সংক্ষিপ্ত

আদালতে সঞ্জয় রায় বলেছেন, সে নির্দোষ! সে কিছু করেনি। যদি করত তাহলে তার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছিল। সেটি ছিঁড়ে যেত। কিন্তু তা হয়নি।

সঞ্জয় রায় (Sanjay Rot) এদিন আদালতে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে রুদ্রাক্ষ তত্ত্ব খাড়া করেছে। কিন্তু কেন? আগে কেন রুদ্রাক্ষ নিয়ে কোনও কথা বলেনি? শুরু হয়েছে জল্পনা। অন্যদিকে আরজি কর কাণ্ডের দোষী সাব্যস্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের আইনজীবী কবিতা সরকার আদালতের রায়ের পরই বিস্ফোরক মন্তব্য করেছে।

সঞ্জয় রায়ের মন্তব্য নিয়ে জল্পনা

এদিন আদালতে সঞ্জয় রায় বলেছেন, সে নির্দোষ! সে কিছু করেনি। যদি করত তাহলে তার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ছিল। সেটি ছিঁড়ে যেত। কিন্তু তা হয়নি। তবে সঞ্জয় রায়ের এই মন্তব্য নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে। অনেক আইনজীবী বলছেন, নিজেকে বাঁচাতে নতুন তত্ত্ব খাড়া করেছে। প্রথমে সে বলেছিল 'সরকার ফাঁসিয়েছে', 'বিনীত গোয়েল ফাঁসিয়েছে'। কিন্তু স্পষ্ট করে কারও নাম বলেনি। নির্যাতিতার পরিবারও একই কথা বলছে, কেন সঞ্জয় দোষী বা অভিযুক্তদের নাম এতদিন বলেনি। তদন্তকারী সূত্রের খবর সঞ্জয়কে মূলত ১০০টি প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু কখনও কখনও প্রশ্ন এড়িয়ে গেছে। কখনও আবার তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করেছে। তদন্তকারীদের একাংশের অভিযোগ সঞ্জয় তদন্তকারীদের সাহায্য করেনি।

যাইহোক সঞ্জয়ের দিদিও রায়দানের পর জানিয়েছে সে সঞ্জয়ের রুদ্রাক্ষের মালা পরার ব্যাপারে কিছু জানত না। তিনি আরও বলেছেন, আদালতের রায়কে তাঁরা চ্যালেঞ্জ জানাবেন না। তিনি আরও জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে তার ভাইয়ের সেরকম যোগাযোগ ছিল না। যদিও এই একই কথা অগস্ট মাসে সঞ্জয় রায় গ্রেফতার হওয়ার সময়ও জানিয়েছিলেন সঞ্জয়ের দিদি।

সঞ্জয়ের আইনজীবীঃ

অন্যদিকে সঞ্জয় রায়ের আইনজীবী কবিতা সরকার রায় নিয়ে রীতিমত বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন। একটি সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় তিনি বলেছেন, 'এখনও ভিসেরা রিপোর্ট আমাদের হাতে আসনি। রিপোর্ট পজিটিভ হলে প্রমাণিত হবে চিকিৎসক আগেই খুন হয়েছিল। আমার মক্কেল নির্দোষ'। তিনিও সঞ্জয়ের মতই বলেছেন তাঁর মক্কেলকে ফাঁসান হয়েছে।

শনিবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণ মামলায় সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক অনির্বাণ দাস। আরজি কর মামলায় একমাত্র অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। ঘটনার মাত্র ১৬২ দিনের মাথায় সাজা ঘোষণা করল আদালত। আরজি কর কাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল গত বছর ১১ নভেম্বর থেকে। এদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন নির্যাতিতার বাবা ও মা। এদিন রায় ঘোষণার আগেই নির্যাতিতার পরিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন। নির্যাতিতার বাবা বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী নিজে বলেছিলেন রাত ২টো পর্যন্ত জেগে মনিটর করেছিলেন। ওঁর কী ইন্টারেস্ট ছিল সেটা জানতে চাই। তথ্যপ্রমাণ যে লোপাট হয়েছে সেটা সিবিআই বলছে। শুধু সিভিক নয়, সব দোষী সামনে আসবে।' রায় ঘোষণার আগেই নির্যাতিতার পরিবার দোষীরা শাস্তি পাবে বলেও আশা করেছিলেন। তাঁরা আরও বলেছিলেন, কেউ রেয়াত পাবে না।

৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সেমিনার রুমে উদ্ধার হয়েছিল তরুণী চিকিৎসকের দেহ। প্রথমে তদন্ত শুরু করেছিল কলকাতা পুলিশ। পরে কোর্টের নির্দেশে তদন্ত শুরু করে সিবিআই। কলকাতা পুলিশই ঘটনার পরের দিনই কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছিল। এই ঘটনায় শুধুমাত্র সঞ্জয় রায়কেই প্রথম থেকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। এদিন তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। যাইহোক আরজি কর হত্যাকাণ্ডে উত্তাল হয়েছিল গোটা শহর। পরে আন্দোলনের আগুন ছড়িয়ে যায় বাংলা হয়ে গোটা দেশে। বিদেশেও আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবি উঠেছিল।

আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।