সংক্ষিপ্ত
কর্মসূত্রে আরবে থাকেন থাকেন স্বামী। স্বামীর থেকে সাত মাস টাকা না পেয়ে শেষ অবধি তিন সন্তানকে বিষ খাওয়ালেন মা। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে দুই মেয়ের।
স্বামীর থেকে সাত মাস টাকা না পেয়ে শেষ অবধি তিন সন্তানকে বিষ খাওয়ালেন মা। উল্লেখ্য, কর্মসূত্রে আরবে থাকেন থাকেন স্বামী। এদিকে তিনি প্রায় সাত মাস বাড়িতে কোনও টাকা পাঠাননি। তাই বাধ্য হয়ে অভাবের তাড়নায় তিন সন্তানকে বিষ খাইয়ে, নিজেও বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন অসহায় মা। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে দুই মেয়ের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মা ও ছেলে।মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের কীর্ণাহার থানার কালিনগর গ্রামে।
পুলিশ সূত্রে খবর, কালীনগরের একই পরিবারের ৪ সদস্য বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁধের মধ্যে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৩ বছর বয়সী মৃতের নাম হাসি খাতুন। মাত্র ১০ বয়সী আরেক সদস্যের নাম খুশি খাতুন। সেও মৃত। পাশাপাশি মা সেরেনা বিবি এবং ছেলে ইরফান শেখ আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। জানা গিয়েছে, সেরেনা বিবির শ্বশুর বাড়ি মুর্শিদাবাদের সুন্দরপুর। স্বামী হোসেন শেখ প্রায় ৫ বছর ধরে কর্মসূত্রে আরবে রয়েছেন। কিন্তু গত ৭ মাস ধরে কোনও টাকা পাঠাননি তিনি। এনিয়ে ফোনে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হত বল খবর। শুক্রবার সন্ধ্যাতেও তেমন কিছু হয়। এরপরেই ছেলে মেয়েকে কীটনাশক খাইয়ে বিষপান করেন সেরিনা। স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই দুই মেয়ের। গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, রাজ্য থেকে ফি বছর ভিন রাজ্যে তথা ভিন দেশে দুটো রোজগারের আশায় পাড়ি দেয় বাড়ির পুরুষরা। ধার দেনা করে বিদেশ যাওয়ার হ্যাপাও নেহাত কম নয়। আইটি, ব্যাঙ্ক বা অন্য কোনও সূত্রে যারা কাজে পাড়ি দেয়, তাঁরা দেশের থেকেও সুযোগ সুবিধা বেশি পাবার আশায় যায়। কিন্তু যারা দেশে থেকেও নুন আনতে পানতা ফুরোয়, তেমনই স্বর্ণকার, কাঠুরিয়া থেকে নানা পেশা ও ক্ষুদ্র শিল্পীরা টাকা রোজগারের আশায় ভিন দেশে পাড়ি দেয়। এদিকে বাইরে কিছু টাকা রোজগার করলেও থাকা ও খাওয়ার খরচ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে না পেলে দেশে পরিবারের কাছে টাকা পাঠাতে দম বের হয়।
এদিকে দেশে থাকা পরিবার বাজার দরের সঙ্গে জুঝতে জুঝতে আশা হারায়। কাজ না থাকলে কোথায় টাকা, আর টাকা না থাকলে খাওয়াবে কে। তাই বীরভূমের কীর্ণাহারের ঘটনাটি অনেকগুলি বড় প্রশ্ন তুলে ধরল। প্রথমত স্বামী কেন টাকা পাঠায়নি গত ৭ মাস, সে কি কাজ হারিয়েছে, কী নিয়ে তাঁদের মধ্য়ে ঝগড়া চলছিল, স্বামীর কি অন্য কোনও সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, সেরেনার গত ৭ মাসের এই পরিস্থিতির কথা আদৌ খরব রেখেছিল কি স্থানীয় প্রশাসন, কেউ কি এগিয়ে আসেনি সাহায্যের জন্য, নাকি লুকিয়ে রয়েছে অন্য কোনও কারণ, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন, 'মমতার সরকারের ৫ বছর পূরণ হবে না, ২০২৪ সালেই বিধানসভা ভোট', তোপ শুভেন্দুর, পালটা কুণাল