সংক্ষিপ্ত
- পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ে রাইপুর গ্রাম
- ভূতের ভয়ে কাঁটা এলাকার বাসিন্দারা
- দিনের বেলাতেও ভয়ে ঘর ছেড়ে বেরোচ্ছেন না অনেকে
একে শুক্রবার, তার উপরে তেরো তারিখ। পশ্চিমী দুনিয়ায় এমন দিনটিকে ভূতেদের উপদ্রব বাড়ার জন্য দায়ী করা হয় বটে। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের রাইপুর এলাকার বাসিন্দারা অবশ্য গত কয়েকদিন ধরেই ভূতের ভয়ে কাঁটা হয়ে রয়েছেন। রাতে তো বটেই, দিনের বেলাও ঘর ছেড়ে বেরোতে চাইছেন না গ্রামের কেউ।
কিন্তু কী থেকে এমন ভূতের ভয় গ্রাস করল গোটা রাইপুরকে? স্থানীয় সূত্রে খবর, ভূতের কথা পরিবারকে জানানোর পরেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল গ্রামের এক বাসিন্দার ৷ তার পর থেকেই মৃতের পরিবারের লোকেরা বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। আর এই ঘটনার জেরেই ভূতের গুজবে আতঙ্কিত গোটা গ্রাম। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ভয়ে ঘর ছাড়ছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন- ফ্রাইডে দ্য থার্টিন্থ, ভূত-প্রেতের দিনেই চিনে নিন ভারতের ভূতের গোয়েন্দা গৌরব তিওয়ারিকে
সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগে রাইপুর গ্রামের বাসিন্দা সমর বারিক নামে এক ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে ভূত এসেছে বলে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জানান। এই ভূত বাড়ির সবাইকে মেরে ফেলবে বলেও নাকি তিনি সেদিন জানিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে তার কয়েকদিন পরেই গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান সমরবাবু। এই ঘটনার পরেই মৃতের পরিবার তো বটেই, প্রতিবেশীদের মধ্যেও ভূতের আতঙ্ক ছড়ায়। ধীরে ধীরে যা গোটা এলাকাতেই ছড়িয়ে পড়ে।
পরিবারের এক সদস্য পার্বতী বারিক জানান, 'আমাদের গ্রামে সত্যিকারের ভূত দেখা দিয়েছে। কারও জ্বর, কারও সর্দি- কাশি ,রোগ-অসুখ লেগেই আছে। সন্ধ্যে হলে কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। এমনকী, গ্রামের কোনও ডাক্তারকে ডাকলেও তিনিও আসতে চান না। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। অনেকে এই ভয়ে গ্রাম ছেড়ে আত্মীয় বাড়ি বা অন্যান্য জায়গায় চলে যাচ্ছেন।'
এই পরিস্থিতিতে বারিক পরিবারও নিজেদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে৷ সন্ধ্যা হলেই শুনসান হয়ে যাচ্ছে গোটা রাইপুর এলাকা। মনের মধ্যে ভূতের ভয় এতটাই প্রভাব ফেলেছে যে দিনের বেলা স্কুলেও যেতে চাইছে না পড়ুয়ারা। গোটা গ্রাম জুড়ে আতঙ্ক। ভূত যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে সবাইকে। এই গ্রামের বাসিন্দাদের বন্ধু,আত্মীয়স্বজনরাও সব শুনে গ্রামে আসতে চাইছেন না । এই পরিস্থিতিতে গুনিনের আশ্রয় নিয়েছেন বারিক পরিবারের সদস্যরা ৷
গ্রামবাসীদের অনেকেরই দাবি,গ্রামে নাকি তাঁরা বিভিন্ন রকমের অলৌকিক কাণ্ড কারখানা ঘটতে দেখেছেন৷ নিজের চোখে দেখেছেন বেশ কিছু ভৌতিক কাণ্ড ৷ যার ফলে কমবেশি সবাই আতঙ্কিত৷ বিষয়টি নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকেও খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে ৷ জেলা বিজ্ঞানমঞ্চের সদস্যদের দাবি, শুধু ভয় থেকে মানুষের মনে এই সমস্ত ধারণার সৃষ্টি হয়েছে৷ শিগগিরই রাইপুরে গিয়ে গ্রামবাসীদের বোঝানো হবে বলেও বিজ্ঞান মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।