সংক্ষিপ্ত

  • ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি সরজমিনে দেখতে কাকদ্বীপে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
  • পর্যালোচনা বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী
  • সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে দিলেন প্রয়োজনীয় নির্দেশ


যত দ্রুত সম্ভব বুলবুলে বিধ্বস্ত দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার বিস্তীর্ণ অংশে জনজীবন স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে এবং পর্যালোচনা বৈঠক করতে এ দিন দুপুরেই কাকদ্বীপ পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই সরকারের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে বুলবুলে বিধ্বস্ত সাগর, নামখানা, সুন্দরবনের মতো বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি জেনে নেন মমতা। প্রয়োজনীয় নির্দেশও দেন তিনি। বৈঠকে হাজির ছিলেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাও। 
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের জেরে সবথেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে ফসল এবং বাড়ি ঘরের। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা যাতে শস্য বিমা বাবদ ক্ষতিপূরণ পেয়ে যান, তা দেখার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কত বাড়ির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই রিপোর্ট তৈরি করে দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অফিসারদের মানবিকতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

একই সঙ্গে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার যে এলাকাগুলিতে বুলবুল আছড়ে পড়েছে, সেখানে নদী বাঁধ সংস্কারের কাজ অবিলম্বে শুরু করার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নদী বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় বেশি করে ম্যানগ্রোভ অরণ্য তৈরির উপরে জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী।  এর জন্য বন দফতরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেচ দফতরকে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি। প্রয়োজনে একশো দিনের কর্মীদের কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন তিনি। 

আরও পড়ুন- ডুবল লঞ্চ- ট্রলার, নামখানায় বুলবুলের দাপটে ভেসে গেল আস্ত জেটি, দেখুন ভিডিও

আরও পড়ুন- বুলবুলের তাণ্ডবে পড়া গাছ কাটতে বিপত্তি, পা গেল এনডিআরএফ কর্মীর

এর পাশাপাশি বিদ্যুৎ পরিষেবাও দ্রুত স্বাভাবিক করার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদ্যুৎ দফতর থেকে তাঁকে জানানো হয়, নামখানা, রুদ্রনগরের মতো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে প্রায় কুড়ি হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ঝড়ের দাপটে বিভিন্ন জায়গায় উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের পোল, ছিঁড়েছে তার। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শুধুমাত্র দক্ষিণ চব্বিশ পরগণাতেই দু' হাজার কর্মীকে কাজে লাগানো হয়েছে। সাত থেকে দশ দিনের মধ্য়ে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে আশাবাদী দফতরের আধিকারিকরা। 

যে এলাকাগুলিতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব বেশি পড়েছে, সেখানে বেশি পরিমাণে পানীয় জল পাঠানোর জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে চাল, ডাল- সহ অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য ত্রাণের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত আছে কি না, সেই খবরও নেন তিনি। মেয়াদ উত্তীর্ণ বেবিফুড যাতে বিলি করা না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন মমতা। 

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে পুনর্গঠনের কাজ ঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তা দেখতে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। আটচল্লিশ ঘণ্টা অন্তর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে এই টাস্ক ফোর্স। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বুলবুলের মোকাবিলায় রাজ্য প্রশাসন  যেভাবে কাজ করেছে, কেন্দ্রীয় সরকারও তার প্রশংসা করেছে। রাজ্যের তরফে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব হয়ে গেলে কিছুদিনের মধ্যেই  ক্ষয়ক্ষতির হিসেব নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিদের আসতে বলার জন্য সরকারি আধিকারিকদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্ভবত আগামী বুধবার তিনি উত্তর চব্বিশ পরগণার বসিরহাটে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনে যাবেন।