সংক্ষিপ্ত

বাংলার বহু পড়ুয়াই ইউ্ক্রেনে যায় ডাক্তারি পড়তে। তারাও ধীরে ধীরে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে সরকারের প্রচেষ্টায়।

এখনও স্বাভাবিক হয়নি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ পরিস্থিতি। এদিকে এদিকে মধ্যেই যুদ্ধ সঙ্কটের মধ্যে পড়ে প্রাণ গিয়েছে একাধিক ভারতীয় পড়ুয়ার। তারপর থেকেই এদেশেও একটানা বেড়েছে উদ্বেগ। ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরাতে জোরদার প্রস্তুতিও অনেক আগেই শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। চালু হয়েছে মিশন গঙ্গা। ইতিমধ্যেই যুদ্ধ যন্ত্রণা কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন বহু পড়ুয়া। যদিও এখনও যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে আরও অনেকেই। তবে দেশের অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি একটানা উদ্বেগ বেড়েছে বাংলাতেও। বাংলার বহু পড়ুয়াই ইউ্ক্রেনে যায় ডাক্তারি পড়তে। তারাও ধীরে ধীরে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে সরকারের প্রচেষ্টায়।

আশা-আশঙ্কার দোলাচলের মধ্যেই অবশেষে ইউক্রেন থেকে ঘরে ফিরল মালদহের সোহান মহালদার। শনিবার রাতে শতাব্দী এক্সপ্রেস মালদহ টাউন স্টেশনের চার(৪) নম্বর প্ল্যাটফর্মে নামতেই তাঁকে ফুল, মালা দিয়ে স্বাগত জানালেন পরিবার থেকে পাড়া পড়শিরাও। দীর্ঘদিন পরে ছেলেকে কাছে পেয়ে কান্নায় চোখ ভেজান বাবা মিসমাসদ মহালদার। ইউক্রেন থেকে হাজার হাজার কিলোমিটার দূরে মালদহে ফিরেও আতঙ্কের স্মৃতি এখনও টাটকা সোহানের। ইংরেজবাজারের কাজিগ্রাম পঞ্চায়েতের চণ্ডীপুরের বাসিন্দা সোহান। তিনি ইউক্রেনের জ়াপরিজ়হিয়া(zaporizhzhia) স্টেট মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সেখানেই আটকে পড়েন তিনি।

এদিকে সোহানের বাবা মিসমাসদ গ্রামেই একটি নার্সারি স্কুল চালান। ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন অধরা রেখেই এদিন বাড়ি ফিরে সোহান। তবে গত দশদিনের স্মৃতি কখনও ভুলবেন না বলে জানান তিনি। কারণ, সাইরেন বাজলেই বন্ধুদের সঙ্গে কাটাতে হত হোস্টেলের ঠান্ডা কনকনের মধ্যে বাঙ্কারে। আর বাঙ্কারের বাইরে বন্দুকধারীদের ভিড়। আতঙ্কে তিনদিন বাঙ্কারেই কাটান সোহান। তারপরে কিভ ছেড়ে ট্রেনে করে হাঙ্গেরির দিকে রওনা দেন তাঁরা।

আরও পড়ুন- রাশিয়ান মহাকাশযান থেকে মুছে গেল আমেরিকা-জাপান-ব্রিটেনের পতাকা, রইল ভারতের তেরঙা পতাকা

আরও পড়ুন- “উনি নামেই যোগী, কিন্তু কর্মে ভোগী”, অখিলেশের প্রচারে ফের ঝড় তুলে বিজেপি তীব্র আক্রমণ মমতার

আরও পড়ুন- নির্দলের বিজয় মিছিলে তৃণমূলের হামলা, পাল্টা নির্দলীদের বিরুদ্ধে পার্টি অফিসে হামলার অভিযোগ তৃণমূলের

টানা ১০ ঘণ্টার পথ ট্রেনে দাঁড়িয়েই কাটাতে হয় তাঁদের। ভিড়ে কার্যত দাঁড়ানোও চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছিল সোহনের কাছে। তারপরেও বাড়ি ফেরার স্বপ্ন নিয়ে পৌঁছন হাঙ্গেরির সীমান্তে। সেখান থেকে আবার টানা পাঁচ কিলোমিটার পথ পায়েও হাঁটতে হয়। ডাক্তারির পড়ুয়া হয়েও পথের ধারে প্লাস্টিকে মোড়া সারি সারি মৃতদেহ দেখে শিউরে উঠেছিলেন সোহন। তবে ঘরে ফিরতে পেড়ে খুশি তিনি। খুশি তাঁর পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরাও। খুশির হাওয়া বইছে সোহানের পাড়াতেও।