সংক্ষিপ্ত
আজ রাস্তায় মানুষ ধরতে নয় বরং গরু ধরতে বেরিয়েছিলেন পুলিশ ও পৌরসভার কর্মীরা। শহরের রাস্তা হামেশাই আপন মনে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় গরুগুলিকে। রাস্তায় গাড়ি থাকলেও সেদিকে যেন তাদের নজরই থাকে না।
সকাল থেকে রাস্তায় টহল দিচ্ছেন পুলিশ কর্মীরা। তবে তাঁরা একা নন, তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন পৌর প্রশাসক, প্রাক্তন কাউন্সিলার ও পৌরসভার কর্মীরা। অনেকেই প্রথমে ভেবেছিলেন হয়তো যাঁরা মাস্ক না পরে বের হচ্ছেন তাঁদের ধরা হচ্ছে। কিন্তু, তা তো রোজকার ঘটনা। এতে পৌরকর্মীরা থাকেন না। গোটা এলাকা যেন কেমন থমথমে। তারপরই গরুর পিছনে দৌড়াতে দেখা গেল পুলিশ কর্মীদের। তখনই খোলসা হল বিষয়টি।
আরও পড়ুন- অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলল কাটোয়ায়, ডেকরেটর্স ব্যবসায়ীর বাড়িতে তৈরি হত বন্দুক
আসলে আজ রাস্তায় মানুষ ধরতে নয় বরং গরু ধরতে বেরিয়েছিলেন পুলিশ ও পৌরসভার কর্মীরা। শহরের রাস্তা হামেশাই আপন মনে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় গরুগুলিকে। রাস্তায় গাড়ি থাকলেও সেদিকে যেন তাদের নজরই থাকে না। নিজেদের মতো করে কখনও ধীরে ধীরে ব্যস্ত রাস্তা পার হয় আবার কখনও রাস্তার মাঝে চুপটি করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাদের। আর তাদের এই আপনভোলা স্বভাবের জেরেই যানজটের সৃষ্টি হয় রাস্তায়। সেই কারণেই রাস্তাকে যানজট মুক্ত করতে আজ গরুদের ধরার কাজে নেমেছিলেন পুলিশ ও পুরকর্মীরা।
"
সকাল থেকে পুরুলিয়া পৌরসভা এবং সদর থানার পুলিশের যৌথ উদ্যোগে পুরুলিয়া শহরের পোস্ট অফিস মোড়, ট্যাক্সি স্ট্যান্ড, হাসপাতালে মোড় এবং ভিক্টরিয়া স্কুল মোড় সহ বিভিন্ন রাস্তার মোড় এবং দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গরুগুলিকে ধরেন তাঁরা। তাদের ফলেই এতদিন রাস্তায় যখন তখন যানজটের সৃষ্টি হত। গরুগুলিকে ধরে তোলা হয় গাড়িতে। তারপর তাদের নিয়ে যাওয়া হয় গোরক্ষিণী সভার গো-শালায়। সেখানেই গরুগুলিকে রাখা হবে। গরুর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ পৌরসভা এবং গোশালা কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে বহন করবে বলে জানিয়েছেন পুরুলিয়া পৌরসভার প্রশাসক মৃগাঙ্ক মাহাত।
আরও পড়ুন- ভারী বর্ষণে প্লাবিত একাধিক গ্রাম, বুধবার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, গরুর মালিক গরুর খোঁজে উপযুক্ত প্রমাণ সহ যোগাযোগ করলে গোশালাতে গরু রাখার যে খরচ হবে সেই টাকা দেওয়ার পর গরুগুলিকে মালিকের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন- টিকা না মিললে মণ্ডপে জ্বলবে না আলো, অন্ধকারেই দুর্গাপুজো হবে আসানসোলে
পুরুলিয়া পৌরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর বৈদ্যনাথ মণ্ডল, পুরুলিয়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তথা প্রাক্তন কাউন্সিলার বিভাস রঞ্জন দাস এবং গোশালা কর্তৃপক্ষ একযোগে জানান পুরুলিয়া শহরে বিভিন্ন রাস্তায় যত্রতত্র গরু থাকার ফলে যাজটের সৃষ্টি হচ্ছে এলাকায়। তার জন্য পুরুলিয়া পৌরসভা, সদর থানা এবং গোশালা কর্তৃপক্ষ একটি মিটিং করে পুরুলিয়া শহরকে যানজট মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারপরই রাস্তার গরুগুলি ধরে গোশালায় রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার আগে শহরে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়ার পর আজ থেকে রাস্তার গরু ধরে গোশালায় রাখার অভিযান শুরু হল। এই প্রক্রিয়া জারি থাকবে।
তবে পুরুলিয়া শহরে সকাল থেকে গরু ধরতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা হয়েছিল পুলিশ এবং পৌরসভার কর্মীদের। গরু ধরবেন, না বাঁধবেন তা তাঁরা বুঝতেই পারছিলেন না। গরুকে গাড়িতে তোলার সময় অনেকটা কষ্ট করতে হয়েছিল তাঁদের। তারপর আজ অনেক কষ্ট করে ৯টি গরুকে কোনওরকমে রাস্তা থেকে তুলে গোশালায় নিয়ে যেতে পেরেছেন তাঁরা।