সংক্ষিপ্ত

  • শারীরিক অক্ষমতাকে দূরে সরিয়ে সফল, রায়গঞ্জের শিক্ষিকা  
  • পা দিয়ে লিখেই শিক্ষার্থীদের আলোর পথ দেখালেন 'শোভা ম্যাডাম' 
  • অবিরত অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন তিনি, সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের 
  • পা দিয়ে লিখেই কচিকাঁচাদের অ-আ-ক-খ শেখাচ্ছেন রায়গঞ্জের শিক্ষিকা 
     


জন্মসূত্রে নিজের শারীরিক অক্ষমতাকে দূরে সরিয়ে রেখে শুধুমাত্র ইচ্ছেশক্তির সাহায্যে অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন রায়গঞ্জের শিক্ষিকা শোভা মজুমদার। অসংখ্য শিশুর ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করার মহান কাজে ব্রতী হয়েছেন তিনি। যদিও হাত নয়, পা দিয়ে লিখে ছোটো ছোটো ছেলে-মেয়েদের জীবনের প্রথম পাঠ দিচ্ছেন তিনি। আর পাঁচটা শিক্ষক-শিক্ষিকার মতো হাতে লিখে স্বাভাবিকভাবে পড়াশোনা করাতে না পারলেও, 'শোভা ম্যাডাম' আজ কচিকাঁচাদের কাছে অনুপ্রেরণা। তিনি নারী, তিনি সর্ব শক্তিমান৷ কথায় বলে, নারী দশভুজা৷ 

আরও পড়ুন, হকারদের মারামারির জের, চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে মৃত্যু হল যুবকের


এমনই এক দশভুজা উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের কাশীবাটির শোভা মজুমদার৷ ছোটো থেকেই তার দু'টি হাতেই রয়েছে প্রতিবন্ধকতা।জীবন ধারণের কোনও কাজই ওই দুই হাত দিয়ে করতে পারেন না তিনি। দু'টি হাত অক্ষম হয়ে যাওয়া শোভা কীভাবে লিখবেন, তা নিয়ে যখন পরিবারের সদস্যরা চিন্তিত তখন নিজেই নিজের দুই পা ব্যবহার করে লিখতে শুরু করেন। প্রথমদিকে অত্যন্ত কষ্ট হলেও, পরবর্তীকালে পায়ের সাহায্যে পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়ির অন্যান্য কাজও করতে শুরু করেন শোভা৷ মায়ের চেষ্টা ও নিজের অক্লান্ত পরিশ্রমে একে একে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ব বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়েছেন সফলভাবে। টানাটানির সংসারে এমন শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ের উপেক্ষিত হয়ে থাকার ছবি আকছার দেখা যায়৷ কিন্তু, ছোটো থেকেই দু'চোখ ভরা স্বপ্ন শোভার৷ তাই সব বাধা পেরিয়ে ২০১১ সালে রাঙ্গাপুকুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন তিনি৷ স্কুলের চাকরির শুরুটা খুব একটা সুবিধার ছিল না তাঁর কাছে৷ অভিভাবকদের একাংশ শোভাদেবীর কর্মক্ষমতা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন৷ সেইসব চিন্তা দূর করেছেন তিনি৷ ভরসা জুগিয়েছেন স্কুলের সহ শিক্ষিকাদেরও৷ অনুপ্রেরণা হয়েছেন ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে৷ পায়ে লিখেই কচিকাঁচাদের অ-আ-ক-খ শেখাচ্ছেন৷ স্কুলের পড়ুয়াদেরও পছন্দের শিক্ষিকা শোভা ম্যাডাম ৷

আরও পড়ুন, করোনা আতঙ্কে কাঁপছে বাংলা, এবার বন্ধ হল ভারত-বাংলাদেশ 'জয়েন্ট রিট্রিট'

রাঙ্গাপুকুর স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শুক্লা সরকার দাস বলেন, 'শোভা আমাদের অত্যন্ত ভরসার মানুষ৷ অন্যান্য শিক্ষকদের মতোই বাচ্চাদের পড়ানোর পাশাপাশি অন্যান্য কাজও করতে পারেন। শোভা - আমাদের কাছে একটা শক্তি৷' ছাত্রী শিউলি বর্মণ জানায় "আমাদের শিক্ষিকা অত্যন্ত ভালোভাবে আমাদের পড়াশোনা করিয়ে থাকেন। তাঁর পায়ে লেখার কারণে আমাদের কখনোই সমস্যায় পড়তে হয়নি।' শোভা মজুমদারের মতো মানুষ জীবন সংগ্রামে পিছিয়ে নেই৷ পর্বতসমান বাধা-বিপত্তি পার করছেন মনের জোরে৷ অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের ৷

আরও পড়ুন, 'অযথা আতঙ্কিত হবেন না', মায়াপুরে দোল উৎসবে মাতলেন চিনা পর্যটকরাও