সংক্ষিপ্ত
বৃহস্পতিবার এই ঘটনার বিরোধীতায় সরব হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কুণাল চট্টোপাধ্যায়ও।
বৃহস্পতিবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনা শহরের পাঁচ তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলের এ ব্লকের থেকে ঝাপ দেয় বাংলা বিভাগের স্নাতকের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। শঙ্কটজনক অবস্থায় তাঁকে নিকটবর্তী কেপিসি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বৃহস্পতিবার ভোরে মৃত্যু হয় স্বপ্নদীপ কুণ্ডু নামক ওই পড়ুয়ার। জানা যাচ্ছে হস্টেলে র্যাগিংয়ের জেরেই এই ঘটনা। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন পড়ুয়া থেকে অধ্যাপকরাও। বৃহস্পতিবার এই ঘটনার বিরোধীতায় সরব হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কুণাল চট্টোপাধ্যায়ও। এই প্রসঙ্গে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তিন।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় ফেসবুক পোস্টে কড়া সমালোচনা করলেন তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কুণাল চট্টোপাধ্যায়। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন,'একটি প্রথম বর্ষের ছাত্র র্যাগিংয় এর শিকার হয়ে একটু আগে মারা গেছে। আমার মনে পড়ে, র্যাগিংয় সত্যিই র্যাগিংয় কিনা, সেটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দিয়ে ঠিক করতে হবে, এই কথা বলে প্যামফ্লেট প্রকাশ করে ঐ সব কাজের ন্যায্যতা প্রমাণ করতে চাওয়া হয়েছিল। মৃত্যুর পর নিজেদের গা বাঁচানোর চেষ্টা অনেকেই করবে। যখন র্যাগিংয়, যৌন হয়রানি, জাত তুলে অপমান, এসব নিছক ইউনিয়ন দখলের রাজনীতিতে পরিণত হয়, "আমার পক্ষ" অভিযুক্ত হলে তাকে বাঁচানো প্রধান কাজ হয়, তখন এসব নিয়ে গালভরা নৈতিক কথা বলে আর লাভ নেই।'
নদিয়ার বগুলার বাসিন্দা স্বপ্নদীপ। মাত্র দুই দিন আগেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল। বুধবার রাতে মেন হোস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে যায়। দ্রুত উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাই তাঁকে কেপিসি হাসপাতালে নিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যু হয় স্বপ্নদীপের। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিনি রাত ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ হোস্টেলের নিচে ছিলেন। ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ শুনতে পান। ছুটে যান ঘটনাস্থলে। তখনই দেখতে পান স্বপ্নদীপ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। দ্রুত সেখানে প্রচুর ছাত্র উপস্থিত হয়। তারা সকলে মিলে গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রকে উদ্ধার করে। নিয়ে যায় হাসপাতালে। দ্রুত চিকিৎসাও শুরু হয়। কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাঁকে।
তবে ছাত্রটি হোস্টেলের বারান্দা থেকে কী করে পড়ে গিয়েছিল তাই নিয়ে রীতিমত ধ্বন্দ্বে পুলিশ। কারণ হোস্টেলের বারান্দা থেকে কী করে পড়ে গেল তাই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। স্বপ্নদীপকে কেউ ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে তা সে আত্মহত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে স্বপ্নদীপ প্রথম দিনের ক্লাসে উপস্থিতি না থাকার কারণও সন্ধান করেছে তদন্তকারীরা। সারা দিন কোথায় ছিল কাদের সঙ্গে ছিল তাও খতিয়ে দেখছে। স্বপ্নদীপ ব়্যাগিংএর স্বীকার কিনা তাও দেখা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। কথা বলছে মৃতের সহপাঠীদের সঙ্গে। আবাসিকদের সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তবে ক্লাস শুরুর প্রথম দিনেই এই স্বপ্নদীপের মৃত্যু নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন -
হোস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে ছাত্রের মৃত্যু, রহস্য ঘনীভূত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে
বিশ্বকাপের প্রস্তুতির মাঝেই গভীর রাতে ইডেনের সাজঘরে আগুন, ৪০ মিনিট ধরে জ্বলল সাজঘরের সামগ্রী
পাঠ্য বইয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবিতে রাজা রামমোহন রায়ের নাম! ভাইরাল পোস্ট ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক