সংক্ষিপ্ত
'বেশ কিছুদিন ধরেই এই ডিসি বসানো, ডেকে এনে চমকানো এগুলো চলছিল, গতকাল এই কোড অফ কনডাক্ট আগুনে ঘি ঢেলেছে।'
ক্যাম্পাসে প্রেম করলেই 'ধরপাকড়', ডেকে পাঠানো হচ্ছে অভিভাবকদের, এমনই 'নীতিপুলিশি'র অভিযোগ উঠল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কোনও যুগলকে নিভৃতে সময় কাটাতে দেখা গেলেই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে কতৃপক্ষের তরফে। পড়ুয়াদের ‘ভয় দেখানো’তেই শেষ নয় ডেকে পাঠানো হচ্ছে তাঁদের অভিভাবকদেরও। গত শুক্রবার এই অভিযোগ-সহ আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া হয় ডিন অফ স্টুডেন্টস অরুণ মাইতিকে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ক্যাম্পাসে এহেন ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে শহরজুড়ে। শেষে কী না শিক্ষাঙ্গনে নীতিপুলিশি! ঘটনায় বিস্মিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীরাও। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে কতৃপক্ষ।
এখন প্রশ্ন প্রেসিডেন্সির লাভার্স লেন কি তবে সত্যিই প্রেমহীন হবে? এবিষয় বিস্তারিত জানতে এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সৌরভ জানিয়েছেন গোটা ঘটনার সূত্রপাত হয় মাস কয়েক আগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৌচালয় শ্রুতি বসু নামক এক ছাত্রীর ভিডিও করার অভিযোগ ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল ক্যাম্পাস। এই ঘটনার পরই নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবিতে সরব হয় পড়ুয়ারা। চাপের মুখে অভিযুক্ত ছাত্রকে বহিষ্কারও করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গোটা ঘটনা ঘুরে যায় কিছুদিনের মধ্যেই। সৌরভের কথায়, 'আমরা বুঝতে পারিনি রাস্টিকেট করাটাই ছিল শুরু।' তাঁর অভিযোগ নিরাপত্তা বৃদ্ধির অছিলায় 'নীতিপুলিশি' শুরু করে কর্তৃপক্ষ। গত দু'মাসে বেশ কয়েকজনের উপর ডিসি বসানো হয়েছে এবং প্রতি ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্পষ্ট বলে দাবি করেছেন তিনি। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অজুহাতে পড়ুয়াদের ডেকে 'ভয় দেখানো হচ্ছে' বলেও অভিযোগ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তনীর।
এখানেই শেষ নয়, যে কোনও রকমের মিটিং, মিছিলের ক্ষেত্রেও ছাত্রছাত্রীদের কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে বলে 'ফতোয়া' জারির অভিযোগ তুলেছেন সৌরভ। এছাড়া ক্যাম্পাসের কোনও ঘটনায় সংবাদমাধ্যমকে জড়ানো যাবে না, পরীক্ষাবিধির নামে একগুচ্ছ নিয়মাবলি, ক্যাম্পাসে ধুমপানও নিষিদ্ধ করার মত হাজারও নির্দেশ জারি করা হয়েছে। উল্লেখ্য সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের হাতে দেওয়া হয়েছে 'কোড অফ কনডাক্ট'। সৌরভের বক্তব্য,'বেশ কিছুদিন ধরেই এই ডিসি বসানো, ডেকে এনে চমকানো এগুলো চলছিল, গতকাল এই কোড অফ কনডাক্ট আগুনে ঘি ঢেলেছে।' তাঁর আরও অভিযোগ শ্রুতি বসুর ঘটনা এবং সেটাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন ঘটনাকে পাশাপাশি বসিয়ে এক ধরনের দমনমূলক নীতি নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নয়া আচরণবিধির মাধ্যমে মূলত এই নীতিতে লিখিতভাবে সিলমোহর বসানওই কতৃপক্ষের উদ্দেশ বলে দাবি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনীর।