তালতলা ডাক্তার লেনস্থ সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি তাদের ৭৭তম বর্ষে 'ঠাকুর ঘরের গল্প' থিমের মাধ্যমে বাঙালির পুরনো ঐতিহ্যকে তুলে ধরেছে। যামিনী রায়ের চিত্রকলা এবং প্রদীপ, ঘটের মতো ঠাকুর ঘরের সরঞ্জাম দিয়ে সাজানো এই মণ্ডপ। 

বর্তমানে আধুনিক আসবাবপত্র দ্বারা সু-সজ্জিত ফ্ল্যাটে থাকতে অধিকাংশই অভ্যস্ত। দামি দামি আসবাব দিয়ে সাজানো অনেক ফ্ল্যাটে দেব-দেবীর জন্য বরাদ্দ থাকে ঘরের কোণায় অবস্থিত সিংহাসন। কিংবা কারও বাড়িতে একটি সুন্দর নকশা করে তাকেই স্থান পান সকল দেব-দেবী। কিন্তু, অতীতে এই চল ছিল না। সে যুগে বাড়ির কর্তারা গৃহ নির্মানের সময় দেব-দেবীর জন্য আলাদা ঘর তৈরি করতেন। কিন্তু, আধুনিক যুগে কোথাও যেন হারিয়ে যেতে চলেছে সেই ‘ঠাকুর ঘর’। এবার সেই পুরনো ঐতিহ্যকে বঙ্গবাসীর কাছে তুলে ধরতে চলেছেন ‘তালতলা ডাক্তার লেনস্থ সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি’-র সদস্যরা। তাদের থিম ‘ঠাকুর ঘরের গল্প’। এই ভাবনা উপস্থাপনার দায়ভার বাবিন ও রূপসার কাঁধে। তেমনই এবারের পুজোয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন পুজোর প্রেসিডেন্ট জয়ন্ত সাহা ও সেক্রেটারি অর্ণব দত্ত।

দেবী দুর্গার আরাধনা করতে একেবার অন্যরকম ভাবনায় প্যান্ডেল সজ্জা করেছেন তাঁরা। এবার ৭৭ বছরে পা দিল এই ‘তালতলা ডাক্তার লেনস্থ সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি’-র পুজো। এবছর প্যান্ডের সমস্ত অন্দর সজ্জায় অংশ নিয়েছেন পাড়ার মহিলারা। নিজেরা হাতে করে সাজিয়েছেন মণ্ডপ। চিত্র শিল্পী যামিনী রায়ের আঁকা ব্যবহার করা হয়েছে মণ্ডপ সজ্জায়। তেমনই প্রদীপ, ঘট, বাসন, পাখার মতো বিভিন্ন ঠাকুর ঘরের সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি করা হয়েছে পুজো প্যান্ডেল। প্রতি বছরের মতো এবারও দর্শনার্থীদের জন্য বিস্তর চমক নিয়ে অপেক্ষা করছে ‘তালতলা ডাক্তার লেনস্থ সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি’ দ্বারা আয়োজিত তালতলা মিত্রবৃন্দের পুজো।

তবে, প্রতি বছর শুধু দেবী বন্দনা নয়। এই পুজো কমিটির সদস্যরা সারা বছর করে থাকেন একাধিক সমাজ সেবামূলক কাজ। রক্তদান শিবির, বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা থেকে শুরু করে দুঃস্থ বাচ্চাদের আহারের ব্যবস্থা করে থাকেন এরা। সারা বছর এই ক্লাবের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। সব মিলিয়ে কমিটির সদস্যরা প্রতি নিয়ত নিয়ে চলেছেন নতুন নতুন প্রয়াস।

এবছর পুজো উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর ইন্দ্রানী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায় ও এমএলএ নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়। তেমনই এবার এই পুজোয় নিজের নতুন অ্যালবামের প্রোমোশনের জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন টলি তারকা মনামি।