শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডক্টর প্রলয় বসু আত্মহত্যা করেছেন। তিনি মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। অভয়া আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন ডক্টর বসু।
অভয়া আন্দোলনে প্রথম সারিতে ছিলেন ডক্টর প্রলয় বসু। সে সময় তিনি বলেছিলেন, ‘কালের বিচারে পাঁচ মাস খুবই কম। কিন্তু, পাঁচ মাস যদি এক দম্পতিকে তাঁদের সন্তানদের মৃত্যুর পর অপেক্ষা করতে হয় প্রকৃত অপরাধীর সন্ধানের জন্য, সঠিক বিচারের জন্য, তখন? তখন মনে হয় কবে কাটবে এই ঘোর তমসা। সময় সত্যিই আপেক্ষিক..’।
সদ্য প্রয়াত হলেন চিকিৎসক প্রলয় বসু। বেহালার বাড়িতে গতকাল রাতে আত্মঘাতী হন চিকিৎসক। তিনি একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন। বর্তমানে কাঁটাপুকুর মর্গে, ময়না তদন্ত চলছে তাঁর। জানা যায়, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন অনেকদিন ধরে। তাঁর স্ত্রীরও চিকিৎসক। স্ত্রী জিনিয়া বসু একজন রেডিওলজিস্ট। বিগত ২ সপ্তাহ ধরে অসুস্থ ছিলেন চিকিৎসক প্রলয় বসু। দুজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শও নিয়েছিলেন। তিনি বেহালায় প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতেন। জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়িতেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। বয়স হয়েছিল ৪৯। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রলয় বসু বর্ধমান মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেছিলেন। Ramakrishna Mission Seva Pratishthan (RMSP) এবং Ramakrishna Institute of Medical Sciences (VIMS) থেকে এমডি করেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় দেহ। গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন চিকিৎসক। তাঁর দেহ কাঁটা পুকুর মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। সাড়ে তিনটের মধ্যে ময়নাতদন্ত শেষ হয়। পরিবার সরাসরি সেখান থেকে বিকেল ৪টে নাগাদ কেওড়াতলা মহাশ্মশানে নিয়ে যায় দেহ। সেখানে হয় শেষকৃত্য।
আরজিকর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনা নাড়া দিয়েছিল সারা দেশ তথা বিদেশে। সারা দেশ জুড়ে হয়েছিল আন্দোলন। সে সময় কলকাতায় গঠিত হয় অভয়া মঞ্চ। তাদের দাবি ছিল আরজিকর হাসপাতালে নির্যাতিতার ন্যায় বিচার। সে সময় হতেছিল দীর্ঘ আন্দোলন। সকল চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী এমনকী সাধারণ থেকে সেলেব সকলে যোগ দিয়েছিল আন্দোলনে। তবে, এই দীর্ঘ লড়ায়ে যে সুবিচার মিলেছে তা নয়। তেমনই দাবি অনেকের। এই অভয়া মঞ্চে দেখা গিয়েছিল ডক্টর প্রলয় বসুকে। ছিলেন মনীষা আদত, পূর্ণব্রত গুণ, তমোনাশ চৌধুরী-র মতো বহু ডাক্তার।