সংক্ষিপ্ত
- ছেলের বিয়েতে সমাজকে বাঁচানোর বার্তা
- বেনজির দৃষ্টান্ত গড়লেন সুন্দরবনের শিক্ষক
- প্রায় আড়াইশো জন অনাথ শিশুদের নিমন্ত্রণ
- পাত পেড়ে খাইয়ে গাছ উপহার শিক্ষকের
ছেলের বিয়েতে সমাজকে বাঁচানোর বার্তা দিয়ে নজির গড়লেন সুন্দরবনের শিক্ষক অমল নায়েক। প্রায় আড়াইশো জন অনাথ শিশুদের নিমন্ত্রণ করে তাদের হাতে উপহার তুলে দিলেন এই শিক্ষক। বিয়েতে এসে শিশুরা পেল পড়াশোনার জিনিস ছাড়াও গাছের চারা। উপহার দিয়ে সমাজকে বাঁচানোর বার্তা দিলেন বছর পঞ্চান্নর এই শিক্ষক। শ্বশুরমশাইয়ের এই উদ্যোগে খুশি নববধূও।
একজন ছাত্র, একজনই শিক্ষক, বাংলাতেই রয়েছে এমন সরকারি স্কুল
সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের শিবগঞ্জ গ্রামে জন্ম অমল নায়েকের। সুন্দরবনের মানুষের দুঃখ, দুর্দশা দেখতে দেখতেই বড় হয়েছেন। বাসন্তী হাইস্কুলে ও দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষকতা করছেন। আর এই শিক্ষকতার পাশাপাশি বিগত প্রায় দুই দশক ধরে বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কাজকর্ম করে চলেছেন এই শিক্ষক। সর্বদা দুঃস্থ, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো তার দৈনন্দিন কাজকর্মের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। বেশ কয়েক বছর ধরে সুন্দরবনের বাঘে আক্রান্ত পরিবার গুলিকে সাহায্য করতে উদ্যোগী হয়েছেন এই শিক্ষক। সেভ টাইগার এফেক্টেড ফ্যামিলি নামে একটি সামাজিক সংগঠন তৈরি করে সুন্দরবনের কয়েকশো পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন অমল।
বিচারককে লক্ষ্য করে জুতো 'জঙ্গি মুসার' , ব্যাংকশাল আদালতে উত্তেজনা
গত ৩১শে জানুয়ারি শুক্রবার ছিল অমলের বড় ছেলে অর্ঘ্য’র বিয়ে। ২ফেব্রুয়ারি রবিবার বাসন্তীর শিবগঞ্জের বাড়িতেই ছিল বধূবরণ তথা বৌভাতের অনুষ্ঠান। বাঁধা গত ছেড়ে এই বধূবরণের অনুষ্ঠান থেকেই সামাজিক বার্তা দিতে উদ্যোগী হন এই শিক্ষক। একদিকে যেমন বাসন্তী এলাকার একাধিক অনাথ আশ্রমের প্রায় আড়াইশো শিশুকে অন্যান্য নিমন্ত্রিতদের মতোই পাত পেড়ে খাওয়ালেন তিনি, তেমনি নববধূর হাত দিয়ে এই ছোট ছোট শিশু, কিশোরদের হাতে গাছের চারা ও শিক্ষা সামগ্রী তুলে দিয়ে সামাজিক বার্তা দিলেন এই শিক্ষক।
বিয়ের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করে এই সমস্ত অনাথ আশ্রমের আবাসিক শিশু, কিশোরদের কেউ খাওয়ায় না। কিন্তু ওরাও যে এই সমাজের অঙ্গ, ওদেরও যে সমাজের সর্বস্তরের আনন্দ উপভোগ করার অধিকার রয়েছে, কার্যত এই বার্তা দিতেই এই আড়াইশো জনের মতো আবাসিক শিশু কিশোরদের এদিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এই শিক্ষক। নিজে হাতে এদেরকে খাবার পরিবেশনও করেন তিনি।
মাঝ আকাশে সন্তান প্রসব বিদেশিনির, কলকাতায় বিমানের জরুরি অবতরণ
খাওয়া দাওয়া পর্ব মিটলে নববধূর হাত থেকে এদেরকে শিক্ষা সামগ্রী ও চারাগাছ উপহারও তুলে দেওয়া হয়। সম্প্রতি সুন্দরবনের বহু ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য দিনের পর দিন গাছ কেটে চলেছে। তাই সুন্দরবনকে বাঁচানোর জন্য প্রচুর পরিমাণ গাছ লাগানো প্রয়োজন। আর এই কাজে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেই উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সেই তাগিদ অনুভব করেই ছেলের বিয়ের এই বৌভাত অনুষ্ঠানে অনাথ আশ্রমের শিশুদের নিমন্ত্রণ করে তাদেরকে আদর যত্ন করে খাইয়ে হাতে গাছের চারা তুলে দিলেন এই শিক্ষক। শ্বশুর মহাশয়ের এই সামাজিক উদ্যোগে খুশি নববধূ সুমনা।