সংক্ষিপ্ত
অভয়া মৃত্যুর এত দিন পর, তার বাবা-মা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা দাবি করেছেন একটি "অদৃশ্য হাত" ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রীরও এই ঘটনায় দায় রয়েছে।
আরজি কর কাণ্ডের ১৬২ দিন পার। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে ৬২ দিন হয়ে গিয়েছে। তাতেও হল না সুরাহা। এবার শুনানির আগে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন অভায়ার মা ও বাবা। এক সাক্ষাৎকারে অভার মা বলেন, মেয়ের মৃত্যুর সময় থেকে দেখছি যারা ক্রাইম করছে তাদের কোনও ভয় নেই। একটা অদৃশ্য হাত আছে তাদের মাথায়। সেই হাতটা আমরা বের করতে চাই।…আমার মেয়ে চলে গেলে সেই বিষয়টা ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। এতে একটা অদৃশ্য হাত আছে এর পিছনে। আমি মনে করি সেই হাত মুখ্যমন্ত্রীর।
তেমনই অভয়ার বাবা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে তাঁকে এই ঘটনার দায় নিতে বলেন। তিনি বলেন, সবাই জানে এই বিষয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রী যিনি তিনিও জানেন। স্পষ্ট করে বলব? তিনি আমাদের মুখ্যমন্ত্রী। ফেসবুকে একটা পোস্ট ছড়িয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে ‘রাজ্য চায়নি তাই মেয়েটা বিচার পায়নি’। মানুষ এমনি এমনি পোস্ট তৈরি করেনি। আমার মেয়ে কর্মরত অবস্থায় খুন হয়েছে। এতে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দায় আছে। প্রতিষ্ঠানে যে খুন হয়েছে তার দায় তাঁকে নিতে হবে। ঘটনার দিন রাত ২ টো পর্যন্ত উনি জেগে সব মনিটারিং করেছে। আমার যখন সেখানে পৌঁছাই সেখানে গিয়ে সিপি এবং এসিপি দেখেছি। লোকাল এমএলএ-ও ছিল। আমাদের সঙ্গে কোনও কথা বলেনি। তাদের সঙ্গে দেড় ঘন্টা মিটিং করেছে। ৯ তারিখ যুবলি বিল্ডিং-এ মিটিং করেছে।
তিনি আরও বলেন, সিবিআই-কে মামলার দায়িত্ব দিল উনি সঙ্গে সঙ্গে বললেন সিবিআইকে সব জলে ফেলে দিল। সব তথ্য তিনি আগেই নষ্ট করে দিয়েছে। সদ্য এক রিপোর্ট তৈরি করেছেন যাতে বলা হয়েছে একজনের পক্ষে একটা করা সম্ভব নয়। আমরা তারই বিচার চাই। হাইকোর্টে মামলা করেছি আমরা। আমরা ৫২টি প্রশ্ন রেখেছি। কার উত্তর তাই।
এরই সঙ্গে স্যালাইন কান্ড নিয়ে মন্তব্য করেন অভয়ার বাবা। তিনি বলেন, স্যালাইন কান্ডের মতো আরজি করেও ওষুধের এফেক্টে রোগী মারা যায়। আমার মেয়ে দেড় বছর ওখানে ছিল। আমরা অনেক ঘটনা শুনেছি। একসঙ্গে অনেকে অসুস্থ তাই এই বিষয় আপনাদের নজরে এসেছে। আমার মেয়ের মৃত্যুর পর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর লোকের সন্দেহ বেড়েছে।
১৮ তারিখ রায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে রায় হবে তাতে আপনার ন্যায়বিচারের প্রথমসিঁড়িতে উঠব। অনেকে সাক্ষ্মী দিয়েছে। বিচারপতি যা ঠিক বুঝবেন করবেন। তিনি আরও বলেন যে তাঁরা চান হাইকোর্টে মামলা হোক আমরা চাই। এতে নিজেরা উপস্থিত থাকতে পারবেন। সকলেই উপস্থিত থাকবে হাইকোর্টে মামলা হলে।
অভয়ার বাবা আরও দাবি করেন যে তাঁর মেয়ের ডিএনএ রিপোর্ট ভাইরাল হয়েছে। সকলেই জানে এই কাণ্ড একজনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। তিনি সেই সত্যতা জানতে চান।
তাঁর সন্দেহ চেষ্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্টকে। কারণ ঘটনার কয় ঘন্টার মধ্যে সেখানে বাথরুম ভেঙে ফেলা হয় তার জন্য চেষ্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্ট ৩০ জন সই করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, মেয়ের যে মৃত্যু হয়েছে সকলে বিষয়টা আড়াল করার চেষ্টা করেছে। প্রিন্সিপাল, স্বাস্থ্যসচিব সকলে অবহেলা করেছে। কেউ এফআইআর পর্যন্ত করেনি। তাঁরা মনে করেনি, ১৮ তারিখ রায় দানের পর কেস ধামাচাপা পড়তে দেবেন না। সঠিক বিচার বের করেই থামবেন তাঁরা।