সংক্ষিপ্ত

অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে আনন্দপুর থানার পুলিশ। কয়েকদিন আগেই কবর থেকে মৃত শিশুর দেহ তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়।

কলকাতার আনন্দপুরে তিন বছরের শিশুকে খুন। চাঞ্চল্যকর ঘটনায় গ্রেফতার করা হল শিশুর বাবাকে। তিলজলা থেকে অভিযুক্ত বিজয় বড়ালকে গ্রেফতার করেছে আনন্দপুর থানার পুলিশ।

দক্ষিণ কলকাতার রুবি সংলগ্ন আনন্দপুর এলাকায় এক ৩ বছরের শিশুর মৃত্যু নিয়ে কিছু দিন আগে শিশুর দিদা আনন্দপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, তাঁর দাবি ছিল, স্বাভাবিকভাবে তাঁর নাতির মৃত্যু হয়নি, তাকে খুন করা হয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে আনন্দপুর থানার পুলিশ। কয়েকদিন আগেই কবর থেকে মৃত শিশুর দেহ তুলে ময়নাতদন্ত করা হয় এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, শিশুটির মাথায় গভীর ক্ষত চিহ্ন রয়েছে।

শিশুর মৃত্যুর পরই এলাকা থেকে গায়েব হয়ে গিয়েছিলেন তার মা ও বাবা। শনিবার গভীর রাতে শিশুর বাবা বিজয় বড়ালকে তিলজলা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ছোট শিশুটি বারবার বাথরুম যেতে চাইছিল এবং সেই সময় তার বাবা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। ছেলের বায়না সহ্য করতে না পেরে তাকে সজোরে চড় মারেন তিনি। সপাটে চড় খেয়ে বাচ্চাটি সোজা বাথরুমের দেওয়ালে গিয়ে ধাক্কা খায় এবং জ্ঞান হারায়। পরিস্থিতির ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে তার বাবা দরজা লক করে বেশ কিছুক্ষণের জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

নিহত শিশুর দিদা অভিযোগ করেছিলেন, ৬ নভেম্বর শিশুটির মৃত্যু হয়। বলা হয়েছিল বাথরুমে বালতির জলে ডুবে নাতির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে তাঁর সন্দেহ হয়। এর নেপথ্যে কোন রহস্য রয়েছে, তা জানতে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পারে, বিজয় বড়ালের মদ্যপানের সময় শিশুটি বারবার তাকে বাথরুম নিয়ে যাওয়ার কথা বলছিল। তাতেই বিরক্ত হয় বিজয় এবং রাগের মাথায় শিশুটিকে জোরে ধাক্কা দেয়। বাচ্চাটি দেওয়ালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। অন্যদিকে, বিজয় শিশুটির মাকে জানায় বাথরুমে বালতির জলে পড়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে।

তদন্তে নেমে কলকাতার আনন্দপুরে ওই শিশুটির বাবা-মায়ের ফ্ল্যাট তালাবন্ধ পেয়েছিল পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, চিৎকার শুনে তাঁরা ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে জানতে পারেন বাথরুমে বালতির জলে ডুবে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, বিজয় নিজের ছেলের সম্পর্কে প্রতিবেশীদের এও জানিয়েছিলেন যে, এক চিকিৎসক বলেছেন তাদের সন্তানের নিউমোনিয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ ঘটনায় সন্দেহ হয় শিশুর দিদার। তিনি স্থানীয় পুলিশের দ্বারস্থ হন। তদন্তে নেমে মোবাইল ফোনের লোকেশন ট্রাক করে বাচ্চাটির বাবা-মাকে খুঁজে বের করে পুলিশ। এরপর তাঁদের আটক করে টানা জেরা করা হয়। জেরার মুখে ভেঙে পড়েন শিশুর বাবা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বাবা বিজয় বড়ালই খুন করেছেন নিজের ছেলেকে।

আরও পড়ুন-
দলবদল করতে গেলে গাড়ি রাস্তার সঙ্গে মিশে যেতে পারে, তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহর হুঁশিয়ারিতে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি
শাসক দলের ‘দুর্নীতি’-ই মূল অস্ত্র, নতুন মুখ নিয়ে এসে পঞ্চায়েত ভোটে গোষ্ঠীকোন্দলও এড়িয়ে যেতে পারবে বিজেপি
ফের কমে গেল কলকাতার তাপমাত্রা, রবিবার বঙ্গের অধিকাংশ জেলাতেই আকাশ অংশত মেঘলা