Kolkata Burrabazar Fire: কিছুতেই শহরে থামছে না অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। বিস্তারিত জানতে পড়ুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদন…
Kolkata Burrabazar Fire: বড়বাজারের মেছুয়াবাজারের আগুনের স্মৃতি এখনও টাটকা। ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল হোটেলে অগ্নিদ্বগ্ধ হয়ে। শহরে আবারও দেখা গেল বড়বাজারের সেই ছবিই। ফের শহরের এক হোটেলে ভয়াবহ আগুন লাগল। এবার ঘটনাস্থল দক্ষিণ কলকাতার শরৎ বোস রোডের একটি হোটেলে অগ্নিকাণ্ড। সেই সময় হোটেলে আটকে পড়েন অন্তত ৫০ জন। দমকলের ৫টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। হতাহতের কোনও খবর নেই।
জানা গিয়েছে, রবিবার রাত ১ টা নাগাদ আচমকাই হোটেলের কনফারেন্স রুমে আগুন লেগে যায়। মুহূর্তের মধ্যে কালো ধোঁয়া গোটা হোটেলকে গ্রাস করে নেয়। সেই সময় হোটেলে ছিলেন অন্তত ৫০ জন। খবর দেওয়া হয় দমকলে। তড়িঘড়ি দমকলের ৩টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তবে তা সত্ত্বেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই আরও বাড়ে দমকলের সংখ্যা। শেষমেশ দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিনের প্রায় ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এই ঘটনায় হোটেলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই। গত মে মাসে আচমকা বড়বাজারের মদন মোহন মেছুয়াবাজার ফলপট্টির একটি হোটেলে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের ১০টি ইঞ্জিন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ শুরুর চেষ্টা করেন কর্মীরা। জানা যায়, হোটেলে কমপক্ষে ৪২ টি ঘর ছিল। দমকল কর্মীদের ভিতরে প্রবেশে হিমশিম দশা হয়। প্রায় আট ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। হাইড্রোলিক ল্যাডার দিয়ে ২৫ জনকে উদ্ধার করা হয়। তবে মৃত্যু হয় ১৫ জনের। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ফের শহরের এক হোটেলে ভয়াবহ আগুন লাগল।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন বড়বাজারের মেছুয়া বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রাণ হারান ১৪ জন। মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেোপাধ্যায়। দীঘা থেকেই তিনি যাবতীয় পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন বলে জানিয়েছিলেন। কী কারনে এই অগ্নিকাণ্ড তা জানতে গঠন করা হয় ১১ সদস্যের সিট। বড়বাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় হোটেল মালিক আকাশ চাওলা ও হোটেলের ম্যানেজার গৌরভ কাপুরকে গ্রেফতার করে জোড়াসাঁকো থানার পুলিশ। দু'জনকেই ঘটনার পর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে গত ১ মে বৃহস্পতিবার তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
শহরে আগুনের ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যাবে, ২০১১ সালে কলকাতার ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ড ঘটে যায়। বেসমেন্টে শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগে যায় বলে জানা যায় তদন্তে। তাতে ৮৯ জনের মৃত্যু হয়। তার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং কর্মীদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। সেই মামলা পৌঁছয় আদালতেও। ভোররাতে ওই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সেই সময় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন প্রায় ১৬০ জন রোগী। আইসিইউ-তেই এর মধ্যে ছিলেন প্রায় ৫০ জন। এই অগ্নিকাণ্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল হাসপাতালের সামনে সরু রাস্তা এবং যানজট।
এরপরও একাধিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে শহরে। গত বছর কসবার অ্যাক্রোপলিস মল, তার আগে সূর্যসেন লেনের মার্কেট, তারও আগে স্ট্যান্ড রোড এবং শিয়ালদহ মার্কেটেও ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। শহরবাসীর মতে, প্রতিটি ঘটনার পর অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থায়ি নিয়ে পদক্ষেপের কথা বলাও হলেও বাস্তবে তা কার্যকরী হয় না কেন? তবে এখন দেখার বড়বাজারে ফের এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার জল কতদূর গড়ায়!
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


