সংক্ষিপ্ত
শনিবার আলিপুর আদালতে শোভন ও রত্নার বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা উঠেছিল শুনানির জন্য। সেই সময়ই ভরা আদালত চত্ত্বরের মধ্যেই বচসায় জড়িয়ে পড়েন শোভন রত্না। চুপ ছিলেন বৈশাখী।
আবারও প্রকাশ্যের বচসায় জড়ালের শোভন চট্টোপাধ্য়ায় ও রত্না চট্টোপাধ্যায়। আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা চলাকালীনই দুজনে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। তবে এবার আর তাদের মধ্যে কোনও রকম হস্তক্ষেপ করলেন না শোভনের বান্ধবী বৈশাখী। নীরব দর্শকের ভূমিকাই পালন করে গেলেব।
শনিবার আলিপুর আদালতে শোভন ও রত্নার বিবাহ বিচ্ছেদ মামলা উঠেছিল শুনানির জন্য। নির্ধারিত সময়ই শোভন চট্টোপাধ্য়ায় আদালতে হাজিরা দেন। সঙ্গে ছিলেন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্য়ায়। অন্যদিকে এদিন মামলার শুনানি অংশ নিতে এসেছিলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়ও। আদালতে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময় শোভন আর রত্না মুখোমুখি হতেই বচসায় জড়িয়ে পড়েন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি প্রথম দিকে শোভন-রত্নার কথাবার্তা ছিল সাধারণ। কিন্তু ধীরে ধীরে তা চরম আকার নেয়। আদালতের মধ্যেই দুজনে বচসায় জড়িয়ে পড়েন। পরস্পরকে আক্রমণ করতে থাকেন। শোভন ও রত্না একে অপরের বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখল করে রাখার অভিযোগও তোলেন। শোভন বলেন রত্না ও তাঁর পরিবার তাঁর প্রচুর সম্পত্তি দখল করে রেখেছে। পাল্টা রত্না অভিযোগ করেন শোভন বৈশাখী গোলপার্কের যে ফ্ল্যাটে রয়েছেন সেটি তাঁর দাদা শুভাশিষ দাসের নামে রয়েছে এখনও।
সম্পত্তি ছাড়াও ব্যক্তিগত বিষয়ও একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন শোভন - রত্না। তাদের সুর এতটাই চড়তে শুরু করে যে আদালত চত্ত্বরে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা এগিয়ে আসেন। দুজনকে থামানোর চেষ্টা করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত আইনজীবী জানিয়েছেন পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল যে দুজনকে থামানো কষ্টকর হচ্ছিল। শেষপর্যন্ত দুই জনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে নিজের বেহালার পর্ণশ্রীর বাড়ি ছেড়ে গোলপার্কে থাকতে শুরু করেছিলেন তৎকালীন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেইসময় কানাঘুষো ছিল পারিবারিক বিবাদের কারণেই শোভন ঘর ছেড়েছেন। তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বসে গেছে। শোভনের জীবনে পাকাপাকিভাবে একটা জায়গা দখল করে নিয়েছেন বৈশাখী। অনেক দূরে সরে গিয়েছেন রত্না। যদিও শোভেনের অভিযোগ রয়েছে রত্নারও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। আর সেই কারণেই তিনি বাড়ি ছেড়েছেন। দল ছেড়েছেন। মন্ত্রিত্বও ছেড়েছেন। ছেড়েছেন কলকাতার মেয়র পদ। মাঝখানে বিজেপিতে যোগ দিলেও কোনও দিনই তেমন সক্রিয় ছিলেন না। মাঝে তৃণমূলের নেতাদেরও আশায়াওয়া বেড়েছিল। কিন্তু বর্তমানে রাজনীতি থেকে অনেক দূরে বৈশাখীকে ঘিরেই তাঁর সুখীগৃহকোন। অন্যদিকে নিজেকে বিধায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন রত্না। মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজনদের মধ্যে একজন তিনি। শোভেনের ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিরেরও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। মোটকথা শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের ছেড়ে যাওয়া রাজপাট এখন তারই হাতে।