প্রাথমিকে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। বর্তমানে তিনি বিজেপির সাংসদ।
২০১৪ সালের টেট বাতিল না করে কেন ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হল? প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় প্রশ্ন উঠল কলকাতা হাইকোর্টে। এই প্রশ্ন তুললেন চাকরিহারাদের আইনজীবী অনিন্দ্য মিত্র। তাঁর বক্তব্য হল, ২০১৬ সালের যে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হয়েছে , তাতে দুর্নীতির কোনও অভিযোগ নেই। মামলাকারীরাও অভিযোগ তেননি। কেবল নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষা, যার ভিত্তিতে ২০১৬ সালের ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়। কেন সম্পূর্ণ টেট পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হল না? নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হল না কেন? তবে তিনি দাবি করেছেন, টেট দুর্নীতির অভিযোগগুলির কোনও ভিত্তি নেই।
প্রাথমিকে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। বর্তমানে তিনি বিজেপির সাংসদ। তাঁর একক বেঞ্চের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য। সেই মামলার শুনানি এদিন চলছে। শুনানি হচ্ছে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের বেঞ্চে।
২০২৩ সালে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের ফলে প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছিল। বিচারপতি তখন একটি পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিলেন ন্যায় বিচার আইনেরও উর্ধ্বে। সিঙ্হল বেঞ্চের সেই পর্যবেক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন চকরিহারাদের আইনজীবী। তাঁর প্রশ্ন, আইন ছাড়া কী ভাবে ন্যায় বিচার দেওয়া সম্ভব। তিনি আরও বলেন, এই নিয়েদে আইনের শাসন মৌলিক কঠামোর অংশ। আইন না মেনে রায় কী করে দেওয়া যায়।
চাকরিহারাদের আইনজীবী সওয়ালে পাল্টা বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, 'এগুলো এখন কেন বলছেন? তখন কেন চ্যালেঞ্জ করেননি?' পাল্টা আইনজীবী বলেন, ৪২ হাজার ৯৪৯ জন শিক্ষকের মধ্যে রায়ে প্রথমে ৩৬ হাজার চাকরি বাতিলের কথা বলা হয়েছিল। পরে মামলাকারীরা জানান, ৩৬ নয়, সংখ্যাটি ৩২ হাজার হবে। সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতিও সেটাই করে দেন। জানিয়ে দেন, সংখ্যা ‘টাইপ’ করতে ভুল হয়েছে। অভিযোগ, মামলাকারীদের দেওয়া তথ্যই লিখে দিয়েছেন বিচারপতি। যাচাই করে দেখেননি। হাই কোর্টে এই সংক্রান্ত শুনানি এখনও শেষ হয়নি। আগামী সোমবার আবার এই মামলা শুনবে ডিভিশন বেঞ্চ।


