সংক্ষিপ্ত
করোনায় কাজ হারিয়ে এখন বাড়িতে বসে দিন কাটাচ্ছেন রিঙ্কু। মন খারাপ হলেই মাঝে মধ্যে ট্রাঙ্ক খুলে দেখেন আর এক রাশ হতাশা নিয়ে বসে থাকেন বাড়ির সামনে। ট্রাঙ্ক খুলতেই বেরিয়ে আসে একগুচ্ছ জং-ধরা মেডেল আর স্যাঁতসেঁতে একগাদা শংসাপত্র।
ছোট থেকেই খেলাধূলায় পারদর্শী। স্কুল থেকে কলেজ, তারপর জাতীয় স্তরেও (National Level) সাফল্য পেয়েছেন তিনি। জিতে নিয়েছেন একাধিক মেডেল (Medal)। কিন্তু, এখন সেসবই পুরোপুরি অতীত। প্রশাসনিক অবহেলা ও সংসারের আর্থিক অভাবের জেরে আজ রাজ্যের বাইরে দিনমজুরের (Labour) কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন কুমারগঞ্জের বাসিন্দা (Kumarganj) জাতীয় স্তরের অ্যাথলেট রিঙ্কু বর্মন (Rinku Barman)।
মন খারাপ হলেই মাঝে মধ্যে ট্রাঙ্ক (Trunk) খুলে দেখেন রিঙ্কু আর এক রাশ হতাশা নিয়ে বসে থাকেন বাড়ির সামনে। ট্রাঙ্ক খুলতেই বেরিয়ে আসে একগুচ্ছ জং-ধরা মেডেল আর স্যাঁতসেঁতে একগাদা শংসাপত্র। সবই জাতীয় স্তরের। মেডেলগুলির মধ্যে চারটি সোনার (4 Gold Medal)। সেগুলো জড়ো করে ধরে আক্ষেপের সুরে রিঙ্কু বর্মন বলেন, "সোনার মূল্য কে দেবে!"
আরও পড়ুন- বিকিনি, সমুদ্র, সাঁতার - মাথা নষ্ট করা ছবি দেন পাঞ্জাব কিংস ব্যাটারের হট বউ, দেখুন
হরিয়ানায় ২০০৯ সালে ন্যাশনাল ইন্টার জোনাল জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের অনূর্ধ্ব ১৬ বিভাগে ১ হাজার মিটার রিলে রেস শেষ করে নতুন রেকর্ড গড়েছিলেন রাজবংশী সম্প্রদায়ের অ্যাথলিট রিঙ্কু। তার আগে ও পরেও অনেক জাতীয় সাফল্য পেয়েছেন। কিন্তু, সেই সোনার ছেলেই এখন আর্থিক অনটনে পরিযায়ী শ্রমিক হয়েছেন। পাশে দাঁড়ায়নি কেউই। খোঁজও নেয়নি। পেটের দায়ে সাড়ে তিনশো টাকা দৈনিক রোজগারে সুদূর গুজরাটের (Gujrat) সুরাতে এম্ব্রয়ডারির কাজ করেন তিনি। পরিবারের কথা মাথায় রেখে খেলা ছেড়েছেন বহু বছর আগেই।
আরও পড়ুন- ইয়ন মর্গ্যান বনাম কেএল রাহুল দ্বৈরথ, কোন দল এগিয়ে এই লড়াইয়ে, জানুন ইতিহাস কী বলছে
দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর ব্লকের অশোকগ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব বিষ্ণুপুরের বছর ২৬-এর ওই যুবক ছোট থেকেই খেলাধুলোয় পারদর্শী ছিলেন। শিলিগুড়িতে স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (সাই) শিবিরে সুযোগও পান। সেখানে থেকেই রেলওয়ে স্কুলে পড়াশোনা আর খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু, ছন্দ কাটে কয়েক বছর আগে বাবা গণেশ বর্মণের মৃত্যুর পর। বাবার মৃত্যুতে পরিবারে আর্থিক অনটন দেখা দিয়েছিল। এরপর খেলা ফেলে রেখে তাঁকে বাড়ি ফিরতে হয়। বুকে পাথর চেপে রেখে বাড়ি ফিরে সংসারের হাল ধরেন তিনি।
আরও পড়ুন- কেকেআর ভাগ্য আজ কেমন, কারা জিতবে, কী বলছে জ্যোতিষশাস্ত্র
রিঙ্কু বলেন, "আজ অলিম্পিকে আরও পদক আসতে পারত। আমাদের মতো ছেলে মেয়েদের যদি সঠিক প্রশিক্ষণ সহ আর্থিক দিক দেখত সরকার। কয়েকটি জায়গায় আবেদন করেছিলাম। চাকরি পাইনি। একটা ছোট চাকরি পেলে অ্যাথলেটিক্সের চর্চা চালিয়ে যেতে পারতাম।" তাঁর মা আরতী দেবী বলেন, "রিঙ্কু খেলাধুলোর পাশাপাশি লেখাপড়াতেও ভালো ছিল। ওর বাবার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়েছিল। আমাদের কেউ কোনও সাহায্য করেনি। সরকার থেকে সাহায্য পেলে ভালো হয়।"