আরজি কর কাণ্ডে সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু জেলের সাজা দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলেও, সঞ্জয় নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন।

আরজি কর কাণ্ডের অবশেষে রায় ঘোষণা হল আজ। শেষ শনিবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে। আরজি কর কাণ্ডে আজ সাজা ঘোষণা হল। সঞ্জয়ের আমৃত্যু জেলের শাস্তি দিলেন বিচারক।

সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের জন্য মৃত্যু), ১০৩ (১) (খুন) ধরায় দোষী সাব্যস্ত করা হয় সঞ্জয় রায়কে।

সাজা ঘোষণার আগে এদিকে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে নিজেকে বারবার নির্দোষ বলেছে সঞ্জয়। আজ ফের রুদ্রাক্ষের কথা বলে। সে বলে, রুদ্রাক্ষ তার গলায় আছে। সে ধর্ষণ করলে রুদ্রাক্ষ্ম ছিঁড়ল না কেন? কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেলে সে। বার বার দাবি করে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। 

এদিন আদালত সঞ্জয়ের আইনজীবী বলেন, বিরলতম কেস কীসের ওপর ভিত্তি করে হয়, অতীতের বেশ কয়েকটি মামলার উদাহরণ টেনে বলছেন সঞ্জয়ের আইনজীবী। মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করলেন তিনি। বলেন, মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে নই, সংশোধনের সুযোগ দিতে হবে। শেষে আমৃত্যু জেলের শাস্তি দিলেন বিচারক। 

সোমবার রায় ঘোষণার সময় বিচারক অনির্বাণ দাস বলেন, দেখে মনে হয়নি বিরলের মধ্য বিরলতম ঘটনা। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অনুযায়ী, রেয়ারেস্ট অফ দ্য বেরয়ার বাংলা তর্জমায় বিরলতম অপরাধের ক্ষেত্রে ফাঁসি দেওযা হয়। কোন অপরাধ কতটা ভয়াবহ? সমাজে তার নেতিবাচক প্রভাব কত? সাক্ষ্য প্রমাণ কত জোরাল এবং সেই সমস্ত সিদ্ধান্ত বিচারকই নেন।

আজ শিয়ালদহ আদালত যেন দুর্গে পরিণত হয়েছে। নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে আদালত চত্বর। আজ আদালত কক্ষে সিবিআই ও নির্যাতিতার পরিবারের আইনজীবী রাজদীপ হালদার ছিলেন। সাধারণের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। প্রায় ৫০০ পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিল। রয়েছেন দুজন ডিসি পদমর্যাদা আধিকারিকরা, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার রয়ছে ৫জন, ইন্সপেক্টর ১৪ জন, এসআই পদমর্যতার আধিকারিকরা রয়েছে ৩১ জন, এএসআই পদমর্যতার আধিকারিকরা ছিলেন ৩৯ জন, কনস্টেবল ছিলেন ২৯৯ এবং মহিলা পুলিশ ছিলেন ৮০ জন।

গত ৯ অগস্ট হাসপাতালের সেমিনার হল থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। প্রথমে তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। ১০ অগস্ট ঘটনায় যুক্ত থাকার কারণে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এতদিন তদন্তের পর আজ রায় ঘোষণা হল। আজ সঞ্জয়ের আমৃত্যু কারাদন্ড দিল আদালত।