সংক্ষিপ্ত
- অভাবে সংসারে স্বাচ্ছলত্য আনতে চেয়েছিলেন নদিয়ার এক যুবক
- এজেন্ট মারফৎ সৌদি আরবে কাজ গিয়েছিলেন তিনি
- বিদেশে কাজ করেও ওই যুবককে ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ
- আরবে অনাহারে দিন কাটছে, দাবি পরিবারের লোকেদের
জনমজুরি করে আর ক'পয়সাই বা রোজগার হয়! অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা আনার আশায় বিদেশে কাজ করতে গিয়েছিলেন নদিয়ার এক যুবক। কিন্তু রোজগার তো দূর অস্ত, সৌদির আরবের কার্যত অনাহারে দিন কাটছে তাঁর। দেশে যে ফিরবেন সে উপায়ও নেই। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, সৌদি আরবে যে সংস্থায় কাজ করেন ওই যুবক, সেখানকার মালিক তাঁর পাসপোর্ট ও ভিসা ফেরতে দিচ্ছে না। ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের কাছে কাতর আবেদন জানিয়েছেন ওই যুবকের মা।
নদিয়ার ধানতলা থানার শঙ্করপুরে গ্রামে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন বাসুদেব রায়। বাবা অসুস্থ, কাজ করতে পারেন না। সংসারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য ছিলেন বাসুদেবই। জনমজুরি করে যা আয় করতেন, তা দিয়েই কোনওমতে সংসার চলত, তবে অভাব মিটত না। এভাবে আর কতদিন! বেশি রোজগারের আশায় বিদেশে কাজ করতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বাসুদেব। ব্যবস্থাও হয়ে যায়। পরিবারের লোকেদের দাবি, সৌদি আরবে পাঠিয়ে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাসও দেন নদিয়ার হাঁসখালির দুই এজেন্ট। তবে তারজন্য মোটা অঙ্কের টাকাও দাবি করেন তাঁরা। জমি-বাড়ি বন্ধক রেখে তিন দফায় এজেন্টদের আশি হাজার টাকাও দেন বাসুদেব। কিন্তু শেষপর্যন্ত প্রতারিত হতে হয় হতদরিদ্র পরিবারের ওই যুবককে।
পরিবারের লোকেদের দাবি, শপিং মলে কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাসুদেবকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছিলেন এজেন্টরা। কিন্তু সেখানকার একটি কারখানায় তাঁকে কাজ দেওয়া হয়। তাতেও অবশ্য কোনও আপত্তি করেননি বাসুদেব। বরং খুশিমনেই কাজে যোগ দেন তিনি। অভিযোগ, সৌদির আরবের কারখানার ১৪ ঘণ্টা কাজ করেও ঠিকমতো বেতন পাচ্ছেন না নদিয়ার ওই যুবক। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, বিদেশে কার্যত অনাহারেই দিন কাটছে বাসুদেবের। এদিকে এই করুণ অবস্থার কথা জানতে পেরে যে এজেন্টের মারফৎ আরবে গিয়েছিলেন বাসুদেব, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরিবারের লোকেরা। কিন্তু সহযোগিতা তো দুর, উল্টে বাসুদেব রায়ের পরিবারের সঙ্গে ওই দুই এজেন্ট অত্যন্ত খারাপ ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। রীতিমতো হুমকি দেওয়া হয়। শেষপর্যন্ত বাধ্য হয়েই ধানতলা থানার অভিযুক্ত দুই এজেন্টের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন বাসুদেব রায়ের পরিবারের লোকেরা। তাঁদের একটাই আর্জি, যত দ্রুত সম্ভব বাসুদেবকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুক প্রশাসন।