সংক্ষিপ্ত

জিজ্ঞাসসাবাদের পদ্ধতিতে এবার বদল আনছে কলকাতা পুলিশ। ধমক-চমকের চিরাচরিত প্রথার বদলে আন্তরিক কথা বার্তার মাধ্যমে মনের গোপন কথা বের করে আনতে কৌশল প্রয়োগ করবে পুলিশ

নানা পাটেকার অভিনীত ' যশবন্ত লোহার' সিনেমাটির কথা মনে পরে ? সেখানে দেখানো হয়েছিল ইন্সপেক্টার লোহারের হাতে ধরা পড়েছিল এক পকেটমার । বাবা-বাছা বলে ইন্সপেক্টার তাকে জিজ্ঞাসা করে যে সে চুরি করা পার্সটি  কোথায় রেখেছে। প্রায় এক ঘন্টা এইভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পরও কোনো সদুত্তর না মেলায় ইন্সপেক্টার শুরু করেন মারধর ।দু চার ঘা পড়তেই অপরাধীর সটান স্বীকারোক্তি যে সে পার্সটি বিক্রি করে দিয়েছে চোরাবাজারে। আরও এক ঘা পড়তেই পার্সটি যার কাছে বিক্রি করেছে বেরিয়ে পড়ে তার নামও  । কার্যসিদ্ধির পর ইন্সপেক্টার লোহার বেঁকা হেসে তার  সহকর্মীকে বলেন , 'বুঝলে কিছু ? অপরাধীদের ভাষায় তাদের সঙ্গে কথা বলতে হয় নাহলে তারা ঠিক বোঝে না। '

এতদিন ভারতবর্ষে পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়াটি ছিল ঠিক এমনই। কিন্তু এবার তাতে আনা হচ্ছে বদল। ধমক-চমকের চিরাচরিত প্রথার বদলে আন্তরিক কথা বার্তার মাধ্যমে মনের গোপন কথা বের করে আনার এই নতুন পদ্ধতি খুব তাড়াতাড়ি কার্যকর হবে কলকাতাসহ অন্যান্য রাজ্যের জেলাগুলিতে।

জানা গেছে এই প্রক্রিয়া অবলম্বন করেই বন্দিদের মনের কথা বের করে আনার কৌশল প্রথম শুরু করেছিল আমেরিকা ও নেদারল্যান্ড। তাতে দারুন সাফল্য মেলায় এবার সেই কৌশল প্রয়োগ করবে কলকাতা পুলিশও। এই প্রস্তাবে সম্মতি মিলেছে প্রশাসনিক কর্তাদের। এমনকি তদন্তকারী আধিকারিকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবার উদ্দেশ্যে

জিজ্ঞাসসাবাদের পদ্ধতিতে এবার বদল আনছে কলকাতা পুলিশ। ধমক-চমকের চিরাচরিত প্রথার বদলে আন্তরিক কথা বার্তার মাধ্যমে মনের গোপন কথা বের করে আনতে কৌশল প্রয়োগ করবে পুলিশ। যে পদ্ধতিতে ইতিমধ্যেই দারুণ সাফল্য পেয়েছে নেদারল্যান্ড ও আমেরিকা, সেই পদ্ধতিতেই বন্দিদের থেকে কথা বার করার জন্য প্রয়োগের পরিকল্পনা করেছে পুলিশ।

কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পদ্ধতি প্রয়োগের ব্যাপারে ইতিমধ্যেই সম্মতি মিলেছে প্রশাসনিক কর্তাদের । তদন্তকারী আধিকারীকদের এই পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য পাঠানো হচ্ছে আমেরিকাতেও।

একটা সময় পর্যন্ত অপরাধী বা সন্দেহভাজনের পেট থেকে কথা বের করার জন্য থার্ড ডিগ্রি হিসাবে নানা ধরনের শারীরিক নিগ্রহ বা মানসিক অত্যাচার করা হতো। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে সব বন্ধ হতে চলেছে । অপরাধ বিজ্ঞানের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে মনোবিজ্ঞানও। তাই আন্তরিক কথাবার্তা বলে রোগীর সঙ্গে একাত্ম হওয়ার চেষ্টা করলে বিশ্বাস করে অনেক কথাই বলে ফেলে অপরাধীরা। মনোবিজ্ঞানের ভাষায় এই পদ্ধতিকে বলা হয় ক্যাথারসিস। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমেরিকা ও নেদারল্যান্ডের মত দেশে এই কৌশল দারুন সাফল্য পেয়েছে।তাই এই পদ্ধতি কলকাতায় বাস্তবায়িত করার চেষ্টা হচ্ছে দ্রুত।