সংক্ষিপ্ত

২০২১ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন জয়। তারপরই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন জমা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। অবশেষে তাঁর সেই আবেদন গৃহীত হয়েছে। 

একসময় তৃণমূলেরই 'ঘরের ছেলে' (TMC Worker) ছিলেন অভিনেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায় (Joy Banerjee)। এরপর ২০১৪ সালে বিজেপিতে (BJP) যোগ দেন তিনি। কিন্তু, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election) পর থেকেই একটু একটু করে গেরুয়া শিবিরের (BJP) সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল তাঁর। তারপর ৬ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপির সঙ্গে সব সম্পর্ক ত্যাগ করেন। তখন থেকেই তাঁর ফের ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেওয়ার জল্পনা বাড়ছিল। অবশেষে সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আজ ফের ঘাসফুল শিবিরে যোগ দেওয়ার দিকে আরও এক পা বাড়ালেন তিনি। 

২০২১ সালের নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে (PM Narendra Modi) চিঠি লিখে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন জয়। তারপরই তৃণমূলে (TMC) যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন জমা দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) কাছে। অবশেষে তাঁর সেই আবেদন গৃহীত হয়েছে। তা নিয়েই আজ বিকেলে তৃণমূলের ওবিসি সেলের সহ সম্পাদক রাজু ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ তাঁদের মধ্যে বৈঠক হয়। এরপর বৈঠক থেকে বেরিয়ে ফের তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ছেলেবেলা থেকেই মানুষের জন্য কাজ করি। রাজনীতি থেকে সিনেমা সবই মানুষের জন্য। যে দলকে মানুষ দু হাত ভরে আশীর্বাদ করেছে, যে দলের সঙ্গে মানুষ রয়েছে আমি সেই দলের সঙ্গেই যাব। আর সেই মতো আমি তৃণমূল আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। আজ তা নিয়ে কথা বলতে আমাকে তৃণমূলের ওবিসি সেলের সহ সম্পাদক রাজু ঘোষ ডেকেছিলেন। কারণ দলে বড় যোগদানগুলি উনিই দেখেন।" 

আরও পড়ুন- কলকাতা পুরনিগমের আর্থিক সঙ্কট মেটাতে সাহায্য করুক শিল্পপতিরা, আহ্বান অতীন ঘোষের

যদিও আজ আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে যোগ দেননি জয়। গোয়া বিধানসভা নির্বাচনের পরই ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এ নিয়ে বলেন, "আসলে ১২ ফেব্রুয়ারি গোয়া বিধানসভা নির্বাচন (Goa Assembly Election) রয়েছে। সেই কারণে ওই নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্বরা ব্যস্ত রয়েছেন। তারপর তাঁরা সবাই ফিরবেন। ১৪ তারিখ নির্বাচন মেটার পরই আমাকে যোগদানের জন্য একটা দিন দেওয়া হবে।"  

আরও পড়ুন- কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকে সম্মান, বালিগঞ্জে রাস্তার নামকরণ হবে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নামে

যদিও আজ সকাল থেকেই শোনা যাচ্ছিল যে বিকেলের দিকে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর (Subrata Bakshi) সঙ্গে বৈঠক করবেন জয়। দলের যোগদান নিয়ে সুব্রতর সঙ্গে আলোচনা করবেন তিনি। কিন্তু, তা না করে বিকেলের দিকে রাজু ঘোষের অফিসে দেখা যায় তাঁকে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "প্রথমে বক্সীদার সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু, কোনও কারণে তা হয়নি। রাজু ঘোষের সঙ্গেই কথা হয়েছে। কারণ তিনিই বড়বড় যোগদানগুলি দেখেন। যোগদানের পর সুব্রত বক্সীর সঙ্গে দেখা হবে, কথা হবে।"

আরও পড়ুন- দলনেত্রীর তরফে মিলেছে সবুজ সঙ্কেত, পদ্ম ছেড়ে ফের ঘাসফুল শিবিরের পথে জয়

উল্লেখ্য, ২০০৯-১০ সাল থেকে তৃণমূলের মঞ্চে দেখা যেত জয়কে। কিন্তু, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপি-তে যোগ দেন তিনি। বীরভূমে বিজেপি-র প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। তারপর বিজেপি-র জাতীয় কার্যনির্বাহী সমিতির সদস্যও ছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে জয় সিউড়ি বিধানসভায় বিজেপির তরফে তাঁকে প্রার্থীও করা হয়েছিল। অবশ্য জিততে পারেননি। এরপর ২০১৯ সালে উলুবেড়িয়া লোকসভা ভোটেও জয় পাননি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করেনি বিজেপি। তারপর থেকেই তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব বাড়তে শুরু করেছিল। দলের মধ্যে থেকেও গুরুত্ব পাচ্ছিলেন না বলে দাবি করেছিলেন তিনি। অবশেষে ২০২১-এর ৬ নভেম্বর বিজেপি-র সঙ্গে সম্পর্ক পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করেন। কিন্তু, এত বছর পর কেন তিনি বিজেপি সঙ্গ ত্যাগ করলেন? এর উত্তরে দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। বলেন, অসুস্থতার সময় বিজেপির কোনও নেতা কর্মী আমার পাশে ছিলেন না। আমি আইসিইউ-তে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াউ করছিলাম। কেউ দেখতে যায়নি। এরা কখনও মানুষের পাশে থাকে না। তাই যে দল মানুষের সঙ্গে থাকে না আমিও তাদের সঙ্গে থাকব না।" তিনি আরও বলেন, "আমি তৃণমূলের ঘরের ছেলে। আমার প্রাক্তন স্ত্রীকেও হাত ধরে এই দলে নিয়ে এসেছিলাম। ২০১৪ সালে দিকভ্রষ্ট হয়ে বিজেপিতে গিয়েছিলাম। ৬-৭টা বছর আমার বেকার নষ্ট হয়েছে। কারণ যে দল সার্কাস পার্টির মতো নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করে, বাঙালির আবেগকে বোঝে না, সেই দলের সঙ্গে কেন যুক্ত ছিলাম তা ভাবলে আমার আজ আফসোস হয়।"