সংক্ষিপ্ত

মন্দির নেই, নেই মা কালীর কোনও মূর্তি। পাহাড় জঙ্গল ঘেরা খোলা আকাশের নিচের শিলাকেই কালীরূপে পুজো দেন ভক্তরা। প্রাচীন কাল থেকে এভাবেই পাহাড়ি কালীপুজো হয়ে আসছে পুরুলিয়ার ঝালদায়। 

একসময় মা কালী (Kali Puja) রাতে ঘোড়ায় চড়ে (Horseback) এলাকায় ঘুরতেন। দূর থেকে শুনতে পাওয়া যেত ঘোড়ার খুরের আওয়াজ। এখনও মাঝে মধ্যে জঙ্গল (Forest) থেকে ভেসে আসে নাগরার আওয়াজ। সেই সময় যে যা মানত করেন মা তা পূরণ করেন। করোনার (Corona) থাবায় যখন বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তখন এই এলাকায় একজকেও ছুঁতে পারেনি করোনা মহামারি। এলাকার মানুষের বিশ্বাস মা এখানে সদা জাগ্রত হয়ে সকলকে রক্ষা করে চলেছেন। জঙ্গলমহল পুরুলিয়ার (Purulia) ঝালদায় পাহাড় জঙ্গল পরিবেশে বহু প্রাচীনকালে শুরু হওয়া পাহাড়ি কালীপুজো ঘিরে আজও রয়েছে এক আলাদা উন্মাদনা।

আরও পড়ুন- মুসলিম জমিদারের হাতে শুরু হয় তিন বোনের বুড়ি কালী পুজো

মন্দির (Temple) নেই, নেই মা কালীর কোনও মূর্তি (Idol)। পাহাড় জঙ্গল ঘেরা খোলা আকাশের নিচের শিলাকেই কালীরূপে পুজো দেন ভক্তরা। প্রাচীন কাল থেকে এভাবেই পাহাড়ি কালীপুজো হয়ে আসছে পুরুলিয়ার ঝালদায়। এলাকার তৎকালীন রাজা নটবর সিং দেওয়ের আমলে এই পাহাড়ি কালীর পুজো শুরু হয়েছিল। গ্রামবাসী কেদারনাথ পাণ্ডে জানান, এখানে মূর্তি পুজো হয় না। মা এখানে শিলা রূপে বিরাজমান।

আরও পড়ুন- একই মন্দিরে কালীর সঙ্গে পূজিত হন পীর বাবা

প্রাচীন কাল থেকে এভাবেই মায়ের পুজো হয়ে আসছে। সামনেই রয়েছে পঞ্চ মুন্ডি, পাশেই কপিল মুনি এবং শিব মন্দির সবার সঙ্গে মায়ের লিঙ্ক রয়েছে। রাজা নটবর সিং দেওয়ের সময় এই পুজো শুরু হয়েছিল। মা কালী ঘোড়ায় চড়ে এলাকা ঘুরতেন, যা অনেকেই দর্শন করেছেন। এখনও মাঝে মাঝে নাগরার আওয়াজ শুনতে পাওয়ায় যায়। মায়ের কাছে যে যা মানত পারেন মা তা পূরণ করেন। মায়ের কৃপায় করোনার সময় আশপাশে করোনা সংক্রামিত হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু, এই গ্রামে কেউ করোনায় আক্রান্ত হননি। মা এখানে সকলকে এভাবেই রক্ষা করে চলেছেন।

আরও পড়ুন- কালীপুজো ছাড়াও দীপাবলি নিয়ে রয়েছে অনেক কাহিনি, জেনে নিন দীপাবলির মাহাত্ম্য

আর তাই আজও ঝালদার পাহাড়ী কালীর কাছে পুজো দিতে আসেন দুরদুরান্তের ভক্তরা। শীলা রূপে পুজো নিয়ে মা সকলের সমস্যার সমাধান করে চলেছেন, বলেই বিশ্বাস ভক্তদের।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেই কালী পুজোকে কেন্দ্র করে একাধিক কাহিনি আবর্তিত হয়। পুরুলিয়া মফঃস্বল থানার ছোট্ট গ্রাম হিড়বহালের একটি কালী মন্দিরের (Kali Temple) একদিকে রয়েছেন মা কালী আর অন্যপাশে রয়েছেন পীরের মাজার। কালীর সঙ্গে পূজিত হন পীর বাবাও (Baba Pir)। মা কালীর কাছে ছাগ বলি দেওয়া হয় আর পীরের মাজারে দেওয়া হয় মোরগ। ৫০০ বছর আগে চার দেওয়ালের ভেতর তৈরি হওয়া মন্দির-মসজিদের সহাবস্থান আজও স্বমহিমায় অটুট। দেশ বিদেশে যখন মন্দির মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটে চলেছে ঠিক তখনই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির গড়ল হিড়বহালে। 

YouTube video player