সংক্ষিপ্ত

স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। আর এটাই এখন সব থেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্কুলগুলির কাছে। তাই এবার এই সমস্যা মেটাতে নয়া উদ্যোগ নিলেন বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়। 

করোনাভাইরাসের (Coronavirus) জেরে এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল স্কুল। প্রায় ২০ মাস পর ১৬ নভেম্বর থেকে খুলছে রাজ্যের সব স্কুল (State School)। তবে সব শ্রেণির ক্লাস (Class) এখনও শুরু হয়নি। শুধুমাত্র নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির (Class 9 to 12 school reopen) ক্লাস চলছে স্কুলে গিয়ে। আর বাকিদের ক্লাস এখনও বাড়িতে অনলাইনের (online Class) মাধ্যমে হচ্ছে। অবশ্য দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকার ফলে অভাবের সংসারের হাল ধরতে অনেক পড়ুয়াই পড়াশোনা ছেড়ে যোগ দিয়েছে কাজে। কয়েকজন আবার করোনার জেরে স্কুলে যেতেই ভয় পাচ্ছে। যার ফলে স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। আর এটাই এখন সব থেকে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে স্কুলগুলির কাছে। তাই এবার এই সমস্যা মেটাতে নয়া উদ্যোগ নিলেন বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বসিরহাট নবীন চন্দ্র মণ্ডল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিতাই দাস।  

দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর স্কুল খুলতেই রাস্তায় ধরা পড়েছিল এক চেনা ছবি। সকাল দশটা বাজতেই রাস্তার দুই ধার দিয়ে পিঠে ব্যাগ নিয়ে স্কুলের দিকে রওনা দিচ্ছিল পড়ুয়ারা। আবার কখনও দেখা গিয়েছে স্কুলের গেটে ছাত্র-ছাত্রীদের মাথা ঠুকে স্কুলে প্রবেশ করার ছবিও। কিন্তু, কয়েকটা দিন যেতে না যেতেই ধরা পরল লকডাউনে পুরনো চিত্র। আবার ফাঁকা ক্লাস, খালি বেঞ্চ, শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে ঢুকে গুটিকয়েক ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ক্লাস করা। কখনও অভিভাবক আবার কখনও শিক্ষার্থীরা করোনার ভয়ে স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। স্কুলের মধ্যে করোনা সংক্রান্ত যাবতীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পর পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মন থেকে ভয় কিছুতেই দূর হচ্ছে না। অনেকেই নিজের সন্তানকে স্কুলে পাঠাতে চাইছেন না।  

আরও পড়ুন- ক্লাসে অনুপস্থিত বহু পড়ুয়া, লকডাউনে স্কুলছুটদের ফেরাতে উদ্যোগ শিক্ষকদের

আর ঠিক তখনই সেই সব পড়ুয়াকে স্কুলমুখী করতে উদ্যোগ নিলেন বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষকদের সঙ্গে পড়ুয়াদের বাড়িতে যান তিনি। সিরহাট নবীন চন্দ্র মণ্ডল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিতাই দাসকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামের মধ্যে পৌঁছে যান। সেখানে পৌঁছে পড়ুয়াদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন বিধায়ক। পড়ুয়াদের কেন স্কুলে যাওয়া প্রয়োজন তা বোঝান তিনি। এছাড়া চিকিৎসক হিসেবে মানুষের কী কী করোনা বিধি মেনে চলা দরকার তাও বলেন। 

এদিকে বিধায়ককে কাছে পেয়ে খুশ এলাকাবাসী। বিধানসভার যাবতীয় দায়িত্ব পালন করার পরও শিক্ষার্থীদের সুস্থ ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা তিনি সবাইকে অবগত করাচ্ছেন। এর ফলে আবার স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা। এ প্রসঙ্গে ছাত্রী পায়েল দাস বলেন, "শুধুমাত্র করোনার ভয়ে নয়, এই লকডাউনে আমার বাবার কাজ চলে যাওয়ায়, আমরা আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত। তাই আমি বিদ‍্যালয়ে যেতে পারছি না।" কিন্তু বিধায়ক সেই ছাত্র-ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য বই সহ সবরকম জিনিস দিয়ে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন।