সংক্ষিপ্ত
কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, পরের তিন মাসের মধ্যে সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে রাজ্য সরকারকে। যার জেরে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দিতে হবে।
ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুযায়ী কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ-র তফাত এখন ৩৫ শতাংশ। দিন দিন ফারাক বাড়ছে। অথচ বকেয়া দিচ্ছে না রাজ্য। ডিএ নিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজাও। এদিন রাজ্য বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়ে দিলেন মার্চ থেকেই বর্ধিত হারে মিলবে ডিএ। পেনশনভোগীরাও বর্ধিত হারে ডিএ পাবেন। তিন শতাংশ বাড়ানো হল ডিএ। রাজ্য বাজেটে ঘোষণা অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের দাবি অনুযায়ী, ডিএ-র ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। কেন্দ্রীয় সরকার তাদের কর্মীদের জন্য আরও ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করতে পারে শীঘ্রই। সেটা হলে নতুন ব্যবস্থায় কেন্দ্রের সঙ্গে বাংলার ডিএ-র ব্যবধান বেড়ে হবে ৩৯ শতাংশ। এই বকেয়া ডিএ-র দাবিতে শহিদ মিনারে দীর্ঘ দিন ধরে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ। তবে বুধবারের ঘোষণার পরে বর্তমান বকেয়া রইল ৩২ শতাংশ।
উল্লেখ্য দীর্ঘদিন ধরেই বকেয়া ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন সরকারি কর্মচারীরা। মামলা ওঠে সুপ্রিম কোর্টেও। ১৪ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, নয়া বছরের জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে শীর্ষ আদালতে নয়া বেঞ্চ গঠন করে ডিএ মামলার শুনানি হবে। কিন্তু সেদিন ডিএ মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত (বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরীর পরিবর্তে ওই বেঞ্চে বিচারপতি দত্ত আসেন। সেদিন বিচারপতি দত্ত জানান, বিচারপতি মাহেশ্বরীর জায়গায় ডিএ মামলার বেঞ্চে তিনি আসার পরই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে অতি উৎসাহের সঞ্চার হয়েছিল। তাই সেই মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান বিচারপতি দত্ত।
রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়েছে, কলকাতা হাই কোর্টের রায় মেনে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ দিতে হলে খরচ হবে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা। প্রসঙ্গত, কলকাতা হাই কোর্টের ডিএ-রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। ২০ মে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, পরের তিন মাসের মধ্যে সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে রাজ্য সরকারকে। যার জেরে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দিতে হবে। কিন্তু সেই সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ডিএ না-দেওয়ায় হাই কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও রাজ্য ধাক্কা খাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল।
আগামী ১৫ মার্চ মামলাটির পরবর্তী শুনানি। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর মামলাটি প্রথম বার শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টে ওঠে। পরে শুনানির দিন পিছিয়ে ১৪ ডিসেম্বর করা হয়। পাশাপাশি, এই মামলা শুনানির জন্য নতুন করে ডিভিশন বেঞ্চও গঠিত হয়।