সংক্ষিপ্ত
ডিএ-র দাবিতে একযোগে বিধানসভা অভিযানে পথে নামে ২৭টি বাম সংগঠন। সেই সংগঠনের সদ্যদের ওপর চলল পুলিশের লাঠিচার্জ। বিধানসভা অভিযানের শুরুতেই ধর্মতলায় কার্যত ধুন্ধমার পরিস্থিতি দেখা গেল।
কেন্দ্রের সম-হারে ডিএ থেকে বঞ্চিত কেন রাজ্যের সরকারি কর্মচারিরা। এই প্রশ্ন ও দাবি দীর্ঘদিনের। বুধবার সেই দাবি নিয়েই পথে নেমেছিলেন তাঁরা। বিধানসভা অভিযানের ডাক দিয়ে পথে নামতেই ঘটল বিপত্তি। পুলিশের সঙ্গে কার্যত হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন তাঁরা। এই ঘটনা ঘিরে রীতিমত উত্তেজনা ছড়াল বিধানসভার সাউথ গেটের বাইরে।
ডিএ-র দাবিতে একযোগে বিধানসভা অভিযানে পথে নামে ২৭টি বাম সংগঠন। সেই সংগঠনের সদ্যদের ওপর চলল পুলিশের লাঠিচার্জ। বিধানসভা অভিযানের শুরুতেই ধর্মতলায় কার্যত ধুন্ধমার পরিস্থিতি দেখা গেল। আন্দোলনকারীদের আটকাতে আগে থেকেই বড়সড় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল পুলিশ। ধর্মতলায় ঢেকে গিয়েছিল ব্যারিকেডে। ব্যারিকেড ভাঙার প্রস্তুতি নিয়েই পথে নেমেছিলেন আন্দোলনকারীরা।
কিন্তু, ধর্মতলায় লেনিন মূর্তির সামনে যেতেই পথ আটকায় পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় আন্দোলনকারীদের। লোহার গার্ডরেল দিয়ে পুলিশের তরফে যে ব্যারিকেড করা হয়েছিল তা ভেঙে ফেলেন আন্দোলনকারীরা। এরপর অ্যালুমিনিয়ামের গার্ডরেল দিয়ে করা ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে গেলে রানি রাসমনি রোডের সামনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ব্যাপক ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় পুলিশের সঙ্গে। বয়স্কদেরও ছাড়া হয়নি বলে অভিযোগ। মারের চোটে মাথা ফেটে যায় দু একজনের। এমনকী পেটে ঘুঁষি মেরে আহত করার অভিযোগও উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
এই আন্দোলনে ছিলেন সরকারি চিকিৎসক, সরকারি কর্মী, শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। কৃষক সংগঠন থেকে শুরু করে রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটা বড় অংশকে এদিনের মিছিলে দেখতে পাওয়া যায়। বিধানসভা অভিযানের শুরুতেই ধর্মতলায় কার্যত ধুন্ধমার পরিস্থিতি দেখা গেল। বিধানসভার সামনে পুলিশি ধরপাকড় চলে। পুলিশি বর্বরতার অভিযোগ তোলেন আন্দোলনকারীরা। বুধবার ১৪৪ ধারা এলাকায় মিছিল পৌঁছতেই শুরু হয় ঝামেলা।
উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার আর রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে ডিএ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই বিবাদ চলছে। মামলাও হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে ডিএ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ডিএ পায়নি রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারও প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। পাল্টা রাজ্য সরকারের কর্মীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে।
পঞ্চম বেতন কমিশন অনুযায়ী, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের DA-র ফারাক ছিল ৩৪ শতাংশ। ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুযায়ী সেই ব্যবধান বেড়ে হয় ৩৫ শতাংশ। পঞ্চম বেতন কমিশন অনুযায়ী যে ৩৪ শতাংশ DA-র ফারাক ছিল, তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় গত ২০ মে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, ৩ মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া DA মেটাতে হবে। রাজ্য সরকার রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানালেও ২২ সেপ্টেম্বর তা খারিজ করে দেয় আদালত।