে ফিরে ওষুধের কারবার শুরু করে সে। এলাকার বিভিন্ন দোকানে ওষুধ সরবরাহ করত সে। 

ওষুধের কারবারের আড়ালে গোপনে সে মাদকের কারবার শুরু করে রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছিল সে। তারপর থেকেই মর্তুজার উপর নজর রাখছিল পুলিস। ফলে, ধৃতকে জেরা করে মাদক চক্রের আরও বহু তথ্য মিলতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান পুলিসের। শেষ পাওয়া খবরে জানা যায় ধৃত ওই হাতুড়ে চিকিৎসক কে বিশেষ এনডিপিএস আদালতে তোলা হলে বিচারক তার জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৬ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।