TMC On Sukanta Majumdar: মহিলাদের সঙ্গে অসম্মানজনক মন্তব্যে ফের বিতর্কে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাল্টা তোপ তৃণমূলের। বিশদে জানতে সম্পূর্ণ প্রতিবেদন পড়ুন…
TMC On Sukanta Majumdar: বৃহস্পতিবার বজবজে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীকে দেখতে গিয়ে স্থানীয় মহিলাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। ১০০ দিনের বকেয়া কাজের টাকা কেন মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে না? সেই দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার স্থানীয় মহিলারা সুকান্ত মজুমদারকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে 'চোর-চোর' স্লোগান দিয়ে জুতো ছোঁড়ারও অভিযোগ উঠেছিল।
পাল্টা বিক্ষোভকারী মহিলাদের ‘জেহাদি’ বলে কটাক্ষ করেন সুকান্ত মজুমদার। রাজ্যের বর্তমান শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে চোর বলেও মন্তব্য করেন বিজেপি নেতা। সুকান্ত মজুমদার আরও বলেন, ''এই কাজের জন্য জেহাদিদের নিয়ে আসা হয়েছে। এখানকার লোক নয়। বাংলাদেশের লোক রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে এসে এইসব করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটাকে পাকিস্তান বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন।''
অন্যদিকে এই বিষয়ে 'বাংলার নারীদের চরিত্রহনন', সুকান্ত মজুমদার বাংলার মহিলাদের ‘জেহাদি’ বলায় বিজেপিকে তুলোধোনা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের। এই বিষয়ে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস বৃহস্পতিবার কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়েছে বিজেপি সাংসদ তথা বঙ্গ বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে। কারণ, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে অপমানজনক এবং সাম্প্রদায়িক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন।
জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে বজবজে বহুদিন ধরে আটকে রাখা ১০০ দিনের কাজের বকেয়া মজুরি চেয়ে প্রতিবাদ জানাতে আসা মহিলা কর্মীদের সামনে এলে, জবাবদিহি করার বদলে সুকান্ত মজুমদার তাঁদের ‘জেহাদি’ বলে কটাক্ষ করেন—যা সম্পূর্ণভাবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক মন্তব্য।
তৃণমূল নেতাদের দাবি, এই মন্তব্য ছিল সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত অপমান। সুকান্ত মজুমদারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক ও অবিলম্বে তাঁকে পদ থেকে সরানো হোক। এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা গিয়েছে, সুকান্ত মজুমদার এক শিখ পুলিশ অফিসারের পাগড়ির দিকে চটি ছুড়েছেন। সেই ঘটনায় তিনি বিতর্কের মুখে পড়েন এবং পরবর্তীতে একটি মেকি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। (যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি Asianet News Bangla)।
এই বিষয়ে তৃণমূল সাংসদ ডঃ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, ‘’এই ঘটনা অত্যন্ত লজ্জাজনক। একজন মহিলা নাগরিক ও সাংসদ হিসেবে আমি বিজেপির এই নারীবিদ্বেষী মানসিকতার তীব্র প্রতিবাদ করছি। আগেও প্রধানমন্ত্রী দেশের একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে ‘দিদি ও দিদি’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। বাংলার মানুষ তার জবাব দিয়েছে। এখন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সেই মহিলাদের, যারা তিন বছর ধরে বঞ্চিত, তাদের 'জেহাদি' বলে দাগাচ্ছেন—এটা চরম অসম্মানজনক। আমরা এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা দাবি করছি এবং তাঁর অপসারণ চাই।''
একই সুরে, তৃণমূল বিধায়ক ডঃ শশী পাঁজা বলেন, ‘’বঙ্গ বিজেপি সভাপতি, যিনি আবার একজন শিক্ষাবিদ, তাঁকে বজবজের হালদারপাড়ায় মহিলা শ্রমিকরা প্রশ্ন করেন, কেন কেন্দ্র বাংলাকে বঞ্চিত করছে, কেন ১০০ দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা হয়েছে। তার জবাবে তিনি বাংলার মহিলাদের 'জেহাদি' বললেন। প্রতিদিন বাংলার মানুষকে অপমান করে চলেছে বিজেপি নেতৃত্ব। কিছুদিন আগেই শুভেন্দু অধিকারী সিঁদুর ও শাখা নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেছিলেন। মনে হচ্ছে, বিজেপি নেতারা দিনের পর দিন বাংলার নারীদের অপমান করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।''
যদিও এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।


