Calcutta High Court on SSC: ত্রুটিপূর্ণ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের একাংশ। সেই মামলার শুনানিতে বড় নির্দেশ আদালতের।
Calcutta High Court on SSC: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি-তে নতুন নিয়োগ মামলায় মিলল বড় স্বস্তি রাজ্য সরকার ও এসএসসি-এর (SSC)। জানা গিয়েছে, গত ৩০ মে এসএসসি-এর নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের জন্য জারি করা বিজ্ঞপ্তিকে ত্রুটিপূর্ণ এবং অবৈধ উল্লেখ করে দায়ের হওয়া মামলায় জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদনে খারিজ করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। যারফলে নতুন করে নিয়োগের ক্ষেত্রে আর কোনও বাধা থাকল না।
সূত্রের খবর, আগামী ১৬ জুন থেকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে স্কুল সার্ভিস কমিশন। সোমবার জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য্য। বিচারপতি মামলার প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ করে বলেন, ‘’আপাতত নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে চলবে। তার মধ্যে যদি কোনও অসুবিধা বা সমস্যা তৈরি হয়, তখন আদালত বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে দেখবে। অন্যথায় আগামী জুলাই মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।''
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কমিশনের জারি করার নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তিকে অবৈধ এবং ত্রুটিপূর্ণ বলে দাবি করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের দাবি ছিল, পরীক্ষায় বসার বয়সের সীমার ছাড় থেকে শুরু করে ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পরীক্ষা নিতে হবে। এরপরই আইনজীবী ফিরদৌস শামিম, তরুণজ্যোতি তিওয়ারি মামলাটির জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন করেন আদালতে।
এই বিষয়ে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম সোমবার আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এসএসসি-র নতুন বিজ্ঞপ্তিতে অনেক নিয়ম-বিধিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই বিজ্ঞপ্তি ২০১৬ সালের বিজ্ঞপ্তির অনুরূপ নয়। নতুন এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী নিয়ম বদল হলে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের সুযোগ আরও কমে যাবে। কিন্তু সব পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে বিচারপতি জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদন খারিজ করে দেন এদিন।
অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের ঘোষণা মত ২০১৬ এসএসসিতে চাকরি হারানো গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের এখনই ভাতা দেওয়া যাবে না। সোমবার প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee News) চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি (Group C, Group D) কর্মীদের জন্য যে ২৫ হাজার ও ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এখনই যেন ভাতা দেওয়া শুরু না হয়, তেমনটাই প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ বিচারপতি সিনহার। রাজ্য এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে, এমনটাই পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে ইচ্ছাকৃতভাবে অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে স্কুল শিক্ষা দফতরের সচিব বিনোদ কুমার, স্কুল শিক্ষা দফতরের কমিশনার, স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়কে আদালত অবমাননার আইনি নোটিস পাঠান এক আইনজীবী।
সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে গত শুক্রবার নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। মামলাকারী লুবানা পারভিনের দাবি ছিল, ৪৪ হাজার নিয়োগের যে বিজ্ঞপ্তি ও রুল জারি করা হয়েছে তাতে সুপ্রিম কোর্টের একাধিক নির্দেশ মানা হয়নি। তাই তা অবৈধ। সিলেকশন প্রসেসের রুল থেকে বয়সের ছাড়ের ক্ষেত্রেও নির্দেশ মানেনি রাজ্য বলে অভিযোগ।
এই রকমই একাধিক অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। আর তার মধ্যেই আদালত অবমাননার নোটিস যায় শিক্ষা দফতরের একাধিক আধিকারিকদের কাছে। অভিযোগ,সুপ্রিম নির্দেশ মেনে এখনও চিহ্নিত অযোগ্যদের থেকে বেতনের টাকা ফেরতের প্রক্রিয়া শুরু হয়নি, ওএমআর শিট প্রকাশ করা হয়নি, যোগ্যদের পাশাপাশি অযোগ্যদেরও নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে ২০১৬ সালের বিধি না মেনে ২০২৫ সালের বিধি মেনে নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে, যা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের অবমাননা বলে অভিযোগ। যদিও এতকিছুর মধ্যে সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট স্পষ্ট করে দিলো সুপ্রিম নির্দেশে তারা কোনও রকম হস্তক্ষেপ করবে না। ফলে নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুসারে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে পর্ষদ ও রাজ্য সরকার।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।