সংক্ষিপ্ত
- নরেন্দ্রপুরে ব্যবসায়ীর বাড়িতে পুলিশ সেজে ডাকাতি
- ঘটনায় গ্রেফতার বাইশ বছরের দীপা মজুমদার
- দীপাই ডাকাতির ঘটনার মূল চক্রী বলে অভিযোগ
বছর বাইশের এক সাধারণ যুবতী। কিন্তু সেই নাকি পুলিশ সেজে ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড! দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার নরেন্দ্রপুরে ব্যবসায়ীর বাড়িতে পুলিশ সেজে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির দীপা মজুমদার নামে এক যুবতীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, বাইশ বছরের দীপাই এই ডাকাতির ঘটনার মূল চক্রী। ডাকাতিতে দীপার প্রেমিকও যুক্ত। যদিও ঘটনার পর থেকে সেই যুবক বেপাত্তা।
গত রবিবার গভীর রাতে নরেন্দ্রপুরের নেতাজি নগরে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দেয় ছ' জনের একটি ডাকাত দল। পরিবারের সদস্যদের বয়ান অনুযায়ী, তিনজনের পরনে ছিল পুলিশের উর্দি, আর বাকি তিনজন ছিল সাধারণ পোশাকে। গৃহকর্তার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে নগদ ৭০ হাজার টাকা, সোনা ও রুপোর গয়না লুট করে দুষ্কৃতীরা। এ দিকে ঘটনাটি টের পেয়ে আশেপাশের মানুষ যখন চিৎকার করতে শুরু করেন, তখন শূন্যে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। পিছু ধাওয়া করে অবশ্য একজনকে ধরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাকে গ্রেফতার করে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
ঘটনার পর পুলিশ রেজাউল শেখ, মামন শেখ, সবুজ সেখ ও দীপু শর্মা নামে চার ডাকাতকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের মধ্যে প্রথম তিনজন বাংলাদেশের যোগেশগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। ধৃতদের বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার মূল চক্রী দীপা মজুমদার। যে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি হয়, সেই অরুপ দত্তের বাড়িতে অবাধ যাতায়াত ছিল দীপার। অরুপের মা মায়া দত্তকে সে জ্যেঠিমা সম্বোধন করত। জ্যেঠিমাও ছিলেন দীপা অন্ত প্রাণ।
পুলিশ জানিয়েছে, মাস কয়েক আগে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে অনেক গয়না দেখে দীপা মায়াদেবীর কাছে কয়েকটি গয়না চায় বিয়ে বাড়িতে সেজে যাওয়ার জন্য। সরল মনে সেই গয়না দেন মায়া। বিয়ে বাড়িতেই প্রেমিকের এর সঙ্গে সেই গয়না নিয়ে দীপার কথাবার্তা হয়। দীপা জানায়, দত্ত বাড়িতে চুরি বা ডাকাতি করতে পারলে প্রচুর গয়না পাওয়া যাবে। তখন সেই প্রেমিক কুখ্যাত বাংলাদেশি ডাকাত রেজাউলের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
রেজাউল, দীপা ও লালন মিলে বেশ কয়েকবার মদ্যপান সহযোগে বৈঠক করে ডাকাতির ছক কষে। যদিও ডাকাতির আগেই ওই বাড়ির একটি পুজোর অনুষ্ঠানে গিয়ে দীপা, লালন ও ডাকাত দলের এক সদস্য গিয়ে গোটা এলাকা রেইকি করে আসে। সেই সময়ই ঘরের জিনিসপত্র দেখে নেওয়ার পাশাপাশি ঠাকুরের গায়ের গয়নাও তাদের নজরে পড়ে।
আরও পড়ুন- পুলিশ সেজে ডাকাতি, কলকাতার কাছেই জালে তিন বাংলাদেশি ডাকাত
আরও পড়ুন- কিছু না নিয়েই পালাল ডাকাত দল, ডাকাতি রুখে দিল গৃহবধূরা
এর পর ছক মতো নির্দিষ্ট দিনে ডাকাতি হয় নেতাজী পল্লিতে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে। পুলিশের পোশাক পরে প্রায় ঘণ্টাখানেক অপারেশন সারে ডাকাতদল। যদিও সেই রাতেই জনতার হাতে একজন ডাকাত ধরা পড়ে। ধীরে ধীরে গ্রেফতার হয় দলের বাকি সদস্যরা। তাঁদের জেরা করেই খোঁজ পাওয়া যায় দীপার। শেষ পর্যন্ত সোমবার তাকে গ্রেফতার করে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।
যদিও গ্রেফতারির পরে দীপা দাবি করেছে, ডাকাতির ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানে না সে। তবে লালন তার পরিচিত বলে স্বীকার করে নিয়েছে ওই যুবতী। তার দাবি, ডাকাতির ঘটনায় তাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে।