সংক্ষিপ্ত
- একুশেও ফিরল ১৯৩২ এবং ২০২০ সালের স্মৃতি
- করোনা কাঁটায় এবছরও গড়বে না রথে চাকা
- চাকা না গড়লেও রীতিনীতি পালন করা হবে
- রথে চড়ে জগন্নাথদেব মাসির বাড়িও যাবেন
একুশে ফিরে এল ফের ১৯৩২ এবং ২০২০ সালের স্মৃতি।করোনা কাঁটায় এবছরও গড়বে না ঐতিহ্যবাহী মহিষাদল রাজবাড়ির ২৪৫ বছরের প্রাচীন রথের চাকা। বসবে না ঘটা করে মেলাও। তবে রথের চাকা না গড়লেও রথের সমস্ত রীতিনীতি পালন করা হবে। নিয়ম রক্ষার রীতিনীতি পালন হবে সমস্ত ক্ষেত্রেই।
উল্লেখ্য, ২০২০-র মতো এ বছরও রাজবাড়ীর কুলদেবতা মদন গোপাল জিউ ও প্রভু জগন্নাথকে রথের মধ্যে তোলা হলেও তারা মাসির বাড়ি যাবেন পালকি চড়ে। রথ থাকবে রথের জায়গাতেই দাঁড়িয়ে। তবে প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে মেলায় অল্প বিস্তর দোকান বসানো হবে পরিচালন কমিটির অনুমতি ক্রমে । মহিষাদলের ইতিহাসের পাতা উল্টালে জানা যায়, ২০২০সালের আগেও ১৯৩২ সালেও একবার মহিষাদলের রথযাত্রা বন্ধ ছিল। তখন ভারতে ব্রিটিশদের অত্যাচার চরমে। এমন সময় ওই বছর রথের দিন এক স্বাধীনতা সংগ্রামীর ওপর চরম অত্যাচার চালায় ব্রিটিশ পুলিশ বাহিনী। যার প্রতিবাদে রথ একবার টানার পর রথ টানা বন্ধ রাখে দর্শনার্থীরা। তারা ব্রিটিশদের অত্যাচারের প্রতিবাদে দাবি জানানো হয় পুলিশকে ক্ষমা চাইতে হবে নচেৎ ততকালীন সতেরো চূড়া রথের মাথায় লাগাতে হবে ভারতের জাতীয় পতাকা। আর এই টানাপোড়েনের মাঝে ওই বছর এখানে বন্ধ হয়ে যায় রথ টানা। এরপর থেকে অবশ্য রথ টানা স্বাভাবিক নিয়মেই চলতে থাকে। কিন্তু ২০২০ সালে করোনার কোপে রথ বন্ধ হয়। যার পুনরাবৃত্তি চলতি বছরেও।
তবে মাঙ্গলিক সমস্ত আচার বিধি পালন করা হবে। রাজা আনন্দলাল উপাধ্যায়ের সহধর্মিণী ধর্মপ্রাণ রানী জানকি দেবী মহিষাদলের রথের সূচনা করেছিলেন। মহিষাদল রাজ পরিবারের এই প্রাচীন রথের অন্যতম দ্রষ্টব্য বিষয় হল এই রথে জগন্নাথ দেবের সঙ্গে যান রাজবাড়ীর কুলদেবতা গোপালজিউ। তবে অন্যান্য বছর হাজার হাজার দর্শনার্থীর কাছির টানে রথে চড়ে মাসি বাড়ি গেলেও এবার জগন্নাথদেব ও গোপালজিউ মাসির বাড়ি যাবেন রাজবাড়ীর পালকি চড়ে। মহিষাদলের ঘাঘরা গ্রামে মাসি বাড়িতে এক সপ্তাহ কাটানোর পর ফেরত রথের দিন ফের পালকি চড়ে জগন্নাথ ও গোপালজিউ ফিরবেন বাড়িতে। এর পাশাপাশি এবছরও সেভাবে ঘটা করে মেলা বসবে না। তবে অল্পবিস্তর দোকান প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে বসানো হবে বলে রথ পরিচালন কমিটি পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
রথ পরিচালন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তথা মহিষাদল বিধানসভার বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, "এবছরও রথ টানা বন্ধ থাকবে। কোভিড নিয়ন্ত্রণে এসেছে তবে তার মানে এই নয় যে লাখো মানুষের উপস্থিতিতে রথ টানা হবে। তবে মাঙ্গলিক সমস্ত আচারবিধি পালন করা হবে এবং রথে চড়ে জগন্নাথদেব মাসির বাড়ি যাবেন। মেলাও সেইভাবে বসবে না তবে অল্প বিস্তর দোকান বসানো হবে রথ পরিচালন কমিটির বৈঠকে আলোচনা করে তা ঠিক করা হয়েছে।" মহিষাদল রাজবাড়ীর বর্তমান প্রজন্ম রাজা শঙ্কর প্রসাদ গর্গ ও হরপ্রসাদ গর্গ জানান, করোনার কারনে গতবছরের মতো এবারেই রথের চাকা গড়বে না তবে আচার আচরণ মেনেই পালিত হবে মহিষাদলের প্রাচীন রথযাত্রা।
বৃহস্পতিবার মহিষাদল রাজবাড়ীর প্রতিনিধি, স্থানীয় প্রশাসন ও রথ কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সভাগৃহে। সেখানেই সসর্বসম্মতিক্রমে ঠিক করা হয় করোনার কারনে ঘটা করে পালিত হবে না রথযাত্রা। নিয়ম মেনেই পালিত হবে প্রাচীন রথযাত্রা। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, মহিষাদল রথ কমিটির সাধারন সম্পাদক তথা মহিষাদলের বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী, বিডিও যোগেশ চন্দ্র মন্ডল, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শিউলী দাস, মহিষাদল থানার ওসি স্বপন গোস্বামী সহ অন্যান্যরা।
আরও পড়ুন, ভাইরাসের ভয় নেই তেমন এখানে, ঘুরে আসুন ভুটানে
আরও পড়ুন, রাজ্য়ের সর্বনিম্ন সংক্রমণ এই জেলায়, বৃষ্টিতে হারাতেই পারেন পুরুলিয়ার পাহাড়ে
আরও দেখুন, বৃষ্টিতে বিরিয়ানি থেকে তন্দুরি, রইল কলকাতার সেরা খাবারের ঠিকানার হদিশ
আরও দেখুন, কলকাতার কাছেই সেরা ৫ ঘুরতে যাওয়ার জায়গা, থাকল ছবি সহ ঠিকানা
আরও পড়ুন, বনগাঁ লোকাল নয়, জাপানে ঠেলা মেরে ট্রেনে তোলে প্রোফেশনাল পুশার, রইল পৃথিবীর আজব কাজের হদিস