সংক্ষিপ্ত
কলকাতার রেড রোডে নমাজ পাঠে অংশ নিলেন ইসলাম ধর্মীয় মানুষরা। শনিবার সকালে বক্তব্য রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষ্যেও বাংলার মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শনিবার ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে কলকাতার রেড রোডে আয়োজিত হল নমাজ পাঠ অনুষ্ঠান। একমাস রোজা রাখার পর পবিত্র রমজান মাসের শেষ দিনে মিলিত হয়ে খুশির ঈদে সামিল হলেন বাংলার মুসলিম মানুষজন। কলকাতার রাস্তায় সমবেত হলেন প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষ। তাঁদের অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্র সরকারের দ্বারা NRC অর্থাৎ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বলবৎ করতে চাওয়ার বিরোধিতা করে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সাধারণ মানুষের উদ্দেশে শান্তির বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা অশান্তি চাই না। শান্তি চাই। আমরা দেশকে ভাগ করতে চাই না। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে দেব। কিন্তু দেশকে ভাগ হতে দেব না। শান্তিতে থাকুন। কারও প্ররোচনামূলক কথা শুনবেন না।”
তৃণমূলের দলবদলু নেতাদের আক্রমণ হেনে এবং কেন্দ্র সরকারের আর্থিক ‘বঞ্চনা’-র বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “আমাকে গদ্দারের সঙ্গে লড়াই করতে হয়। আমাকে এজেন্সির সঙ্গে লড়াই করতে হয়। আমাকে টাকা পাওয়ার জন্য লড়াই করতে হয়। আমি লড়াই করব। কিন্তু, মাথা নত করব না।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “কিছু মানুষ বিজেপির থেকে টাকা নিয়ে বলেছিল ওরা বলেছিল মুসলিম ভোট ভেঙে দেবে। আমরা বলেছিলাম, ‘হিম্মত থাকলে ভেঙে দেখাও।’ এক বছরে দেশের সরকার নির্বাচনের জন্য ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ফ্যায়সলা করুন। ২৪-এর নির্বাচনে যাঁরা বাইরে রয়েছে তাঁদেরও ভোটদানের জন্য আহ্বান করছি। ভোটদান করুন। কারণ, গণতন্ত্র চলে গেলে সব চলে যাবে।”
NRC প্রসঙ্গ উত্থাপন করে তাঁর হুঁশিয়ারি, “কোনওভাবেই NRC হতে দেব না। স্পষ্ট বলে দিয়েছি। ভরসা রাখুন। আমরা লড়াই করব। আমরা সাহসের সঙ্গে কাজ করব। ভয় পাব না।” যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ এবং বিজেপি শাসিত গুজরাটে সংখ্যালঘুদের পরিণতির প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, “বাংলা উত্তরপ্রদেশ নয়। সেখানে সবসময় মারধর করা হয়। বিলকিসের ঘটনায় সকলকে ছেড়ে দিল। আল্লাহর কাছে আবেদন, ওদের দাদাগিরি বন্ধ করুন।”
মুখ্যমন্ত্রীর মতোই সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “আমাদের বাংলার এটাই বিশেষত্ব যে, আমাদের সকলের মধ্যে সৌভ্রাতৃত্ববোধ এতটাই, যে কোনও উৎসব একসঙ্গে পালন করি। ইদ, দুর্গাপুজো বা ক্রিসমাস কোথাও কোনও ভাগাভাগি নেই। দেশের আর কোথাও এই ছবি দেখতে পাবেন না। এটাই বাংলাকে সকলের থেকে আলাদা করে রাখে। যে চাঁদ দেখে আপনারা ঈদ পালন করেন, তার কি কোনও ধর্ম আছে? হিন্দুদের পরবও তো চাঁদ দেখে হয়, তার কোনও ধর্ম হয় না। শরীরে যে রক্ত বইছে, তার কোনও ধর্ম হয় না। চাঁদ, সূর্য, গাছপালা, পাখিদের কলরবের কোনও ধর্ম হয় না।”
তবে, ঈদ উৎসবের পাশাপাশি বাংলার মানুষকে হিন্দু ধর্মের উৎসব অক্ষয় তৃতীয়া উপলক্ষ্যেও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো ও দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক, উভয়েই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “সকলের মঙ্গল কামনায় ব্রতী হয়ে আজ পরমেশ্বরের কাছে প্রার্থনা নিবেদন করছি যে, সকল ভেদাভেদ, সকল আসুরিক শক্তির বিনাশ হয়ে আপনারা সবাই নির্মল আনন্দে জীবন যাপন করুন। আজকের দিনটি হলো আমাদের সম্প্রীতি এবং ঐক্যের দিন। বছরের প্রত্যেকটি দিন যেন আপনাদের শুভ হোক এই কামনা আমার। আপনারা সকলে ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।”
আরও পড়ুন-
বঙ্গে তাপমাত্রার পারদ কিছুটা কমলেও নেট দুনিয়ায় লাস্যের পারদ চড়িয়েছেন অভিনেত্রী ত্রিধা চৌধুরী
Eid Mubarak: রোজা রাখার নিয়ম সম্পর্কে অবগত নন অনেক মানুষই, জানেন কি ইফতার কেন ‘পার্টি’ নয়?
Ram Navami 2023: রাম নবমীতে হওয়া অশান্তির দায় কার? বাংলাকে চিঠি পাঠাল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন