সংক্ষিপ্ত
সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ডিন অব স্টুডেন্টের অফিসের বাইরে চলল ছাত্রছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ। শুধু তাই নয়, ডিন অব স্টুডেন্টস-এর হাতে তুলে দেওয়া হল ভালোবাসার রক্তিম গোলাপের তোড়া। চলল প্রেমের গানও।
'বিদ্রোহ আর চুমুর দিব্যি...', প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়ালজুড়ে এখন স্পর্ধার চিহ্ন। 'ভালোবাসার অধিকারের' দাবিতে পড়ুয়াদের প্রতিবাদের ভাষা হয়ে দাঁড়াল রক্ত গোলাপ আর প্রেমের গান। সোমবার দিনভর এমনই দৃশ্য দেখা গেল বিশ্ববিদ্যালয়। 'প্রেমহীন' ক্যাম্পস মুখর হয়ে রইল প্রেমের স্লোগানে, গান, কবিতায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভালোবাসা বিরোধী অবস্থানের বিরোধিতায় একেবারে অন্য ধাঁচের আন্দোলনে নামল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ডিন অব স্টুডেন্টেস-এর অফিসের বাইরে চলল ছাত্রছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ। শুধু তাই নয়, ডিন অব স্টুডেন্টেস-এর হাতে তুলে দেওয়া হল ভালোবাসার রক্তিম গোলাপ। চলল প্রেমের গানও।
অন্যদিকে এই দিনই ফের নতুন করে 'ফতোয়া' জারির অভিযোগ ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এবার হোস্টেলে ছাত্রছাত্রীদের অবাধ চলাফেরার ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই মর্মে সোমবার কমিটির রুদ্ধদ্বার বৈঠকও চলেছে বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে। পড়ুয়াদের অভিযোগ বিশেষত মেয়েদের হোস্টেলে ঢোকা এবং বেরোনো নিয়ে নানাবিধ নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি, স্লাটশেমিং এমনকী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অছিলায় অন্যায়ভাবে ডিসিপ্লিনারি কমিটি বসানো হচ্ছে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের গার্লস হোস্টেলের পড়ুয়াদের বিবৃতি থেকে জানা যাচ্ছে সম্প্রতি রাতে হোস্টেলে ফিরতে দেরি হওয়ায় অঙ্কিতা সরকার নামে এক পড়ুয়াকে হোস্টেল পর্যন্ত ছাড়তে এসেছিল তাঁর দুই বন্ধু আসরফ আলি ও সেখ সাহিদুল। রাতে গার্লস হোস্টেলে ছেলেরা কেন পৌঁছে দেবে, এ জাতীয় অভিযোগে অঙ্কিতা সরকারের বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি কমিটি বসায় কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল ডিন অব স্টুডেন্টস-এর অফিসের বাইরে জমায়েত করেন ছাত্রছাত্রীরা। প্রতিবাদ চলাকালীন গার্লস হোস্টেলের সুপার ড. পারমিতা সাহার দ্বারা আহত হন অভিনন্দা ঘটক নামের এক পড়ুয়া। ঘটনা ঘিরে ফের উত্তেজিত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর।
অপরদিকে চাপের মুখে নিজেদের অবস্থান থেকে খানিকটা হলেও সরতে বাধ্য হয়েছে কতৃপক্ষ। দিনভর প্রতিবাদের পর বিকেলে পড়ুয়াদের মুখোমুখি হয়ে ডিন অফ স্টুডেন্টস জানালেন কোড অফ কনডাক্টের কোনও নতুন নিয়ম এক্ষুনি লাগু করা হচ্ছে না। নতুন প্রস্তাবগুলি আপাতত বিবেচনাধীন। একটি কাগজে লিখিত আকারে কর্তৃপক্ষ অস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। তবে কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপ মূলত আন্দোলন দমনের একটি পন্থা বলেই দাবি করছেন প্রতিবাদী ছাত্রছাত্রীরা। ফলত কর্তৃপক্ষের কোনও রকমের ‘আলগা, ছেলেভোলানো’ প্রতিশ্রুতিতে আন্দোলন থামাতে নারাজ পড়ুয়ারা। যতক্ষণ পর্যন্ত ছাত্রবিরোধী 'অগণতান্ত্রিক' আচরণবিধির নির্দেশিকা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা না হবে এবং ইতিমধ্যেই 'অগণতান্ত্রিক'ভাবে অভিযুক্ত পড়ুয়াদের বিনা শর্তে ছাড়পত্র না দেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ আন্দোলন চলবে বলেই জানাচ্ছেন পড়ুয়ারা।