সংক্ষিপ্ত
- আক্রান্ত সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি
- তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত বলে অভিযোগ
- আরও সাতজন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন
- এমনই দাবি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী
তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি। তাঁর সঙ্গে আরও সাতজন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই মুহূর্তে তাঁরা সবাই বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
টুইটারে বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছেন শুভেন্দু। সেখানে বিজেপি কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার ছবি তুলে ধরা হয়েছে। টুইটারে তিনি লেখেন, "সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি মানিকবাজার পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত। বিজেপির সাতজন কর্মী এই হামলায় গুরুতরভাবে আহত হয়ে বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজে এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরিবেশ এতটাই ভয়াবহ যে পরাজিত মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলরাজে একজন বিধায়কও সুরক্ষিত নন।"
বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়েছিল ২ মে। তারপর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ উঠে এসেছে। ভয়ে ঘর ছেড়েছিলেন অনেকেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কয়েকটি জায়গায় আবার তৃণমূল কর্মীরাও আক্রান্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ঘটনাগুলিকে বিক্ষিপ্ত ঘটনা বলে দাবি করেছিলেন। যদিও এনিয়ে একাধিকবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্যের বাকযুদ্ধ চলেছিল।
এরই মধ্যে জুন মাসে এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জলস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। সেখানে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলা হয়। তারপরই ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে। ১৮ জুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অরুণ মিশ্রকে একটি কমিটি গঠন করে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ২১ জুন রাজীব জৈনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেন অরুণ মিশ্র। পাশাপাশি ওই কমিটিকে সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশনকে। এছাড়া রাজ্যকেও সহযোগিতার নির্দেশ দেওয়া হয়। এর অন্যথা হলে রাজ্যকে আদালত অবমাননার দায় নিতে হবে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল আদালত। এরপরই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ২৪ জনের প্রতিনিধি কয়েকদিনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা পরিদর্শন করে আক্রান্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট তৈরি করেন। ৩০ জুন হাইকোর্টে ভোট পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দেয় ওই কমিটি।
সেই রিপোর্টে থাকা সব অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশকে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এছাড়া ভোট পরবর্তী হিংসায় জখমদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারকে। পাশাপাশি যাঁদের রেশন কার্ড কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁদের রেশনের ব্যবস্থাও করতে হবে রাজ্যকে। ১৩ জুলাই পর্যন্ত মানবাধিকার কমিশনের তদন্তের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ওই দিনই।