সংক্ষিপ্ত

হাওড়া পৌরনিগম ও বালি পৌরসভার নির্বাচন না হওয়ার জন্য রাজ্যপালকেই সরাসরি দায়ি করেছেন প্রসূন। এদিকে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে এখনও পর্যন্ত হাওড়ায় পুরভোট না হওয়ায় রীতিমতো চিন্তায় রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। 

'যতদিন হাওড়া পৌরনিগম (Howrah Municipal Corporation) ও বালি পৌরসভার (Bally Municipality) নির্বাচন না হবে ততদিন রাজ্যপালকে (Governor) হাওড়াতে (Howrah) ঢুকতে দেব না।' আজকে হাওড়া পৌরনিগমের একটি সাংবাদিক বৈঠকে এভাবেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে (Jagdeep Dhankhar) আক্রমণ করেন হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় (Prasun Banerjee)। হাওড়া পৌরনিগম ও বালি পৌরসভার নির্বাচন না হওয়ার জন্য রাজ্যপালকেই সরাসরি দায়ি করেছেন তিনি। এদিকে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election) আগে এখনও পর্যন্ত হাওড়ায় পুরভোট না হওয়ায় রীতিমতো চিন্তায় রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।  

সাংসদের মতে, ভোট না হওয়ার জন্য সেখানে একাধিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। নাগরিক পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। যার প্রভাব লোকসভা ভোটেও পড়বে বলে মনে করছেন তিনি। এর প্রতিবাদে তিনি রাজ্যপালকে হাওড়ায় ঢুকতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। তাঁর আরও অভিযোগ, "সাড়ে ৩ বছর আগে হাওড়া পৌরনিগমের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। পৌর প্রতিনিধিরা না থাকায় দিনে দিনে পৌরনিগমের পরিষেবার মান খারাপ হওয়ার প্রভাব পড়েছিল ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে। ২ লাখের বেশি ভোটে জয়ের মার্জিন কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১২০০-এ।" 

আরও পড়ুন- আনিস খানের মৃত্যুর প্রতিবাদ করে গ্রেফতার, অবশেষে জামিন পেলেন মীনাক্ষি

এদিকে রাজ্যে ২৭ ফেব্রুয়ারি ১১৩টি পৌরসভায় ভোট হয়েছে। শুধুমাত্র বালি পুরসভায় ভোট হয়নি। আর তার সঙ্গে বাকি রয়েছে হাওড়া পুরনিগমের ভোটও। প্রসূনের অভিযোগ, "রাজ্যপাল ফাইলে স্বাক্ষর না করার জন্যই ভোট আটকে রয়েছে। আমাকে সাধারণ মানুষ জিজ্ঞেস করছেন কবে হাওড়া ও বালিতে পুরসভার ভোট হবে। আমি কোনও সদুত্তর দিতে পারছি না।" উল্লেখ্য, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর ২০১৫ সালে বালি পুরসভাকে হাওড়া পুরনিগমের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩৫ ওয়ার্ড বিশিষ্ট বালি পুরসভাকে ১৬টি ওয়ার্ডে পরিণত করে হাওড়া পুরনিগমের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ২০২১ সালের প্রথম দিকেই ফের বালিকে হাওড়া থেকে ভাগ করা হবে এমন একটা ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। অবশেষে বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনে হাওড়া পুরনিগম (সংশোধনী) বিল ২০২১ পাশ করানো হয়। কিন্তু, সেই বিলে এখনও পর্যন্ত রাজ্যপাল সই না করায় হাওড়া পুরনিগম ও বালি পুরসভার নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।

আরও পড়ুন- 'মুখ্যমন্ত্রীর ইশারায় মহিলা বিধায়করা রাজ্যপালকে হেনস্থা করেছে', বিস্ফোরক শুভেন্দু

শিয়রে আবার ২০২৪-এ লোকসভা ভোট। তার আগে পৌর পরিষেবার মান যাতে উন্নত না হয় সেই জন্যই রাজ্যপাল এখানে ভোট করাতে চাইছেন না বলে দাবি তৃণমূলের। এর প্রতিবাদে দল হাওড়ায় গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু করছে। রাজ্যপালকে অপসারণের দাবিতে সেই গণস্বাক্ষর নিয়ে শাসক দলের সাংসদরা রাষ্ট্রপতির দারস্থ হবেন বলেও জানান প্রসূন। তিনি বলেন, "রাজ্যপাল পুরোপুরি বিজেপির হয়ে কাজ করছেন। যতদিন না হাওড়ায় ভোট হচ্ছে ততদিন আমরা তাঁকে হাওড়ায় ঢুকতে দেব না। তাঁর বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আমরা তীব্র আন্দোলন করব।" পাশাপাশি কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধেও সরব হন প্রসূন। তিনি বলেন, "সাঁতরাগাছিতে আন্ডারপাস তৈরি থেকে আরতি কটন মিল নিয়ে কেন্দ্রের বারবার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এমনকী সংসদে বিষয়গুলি প্রশ্ন আকারে আমাকে তুলতেও দেওয়া হয় না।" আর এই বিষয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনে ১৪ মার্চ দিল্লিতে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্নায় বসবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন- আজ বাজেট অধিবেশন, বহু বিতর্কের পর বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপাল