সংক্ষিপ্ত

ময়নাগুড়িকাণ্ডের পর ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে নির্যাতিতার। আচমকাই ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে ভোলবদল। 'চাই না সিবিআই তদন্ত, রাজ্য় পুলিশেই খুশি', জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবার। 

ময়নাগুড়িকাণ্ডের পর ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে নির্যাতিতার। কয়েকদিন আগেই সিবিআই তদন্তের জন্য সরব হয়েছিলেন ময়নাগুড়িকাণ্ডের পর নির্যাতিতার বাবা। আচমকাই ৩৬০ ডিগ্রি ভোলবদল। পুলিশি পদক্ষেপে তিনি খুশি, রাজ্য পুলিশেই আস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়নাগুড়ির নির্যাতিতার বাবা। কিন্তু যে কয়েকদিন আগেও কেন্দ্রীয় তদন্তাকারী সংস্থার উপর ভরসা পাচ্ছিল, সিবিআই তদন্ত চাইছিল, তার আচমকা কী করে দাবি বদলে গেল, এইনিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। 

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উত্তরবঙ্গের ময়নাগুড়িতে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। অপমান ঢাকতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ওই নাবালিকা।গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেও শেষ অবধি প্রাণে বেঁচে যায় ওই নাবালিকা। এরপরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই নাবালিকাকে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উল্লেখ্য, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি উত্তরবঙ্গের ময়নাগুড়ির ধর্মপুর এলাকায় ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় অজয় রাম নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। তার জামা কাপড় ছিড়ে দেয়। তাঁর গোপনাঙ্গে হাত দেয় বলে অভিযোগ। নাবালিকার চিৎকার শুনে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। এরপর ময়নাগুড়ির থানার দ্বারস্থ হয় নির্যাতিতার পরিবার।  এই ঘটনা অভিযুক্ত সন্দেহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ দায়েরের কয়েকদিনের মধ্যেই আদালত থেকে জামিন নেয় অভিযুক্ত। 

আরও পড়ুন, অটোয় নাবালিকার গোপানাঙ্গে স্পর্শ, মানিকতলায় শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার খোদ পুলিশই

আরও পড়ুন, ধর্ষণের ভিডিও দেখিয়ে তরুণীকে অসংখ্যবার ধর্ষণ, শিউরে উঠেছে কোন্নগরবাসী, ধৃত ৪

এদিকে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে প্রাণনাশের হমকি দেওয়া হয়েছিল নির্যাতিতাকে। সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে শেষ অবধি আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ওই নাবালিকা।  এরপরেই স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেন নির্যাতিতার বাবা। নির্যাতিতার বাবার অভিযোগ, গত ১৪ এপ্রিল বাড়িতে একাই ছিল মেয়ে। সেই সময় মুখ ঢাকা অবস্থায় দুই যুবক বাড়িতে ঢুকে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিতে বলে। এমনকি অভিযোগ প্রত্যাহার না করলে বাড়ির সকলকে খুন করার হুমকি দিয়ে যায় দুষ্কৃতিরা।এই ঘটনার কথা পরিবারের সকলকে জানায় নাবালিকা। অভিযোগ এরপরেই সে  গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। 

আরও পড়ুন, 'আমাকে বলেছিল, ধর ওকে রেপ করব', হাঁসখালিকাণ্ডে সিবিআই-র কাছে এল ভয়াবহ তথ্য

 রাজ্যে ফের আরও একটা মৃত্যু উদ্বেগ বাড়াল প্রশাসনের।  কিন্তু কথা হচ্ছে আর কত ধর্ষণ হবে পশ্চিমবঙ্গের বুকে, কেন এই নৃশংসঘটনাগুলিতে যবনিকা টানা যাচ্ছে না, কেন রাজ্যের অপরাধ মনষ্কদের লাগাম পড়ানো যাচ্ছে না, ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে সমাজের স্তরে। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে ছাত্রী-মহিলা-গৃহবধূ একা বাইরে বের হতে রীতিমতো আতঙ্কে থাকছে। গ্রাম বাংলা, মফস্বলে শুনশান এলাকাগুলিকেই টার্গেট করছে ধর্ষণকারীরা। তবে পৈশাচিক ধর্ষণের ঘটনার হাজারো উদাহরণ রয়েছে কলকাতার বুকে। দেগঙ্গা, মালদহ, মাটিয়া, হাঁসখালি, ময়নাগুড়ি, শান্তিনিকেতন একের পর এক ধর্ষণ হয়েই চলেছে রাজ্যে। প্রায় প্রতিসপ্তাহেই একাধিক গণধর্ষণের ঘটনা উঠে আসছে। কোথাও খুনের হুমকি, কোথাও ধর্ষণের পর হত্যা, কোথাও আবার ধর্ষণের পর দেহ দাহ করা হচ্ছে। ভয়াবহ একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলেছে পশ্চিমবঙ্গে।