সংক্ষিপ্ত
উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে দ্বাদশস্থান লাভ করেছিল সে। এরপরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। সেখান থেকেই ফেসবুক লন্ডন এবং গুগুল লন্ডনে প্রায় দুই কোটি টাকার কাজের সুযোগ আসে।
আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট: বাংলা মাধ্যমে পড়েও যে কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডে দাপিয়ে বেড়ানো যায়, তার যোগ্য জবাব দিলেন রামপুরহাটের বিশাখ মণ্ডল। বাংলা মাধ্যমে পড়া সাধারন এই গ্রাম বাংলার ছেলেটির ঝুলিতে ছিল বিশ্বের সেরা কর্পোরেট সেক্টর ফেসবুক ও গুগলের মত চাকরির অফার লেটার। যারা মনে করেন ইংরেজি মাধ্যম ছাড়া কেরিয়ারের কোনও ভবিষ্যত নেই তাঁদের যোগ্য জবাব দিল বাংলা মাধ্যমের এই ছাত্র। ফেসবুক নয়, বিশাখ মণ্ডল যোগদান করতে চলেছেন গুগুলেই। চলতি বছরের অগাস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে তাঁর কাজে যোগদান করার কথা। শনিবার সন্ধ্যায় ‘বীরভূম জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ এবং প্রাতঃভ্রমণকারীদের সংগঠন ‘সাতসকাল’ আয়োজিত সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে একথা নিজেই জানান বিশাখ।
সংবাদমাধ্যমের দৌলতে বিশাখ মণ্ডল এখন দেশবাসীর কাছে পরিচিত নাম। বাড়ি মুর্শিদাবাদের সাগরদীঘি থানার সুখী গ্রামে হলেও ছোটতেই মায়ের হাত ধরে চলে আসেন মল্লারপুরের ফতেপুর গ্রামে মামার বাড়িতে। সেখান থেকে পড়াশোনার জন্য রামপুরহাট থানা পাড়ায় একটি আবাসনে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নেন মা ও ছেলে। বাবা মুর্শিদাবাদের গ্রামেই চাষাবাদ করেন। রামপুরহাট প্রণব শিক্ষা নিকেতনে প্রাথমিক পড়াশোনা সেরে ভর্তি হন রামপুরহাট জিতেন্দ্রলাল বিদ্যাভবনে। সেখানেই মেধা ছাত্র হিসাবে উঠে আসতে শুরু করে বিশাখ মণ্ডল। উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে দ্বাদশস্থান লাভ করেছিল সে। এরপরেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। সেখান থেকেই ফেসবুক লন্ডন এবং গুগুল লন্ডনে প্রায় দুই কোটি টাকার কাজের সুযোগ আসে। প্রথম দিকে ফেসবুকে যোগদানের কথা থাকলেও পরে সিদ্ধান্ত বদলে গুগুলে যোগদানের কথা নিজেই জানায় বিশাখ। বিদেশে পারি দেওয়ার আগে রামপুরহাটের বাড়িতে ফেরেন তিনি। শনিবার সন্ধ্যায় রামপুরহাট পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের শিবতলা পাড়ার মোড়ল বাড়িতে সম্বর্ধনার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশাখের বাবা বিরেন মণ্ডল, মা শিবানী মণ্ডল, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক নিখিল কুমার সিনহা, জিতেন্দ্র লাল বিদ্যাভবনের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক গৌর ঘোষ।
অনুষ্ঠান শেষে সংবাদ মাধ্যমের কাছে বিশাখ জানায়, ভিসা পাসপোর্ট সমস্ত ডকুমেন্টেশন হয়ে গেলে অগাস্ট-সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে তিনি কাজে যোগ দেবেন। সফটওয়্যার ডেভলপার হিসেবে গুগুলে যোগদান করবেন তিনি। লন্ডনের কিংডম তাঁর অফিসে। বিশাখ বলেন, “গুগল, ফেসবুক দুই থেকেই ওফার এসেছে। প্রথম দিকে আমি ঠিক করে ছিলাম ফেসবুকে যোগদান করব। কিন্তু দিনের শেষে গুগলে যোগদান করতে মনস্থির করেছি। গুগলে যোগ দেওয়ার কারণ ওখানে ভালো ইঞ্জিনিয়ারিং কালচার আছে। মনের ইচ্ছেও ছিল, কমপেনশেসন প্যাকেজও ভালো”। তবে কতো টাকার প্যাকেজ তিনি বলতে চাননি। তাঁর কথা, “ ভালো অঙ্কের অফার অবশ্যই দিয়েছে। তবে সেটা কনফিডেন্সিয়াল”। তাঁর লক্ষ্য, আপাতত দুই বছর কাজে অভিজ্ঞতা অর্জন করা।
১০ জুলাই থেকে এই কাজগুলি করুন, চার মাসেই চাকরি থেকে ভাগ্য - আসতে পারে ভাল সময়
মে মাসের শেষেই যাত্রা শুরু করতে পারে শিয়ালদহ-মেট্রো, রেলের অন্দরে জল্পনা তুঙ্গে
যাত্রীদের অপেক্ষায় ঝাঁ চকচকে শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন, দেখুন ছবিতে আধুনিক এই স্টেশনটি
অনুষ্ঠান মঞ্চে ছোটদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, লক্ষ্যে স্থির থেকে এগিয়ে যেতে হবে। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখলে কৃতকার্য হবেই। শনিবার সন্ধ্যায় বীরভূম জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ও সাতসকালের উদ্যোগে বিশাখ মণ্ডলের পাশাপাশি তাঁর মা শিবানী মণ্ডল ও বাবা বিরেন মণ্ডলকেও সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। মেমেন্টো, মানপত্র সহ কিছু উপহার তুলে দেওয়া হয় তাদের হাতে। বীরভূম জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সহ সম্পাদক সাধন সিনহা নারী শক্তির কথা বলেন। তিনি বলেন, “এরকম মা যেন ঘরে ঘরে জন্মায়”। প্রাত:ভ্রমন সাতসকালের পক্ষে সৈয়দ সিরাজ জিম্মি বলেন, “সকলের জীবনে মায়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। আমরা যেন কেউ শিকড় না ভুলে যায়”। অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তাদের কথায় বার বার উঠে আসে বাংলা মাধ্যমে পড়েও বড়ো জায়গায় যাওয়া যায়। তার প্রমাণ বিশাখ।