সংক্ষিপ্ত
তিন জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কেটে গেল জট। পাঁচ দিন পর শনিবার ‘রেল রোকো’ কর্মসূচি তুলে নিল কুর্মি সম্প্রদায়।
অবশেষে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিল কুর্মি সম্প্রদায়। তিন জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কেটে গেল জট। পাঁচ দিন পর শনিবার ‘রেল রোকো’ কর্মসূচি তুলে নিলেন আন্দোলনকারীরা। কুর্মি সম্প্রদায়ের মানুষদের তফসিলি সম্প্রদায়ের আওতায় নিয়ে আসা এবং কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্তিকরণের দাবিতে গত ৪ দিন ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ দেখানো হতে থাকে। বিক্ষোভের মুখে জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পুরুলিয়া,পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলা। অবরোধ করা হয় ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। টানা পাঁচ দিন প্রায় অচল হয়ে যায় রেল চলাচল এবং সড়ক যোগাযোগে ও পরিবহণ ব্যবস্থা।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রজত নন্দার দফতরে হওয়া ভিডিয়ো কনফারেন্সে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরের সচিব সঞ্জয় বনশলের সঙ্গে বৈঠক হয়। সিআরআই-এর চিঠিতে যে ভুল ছিল, তা সংশোধন করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। এই ইতিবাচক বার্তা পেয়ে অবরোধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কুর্মি সম্প্রদায়ের মানুষ। আন্দোলনকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রতিনিধি দল পৌঁছে যাবে কুস্তাউর স্টেশনে। ওই প্রতিনিধি দলের মধ্যে জেলা প্রশাসন এবং ভারতীয় রেলের এক জন করে প্রতিনিধি রাখার দাবি তুলেছে কুর্মি সমাজের নেতা অজিত প্রসাদ মাহাতো। অবরোধকারীদের নামে যাতে কোনও মামলা দায়ের না করা হয়, সেই দিকটি বিবেচনা করে দেখার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন অজিত।
এর আগে কুর্মিদের প্রধান নেতা অজিত প্রসাদ মাহাতো বলেছিলেন, ‘‘সিআরআইয়ের রিপোর্টে ত্রুটি রয়েছে। যে চিঠি আমাদের দেওয়া হয়েছে সেটি পুরনো চিঠি। কেন এটা মানব?” বর্তমানে, কুস্তাউরের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হলেও, খেমাশুলি নিয়ে আলোচনা এখনও অব্যাহত।
অজিতপ্রসাদ মাহাতো আরও বলেছেন যে, ‘‘ছ’টি রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা প্রায় দেড় কোটি মানুষ কুড়মালি ভাষায় কথা বলেন। অথচ জাতীয়স্তরে এই ভাষার স্বীকৃতি মেলেনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার অবশ্য কুড়মালিকে দ্বিতীয় ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, অসম এবং ছত্তীসগঢ়ে বসবাসকারী কুর্মিরা এই ভাষায় কথা বলেন। কুড়মালি ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে জঙ্গলমহলের মূলবাসী কুর্মিদের একাধিক সংগঠন ধারাবাহিক আন্দোলন হয়েছে। সম্প্রতি কুর্মি জাতিকে তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত করা এবং কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে কুর্মিরা। টানা চার দিন আন্দোলনে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ভারতের বিশাল অংশের রেল যোগাযোগ। জাতীয় সড়কও অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে, এর প্রভাব পড়েছিল দৈনন্দিন যাতায়াত ব্যবস্থায়। এ বার ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, এমনটাই আশা সব পক্ষের।
আরও পড়ুন-
‘আমার যাবার সময় হল, দাও বিদায়!’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা ফেসবুক পোস্ট, তৃণমূলের অন্দরে বেসুরো সমীর
ত্রিপুরায় তৃণমূলে বড়সড় যোগদান পর্ব, একসঙ্গে ঘাসফুলে যোগ দিলেন দু’শো জনেরও বেশি মানুষ
সম্পূর্ণ উত্তর ভারত জুড়ে কুর্মি আন্দোলনের আঁচ! বাতিল হয়ে যাচ্ছে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন