সংক্ষিপ্ত

শালবনী এলাকার ঐতিহ্যমন্ডিত দুশো বছরের প্রাচীন লক্ষ্মী সরস্বতী পূজা ও হরিনাম উপলক্ষ্যে সম্প্রতি সেখানে উপস্থিত হতে দেখা যায় মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়াকে। সেখানে গিয়ে ভোগ নিবেদনও করতে দেখা যায় তাঁকে। 

সরস্বতী পুজো কেমন হয় তা বাঙালী জানে। কিন্তু সরস্বতী পুজোতেই একসাথে লক্ষ্মী পুজো? হ্যাঁ, শালবনী এলাকার ঐতিহ্যমন্ডিত দুশো বছরের প্রাচীন লক্ষ্মী- সরস্বতী পূজা ও হরিনাম (Ancient Lakshmi- Saraswati Puja and Harinam) উপলক্ষ্যে সম্প্রতি সেখানে উপস্থিত হতে দেখা যায় মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়াকে (Medinipur MLA Jun Malia)খানে গিয়ে ভোগ নিবেদনও করতে দেখা যায় তাঁকে। যা নিয়ে জোর চর্চা চলছে মেদিনীপুরের রাজনৈতিক মহলে। গ্রাম ও মন্দিরের ইতিহাস প্রসঙ্গে জানা যায়,মহাশোল গ্রামের রাজপুত ক্ষত্রিয় পরিবারের পাঁচটি মূল অংশ রয়েছে বর্তমানে। কিন্তু সেই তৃতীয় পুরুষ থেকেই চলে আসছে এই সময় একত্রে লক্ষ্মী সরস্বতীর আরাধনা ও চব্বিশ প্রহর ব্যাপী অখন্ড হরিনাম সংকীর্তন। কথিত আছে নয় পুরুষ আগে প্রায় ২০০ বছরের বেশী সময়ে এই পূজার প্রচলন হয়েছে। সেই থেকে বংশানুক্রমে এই পূজা চলে আসছে। গ্রামের 'পাঁচবংশে'র সবথেকে বয়স্ক পুরুষ এই সিংহ বাড়ির পূজোর মূল আহ্বায়ক হন। গ্রামের পক্ষে চিত্তরঞ্জন সিংহ,দুলাল চন্দ্র সিংহ,নিরঞ্জন সিংহ,নেপাল সিংহ এই বছরের পরিকল্পনা ও এই পূজার আয়োজন করেন।


কথিত আছে সিংহ বংশের আদি পুরুষ সৈজন সিংহ বিহার থেকে প্রায় সাত পুরুষ আগে বাংলায় এসে মহাশোল মৌজাতে জমি কিনে বসতি পত্তন করেন। তারপর মায়ের স্বপ্নাদেশ পান ঈশান সিংহ। পুরোহিত সজ্ঞয় বাবু বলেন কথিত আছে মাঘ মাসে একদিন রাত্রে বর্তমান মন্দির প্রাঙ্গনে রাত্রিযাপন করা গ্রামের কয়েকজন বয়স্ক দুই বোনের স্বপ্নাদেশ পান ও এই স্থানে পূজা করার কথা বলেন। সেই সময় মাঘ মাস ও সরস্বতীপূজা নিকটে হওয়ায় দেবী লক্ষী সরস্বতীপূজা শুরু হয়। শোনা যায় সেই সময় থেকেই মহাশোল গ্রামে মা লক্ষ্মী-সরস্বতী পূজা এক মেড়ের মধ্যে দাসদাসী সহ প্রচলিত হয়। পরবর্তীকালে চব্বিশ প্রহর ব্যাপী হরিবাসর এর আয়োজন করা হয় এই পূজা উপলক্ষ্যে। তখনকার একচালার খড়ের মন্দির এখন পাকা হয়েছে। সাথে রয়েছে হরিমন্দির।

আরও পড়ুন- সরস্বতী পুজোর সাজে নুসরতকে দারুণ লাগছে, নুসরতকে দেখে মুগ্ধ যশ

আরও পড়ুন- কোথাও সাজে কাঁচা বাদাম, কোথাও চা বিক্রেতা সরস্বতী, থিমের ছটা জেলাজুড়ে


পঞ্চমীর  সকালে ঘট ডুবিয়ে মায়ের অঞ্জলি সম্পন্ন হয় বিকেল পাঁচটায়। তার পরের দিন থেকে এবার পাঁচদিন ব্যাপী অখন্ড হরিনামের আয়োজন হয়। এলাকার মানুষের একমাত্র বিনোদনের এই পূজাতে মেলার আয়োজন হয়। প্রত্যেকদিন দুপুরে এলাকার নামী দামী কীর্তনীয়ারা ভোগকীর্তন নিবেদন করেন। এই উপলক্ষে শালবনী ব্লকের মহাশোলের সিংহ পরিবারের সদস্যরা ও তাদের সমস্ত আত্মীয়স্বজন এবং আশেপাশের জগন্নাথপুর, খেমাকাটা, ঝাঁটিয়াড়া,মন্ডলকূপী গ্রামের গ্রামবাসীরা ও তাদের আত্মীয়স্বজন রা এসে উপস্থিত হয় ও মেলায় অংশগ্রহন করে। এইভাবে মেলার কয়েকদিন বিভিন্ন দোকান বসে মিস্টি,ঝিলাপী সহ বিভিন্ন দোকান বসে ও মেলায় ব্যাপক জনসমাগম হয়। মায়ের হাতে পাকানো গুড় দিয়ে চিঁড়ের লাড়ু এই মেলার বিশেষ আর্কষন।  হরিনামের সমাপনের পর দুই দিন ব্যাবস্থা থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের এইভাবে পূজা ও হরিনাম সহ মেলা ৭ দিনের হয়। যা নিয়ে ব্যাপক উন্মাদনা থাকে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে। 

আরও পড়ুন- গলায় ঝোলে কিউআর কোড, ভিক্ষা নেন ফোনপে'তে - ডিজিটাল ভারতের ডিজিটাল ভিখারি

আরও পড়ুন- এবার ১২ ঘণ্টা আগে বুক করা যাবে মেট্রোর টিকিট, চালু নয়া নিয়ম