সংক্ষিপ্ত

কুণাল ঘোষ এদিন আরও বলেন এটাই বিজেপির সংস্কৃতি। তৃণমূল এই মানসিকতাকেই বহিরাগত বলে ব্যাখ্যা করে। তাঁর কটাক্ষ বাঙালির আবেগে আঘাত করেছেন পরেশ রাওয়াল তথা বিজেপি।

বাঙালিদের মাছ বিতর্কে আপাতত জর্জরিত অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। এবার পরেশ রাওয়ালের এই বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে সরব হল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ও রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা এই নিয়ে কটাক্ষ করেছেন। রীতিমত ব্যঙ্গ করে কবিতা বানিয়ে পরেশ রাওয়ালকে বিঁধেছেন কুণাল ঘোষ। তিনি বলেছেন মোহনবাগানের চিংড়ি আর ইস্টবেঙ্গলের ইলিশ/ মাছ নিয়ে বলতে এলে করে দেব পালিশ।

কুণাল ঘোষ এদিন আরও বলেন এটাই বিজেপির সংস্কৃতি। তৃণমূল এই মানসিকতাকেই বহিরাগত বলে ব্যাখ্যা করে। তাঁর কটাক্ষ বাঙালির আবেগে আঘাত করেছেন পরেশ রাওয়াল তথা বিজেপি। এই মানসিকতা নিয়ে বাংলা জয় করতে চান তাঁরা। এবার কী বলবেন সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা, প্রশ্ন তাঁর।

এরই সঙ্গে বক্তব্য রাখতে দেখা যায় রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজাকেও। তিনি বলেন এভাবে কোনও বিশেষ জাতির ভাবাবেগকে ক্ষুণ্ণ করার অধিকার নেই কারোর। তৃণমূল কংগ্রেস এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। মনে হচ্ছে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল এখনও মেনে নিতে পারেনি বিজেপি। সেই হারের জ্বালা ভুলতেই এভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে বাঙালিকে।

উল্লেখ্য, অভিনেতা থেকে রাজনীতিবিদ পরেশ রাওয়াল তাঁর রোহিঙ্গা-বাংলাদেশি ও বাঙালি বিতর্কে তীব্রভাবে সমালোচিত হচ্ছেন। গুজরাট নির্বাচনের মাঝামাঝি এই সময়ে তাঁর একটি ভিডিও সামনে এসেছে, যার জন্য তাকে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গুজরাটের প্রথম ধাপের নির্বাচনের ঠিক আগে, পরেশ রাওয়াল তার দল বিজেপির প্রচারে এসেছিলেন, যেখানে তিনি একটি জনসভায় ভাষণ দেন। এই ভাষণের কিছু অংশ থেকে শুরু হয় প্রবল বিতর্ক। বিজেপির হয়ে যাওয়া প্রচার সভায় পরেশ বলেন, মুদ্রাস্ফীতি সহ্য করতে পারবেন গুজরাটের মানুষ, কিন্তু যদি পাশের বাড়িতে রোহিঙ্গা কিংবা বাংলাদেশীরা এসে উপস্থিত হন? তারপরেই পরেশ বলে বসেন, "তখন গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে কী করবেন, বাঙালিদের জন্য মাছ ভাজবেন?

গুজরাটের ভালসাদে, পরেশ রাওয়াল গুজরাটি ভাষায় জনগণকে ভাষণ দেন। যেখানে দামি গ্যাস সিলিন্ডারের দাবি ও চাকরির বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। এ সময় পরেশ রাওয়াল বলেন, "গ্যাস সিলিন্ডার দামি হলেও সস্তা হয়ে যাবে। মানুষও কর্মসংস্থান পাবে, কিন্তু রোহিঙ্গা মুসলমান ও বাংলাদেশীরা যখন আপনার আশেপাশে থাকতে শুরু করবে তখন কী হবে। যেমনটা হচ্ছে দিল্লিতে। তাহলে আপনি গ্যাস সিলিন্ডার কিনতে পারবেন। কিন্তু সস্তায় গ্যাস সিলিন্ডার কিনে কি করবে? বাঙালিদের জন্য মাছ রান্না করবে?"

পরেশ রাওয়ালের মন্তব্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন আমজনতা। এটিকে বাঙালিদের প্রতি ‘ঘৃণাত্মক বক্তব্য’ বলে মনে করছেন। টুইটারে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন অনেকেই। দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিতর্কের ঝড়। সাধারণ বাঙালিদের সঙ্গে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের মিশিয়ে দিয়ে যে কার্যত একটা গোটা জাতিকে অপমান করেছেন রাওয়াল, তার বার্তা দিতে থাকেন নেটিজেনরা। ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাঙালি-সহ বহু ভারতীয়।